ইলেকশন কর্নার

নারায়ণগঞ্জ-১

জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হবেন আজম খান

জয়নাল আবেদীন জয়, রূপগঞ্জ থেকে

১২ ডিসেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জে দলীয় প্রতীক পাওয়ার পর জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। বিগত ২০০৮ সালের নবম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে দলীয়ভাবে নির্বাচিত প্রার্থীরাই এবারের নির্বাচনে চূড়ান্তভাবে দলের প্রতীকে লড়াই করছেন। এবারের নির্বাচনে মোট ৭ জন প্রার্থী লড়াইয়ে থাকলেও মূল লড়াই হবে নৌকা এবং ধানের শীষ প্রতীকের মাঝে। তবে উভয় দলে এখনো বঞ্চিত নেতাদের কর্মী সমর্থকরা এখন অবধি দলীয় ঐক্যবদ্ধ না থাকায় প্রধান দুই দলের প্রার্থীর জন্য ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন জাপার প্রার্থী আজম খান। স্থানীয়দের ধারণা দলীয় আন্তঃকোন্দল নিরসন না হলে রূপগঞ্জ আসনে মূল ভোটে কাটার হতে পারেন লাঙ্গল প্রতীক। সেক্ষেত্রে জয়-পরাজয়ে অনিশ্চতা বেড়ে গেছে প্রধান দুই দলে। জানা যায়, শিল্পাঞ্চল খ্যাত রূপগঞ্জ উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছেন ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৯২ জন। এর মাঝে ৪০ হাজার রয়েছে ভাসমান ভোটার। আসনটিতে প্রধান দুই দলেরই রয়েছে সমান দাপট। বিগত নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ৩ বার আওয়ামী লীগ ও ৪ বার বিএনপি এই আসনটি দখলে রাখে। বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে লড়াই করা বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শিল্পপতি গোলাম দস্তগীর গাজী এবারো দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। দু-প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে নানা অন্তমিল। দু’জনই মুক্তিযোদ্ধা এবং ব্যবসায়ী। একই গ্রামে উভয়ের বাসস্থান। জমজমাট লড়াইয়ের ইঙ্গিত থাকলেও দুই প্রার্থীর জন্য মাথাব্যথা হতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান। তার অন্যতম কারণ এবারের মনোনয়ন দৌড়ে কালো ঘাম ছুটেছে উভয় প্রার্থীর। কাজী মনিরুজ্জামানের বিপক্ষে মনোনয়ন দৌড়ে ছিলেন বিএনপির ত্যাগী ও প্রবীণ নেতা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য, রূপগঞ্জের সর্বস্তরের জনপ্রিয় তরুণ নেতা এবং গাউছিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু। মনোনয়ন ফায়সালার পর মাঠের রাজনীতিতে প্রভাবশালী এই দুই নেতা রয়েছেন অনেকটা অন্তরালে। সঙ্গত কারণে তাদের কর্মী সমর্থকরাও চুপসে গেছেন ভোটের মাঠে। একারণে স্থানীয়দের আশঙ্কা বঞ্চিত নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে না নামলে তাদের বিশাল ভোটব্যাংকের বড় একটি অংশ চলে যাবে লাঙ্গলের ব্যালটে। অন্যদিকে থানা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বর্তমান এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর সম্পর্ক সাপে-নেউলে। থানা আওয়ামী লীগের কিং মেকার খ্যাত দলের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাজাহান ভূঁইয়ার সঙ্গে গাজীর বিরোধের কথা দলের উচ্চমহলও ওয়াকিবহাল। গত দশ বছর যাবৎ স্থানীয় আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে সকল ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে। এই আন্তঃকোন্দলের জেরে গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের দুই হাজার সাতশ’ নেতাকর্মী মামলার শিকার হয়। এ প্রেক্ষিতে দাবি উঠে রূপগঞ্জের সন্তানকে দলের মনোনয়ন দেয়ার। এরই ধারাবাহিকতায় রেকর্ডসংখ্যক ৩২ জন প্রার্থী দলের মনোনয়ন ক্রয় করেন। কিন্তু দলের উচ্চমহল গাজীকেই সেরা বিবেচনা করে তার হাতে নৌকা সমর্পণ করেন। এ অবস্থায় চুপসে যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের হয়ে মাঠ দাবড়ানো বড় একটি অংশ। এখন অবধি তাদের ঐক্যবদ্ধ করতে বিফল হয়েছেন গাজী। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে আওয়ামী লীগের বড় একটি ভোটের অংশ লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিতে পারেন বলে ধারণা স্থানীয়দের।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status