এক্সক্লুসিভ

সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দক্ষ ও চৌকস নৌবাহিনীর বিকল্প নেই: প্রেসিডেন্ট

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে

১০ ডিসেম্বর ২০১৮, সোমবার, ৯:৪০ পূর্বাহ্ন

আমাদের বিশাল সমুদ্র এলাকা আছে। এই বিস্তীর্ণ সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং সমুদ্র সমপদ রক্ষার্থে একটি দক্ষ ও চৌকস নৌবাহিনীর বিকল্প নেই। রোববার বেলা ১২টায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন   প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টায় দুইটি পেট্রোল ক্রাফট নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু নৌবাহিনীর প্রধান ঘাঁটিগুলোকে একযোগে কমিশন প্রদান করেন। পাশাপাশি তাঁর দূরদর্শিতায় প্রণীত হয় দ্য টেরিটরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট। জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে গৃহীত হয়েছে ফোর্সেস গোল ২০৩০।
তিনি বলেন, এ মহাপরিকল্পনার আলোকে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অত্যাধুনিক ফ্রিগেট ও করভেটসহ ২৭টি যুদ্ধজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। ২০১১ সালে সংযোজিত নেভাল এভিয়েশন, সেপশাল ওয়্যার ড্রাইভিং এবং স্যালভেজ কমান্ড এ বাহিনীর সক্ষমতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
২০১৭ সালে নৌবহরে যুক্ত হওয়া দুইটি সাবমেরিন আমাদের নৌবাহিনীকে পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে দেশের সমুদ্র জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার  পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমরা কারোর সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু আত্মরক্ষার্থে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার ক্ষেত্রে আমরা আপসহীন। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে কখনো পিছপা হবেন না।
প্রেসিডেন্ট বলেন, নৌবাহিনীর ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীন থেকে ২টি মিসাইল ফ্রিগেট এবং নির্মাণাধীন ২টি করভেট শিগগিরই নৌবহরে যুক্ত হবে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক করভেট, মাইনহান্টার, ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ভেসেল ও সেইলিং ট্রেনিং
শিপসহ বিভিন্ন জাহাজ ক্রয় ও নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। নেভাল অ্যাভিয়েশনের জন্য মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট, অ্যান্টি সাবমেরিন হেলিকপ্টার ও লং রেঞ্জ মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ক্রয়ের পরিকল্পনা আছে।
তিনি বলেন, একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ার লক্ষ্যে মিসাইল, আইএফএফ সিস্টেমসহ বিভিন্ন প্রকার আধুনিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সংযোজনের কাজও চলমান। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্ববৃহৎ ঘাঁটি বানৌজা শেরেবাংলা এবং বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটির কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সমপ্রতি ঢাকায় জাতির পিতার নামে প্রথমবারের মতো একটি নৌঘাঁটি বানৌজা শেখ মুজিব এর কমিশনিং এবং একইসঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ২২টি বহুতল ভবন ও অবসরপ্রাপ্ত নৌ-সদস্যদের আবাসনের জন্য টাউনশিপ সাভার প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে।
মিডশিপম্যান-২০১৬ এবং ডিইও ২০১৮/বি ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে এই শীতকালীন কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
নৌবাহিনীর ২০১৬ ব্যাচের ৫৯ জন মিডশিপম্যান ও ২০১৮/বি ব্যাচের ৭ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৬৬ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৪ জন নারী, ১ জন মালদ্বীপ এবং ১ জন শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তা রয়েছেন।
সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশিপম্যান আহমেদ রিদওয়ান খান সোর্ড অব অনার পান। মিডশিপম্যান ইজাজ মাহমুদ শুভ নৌ-প্রধান স্বর্ণপদক এবং সাব লেফটেন্যান্ট সাঈফ হোসেন সুধী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক পেয়েছেন।
কুচকাওয়াজে অন্যান্যের মধ্যে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান, নৌ সদর দপ্তরের পিএসও, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর আঞ্চলিক অধিনায়কসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক এবং শিক্ষা সমাপনী ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status