দেশ বিদেশ

জাল ভিসা দেখিয়ে টাকা নিতো প্রতারকরা

স্টাফ রিপোর্টার

৮ ডিসেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:০৯ পূর্বাহ্ন

 প্রতারণার অংশ হিসাবে তারা প্রথমে পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিত। বিজ্ঞাপনে নানা রকম লোভনীয় কথা লেখা থাকত। এছাড়া নিজস্ব দালাল চক্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হতো বিদেশগামী যাত্রীদের। পরে জালিয়াতির মাধ্যমে ট্যুরিস্ট ভিসা, জাল ভিসা, জাল টিকিট দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হতো। মূলত এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আদায় করাই ছিল তাদের কাজ। আর এই কাজের নেতৃত্ব দিতেন আসাদুজ্জামান আসাদ (৩৯)। র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে এই প্রতারক। এছাড়া একই গ্রুপে কাজ করা করা আরো ৪ প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাব। তারা হলেন, মো. ওসমান গাজী (৪৮), সিরাজুল ইসলাম (৫২), মো. টিপু সুলতান (৫৫), লিটন মাহমুদ (৩৫)। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৩২টি পাসপোর্ট, ৭টি জাল ভিসা, ১টি বিমানের জাল টিকিট, ৩৪ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, ১৫টি স্বাক্ষরিত ব্যাংকস্ট্যাম্প, একটি ল্যাপটপ, ২টি কম্পিউটার, ১টি কালার প্রিন্টার, ৫টি মোবাইল ফোনসহ চাকরিপ্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত উদ্ধার করা হয়।
রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে র‌্যাব-১ এর উপঅধিনায়ক মেজর মো. রাকিব উজ্জামান বলেন, প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর উত্তরখান, উত্তরা ও মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। এই চক্রটি জাল ভিসা দিয়ে ভুক্তভোগীদের ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে একেকজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। জাল ভিসা তৈরির জন্য চক্রের সহযোগী মো. ওসমান গাজী, টিপু ও লিটন সহযোগিতা করতো। আর সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের আসাদুজ্জামানের অফিসে আনার জন্য ওসমান, টিপু ও সিরাজ দালাল হিসেবে কাজ করতো। তিনি বলেন, চাকরি দেওয়া ও বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে আগেই ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ২-৫ লাখ টাকা নিত তারা। এছাড়া সরকারি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে ব্যাংক চেক ও স্বাক্ষরিত ব্যাংকস্ট্যাম্প নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিতো প্রতারক আসাদুজ্জামান। পরবর্তী সময়ে এসব দিয়ে প্রার্থীদের ব্ল্যাকমেইলও করতো সে। রাকিব উজ্জামান বলেন, আটকের পর আসামি আসাদুজ্জামান প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তার অস্থায়ী অফিস তালাবদ্ধ করে আবার অন্য জায়গাতে অফিস ভাড়া নিতেন। আটক আসামি মো. ওসমান আলী পেশায় একজন কাপড় ব্যবসায়ী। আল আমিন নামে এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীর মাধ্যমে আসাদুজ্জামানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওসমান জাল ভিসা প্রস্তুতের কাজ করত। আর এই কাজ সে গত ৩ বছর যাবৎ করছিল। জাল ভিসা তৈরি করার জন্য সে ভিসাপ্রতি ২০ হাজার করে টাকা পেত। এ পর্যন্ত সে ৪০-৫০টি জাল ভিসা তৈরি করেছে বলেও স্বীকার করেছে। আসামি টিপু সুলতান বিভিন্ন মার্কেটে ভাসমান ইলেক্ট্রনিক ব্যবসা করার সুবাদে ওসমানের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে লিটনের দোকান থেকে জাল ভিসা ও চাকরির বিভিন্ন নিয়োগ সংগ্রহ করে ওসমানকে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করতো।  সেও গত ৩ বছর ধরে এই কাজ করছিল।
আসামি সিরাজুল ইসলাম পেশায় একজন ঘড়ি বিক্রেতা। কাউরাইদ বাজারে তার একটি ঘড়ি মেরামতের দোকানও আছে। ফরিদ নামে একজনের মাধ্যমে  সে ওসমানের সঙ্গে পরিচিত হয়। এদিকে, আসামি লিটন মাহমুদ মিরপুর-১ এর কো-অপারেটিভ মার্কেটে অবস্থিত লিটন ডিজাইন হাউজের মালিক। সে ৭ বছর ধরে মিরপুরে ব্যবসা করে আসছে। সে জাল ভিসা ও ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরির করে সরবরাহ করতো বলে স্বীকার করেছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status