শেষের পাতা

ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যা থাকছে

কাফি কামাল

৭ ডিসেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

নতুন নতুন উদ্যোগের স্বপ্ন ও বিদ্যমান নানা ব্যবস্থার সংস্কারকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি করা  হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সরকার গঠন করতে পারলে নাগরিকদের নিরাপদ জীবন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে।

গণতন্ত্র ও মানবিকতার স্বার্থে সে সরকারের চরিত্র হবে সহনশীল। মানসম্মত কর্মমুখী শিক্ষাকে প্রধান্য দেয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হবে দক্ষ ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। দ্রুততম সময়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ছাড়া কোনো সরকারি চাকরিতে থাকবে না বয়সসীমা। ক্ষমতার ভারসাম্য ও প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে দেয়া হবে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ।

কৃষক, শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে দ্রুত কমিয়ে আনা হবে দারিদ্র্য। বৃহৎ প্রকল্প, সরকারি সেবা সংস্থা ও আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে সুশাসন। দুর্নীতির বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। ন্যায়পাল নিয়োগ, সিটি গভর্মেন্ট চালু ও সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন করা হবে। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের নায্যমূল্য ও ভোক্তাদের ন্যায্য ক্রয়মূল্য নিশ্চিত করা হবে। চিকিৎসা সেবার বিকেন্দ্রীকরণসহ স্বাস্থ্যখাতের সংস্কার ও উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত ও নারীর ক্ষমতায়নে জোর দেয়া হবে। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় স্থাপন ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবমুক্ত রাখার পাশাপাশি সংস্কারসাধন ও মামলাজট কমানোর বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, পিএসসি- জেএসসি পরীক্ষা বাতিল, জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণ, পরিবেশবান্ধব সবুজ বাংলা ধারণা, ক্রিয়েটিভ শিল্পায়ন, আয় বৈষম্য দূরীকরণ, জনগণের করের টাকার সদ্ব্যবহার, পাচারকৃত দুর্নীতির টাকা ফেরত আনা, উন্নয়ন ব্যয় জনগণের উপকারে লাগানো, বিনিয়োগের উপর রিটার্ন ফল পুরোপুরি সদ্ব্যবহার বিষয়গুলো নির্বাচনী ইশতেহারে থাকবে। নির্বাচিত হতে পারলে তাদের পাঁচ বছর মেয়াদি ক্ষমতায় যেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারবেন সেসব বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশবাসীর প্রতি যে ‘ভিশন ২০১৩’ উত্থাপন করেছিলেন সেটার সমন্বয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিটি দলের প্রস্তাব ও পরামর্শ বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে এই ইশতেহার। ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি তৈরিকৃত ইশতেহার চূড়ান্ত করে এর টুকিটাকি সংশোধন, সংযোজন ও বিয়োজন করে চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আগামী ১৭ই ডিসেম্বর ইশতেহার ঘোষণা করা হবে। গতকাল সন্ধ্যায় স্টিয়ারিং কমিটির সভা শেষে ইশতেহার প্রকাশের এ তারিখ ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফ্রন্ট সরকার গঠন করতে পারলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা হবে। সরকারি পদক্ষেপ ও সরকারের পদধারীদের বিরুদ্ধে সমালোচনা, এমনকি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপেরও অধিকার থাকবে। সামাজিক গণমাধ্যমসহ সব গণমাধ্যমের ওপর কোনো রকম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। সূত্র জানায়, নিরাপদ জীবনের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়টি পাবে সর্বাধিক গুরুত্ব। ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় গেলে দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম (এনফর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারান্স) পুরোপুরি বন্ধ হবে। রিমান্ডের নামে পুলিশি হেফাজতে যেকোনো ধরনের শারীরিক নির্যাতন বন্ধ করা হবে। সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হবে না। বিপথগামী রাজনৈতিককর্মীদের হাত থেকেও নাগরিকরা সুরক্ষিত থাকবে। মামলাজট কমানোর জন্য নানা পদক্ষেপ নেয়া হবে। সেই সঙ্গে উচ্চ আদালতের বাৎসরিক ছুটি ছয় সপ্তাহে সীমিত করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশ ও সামরিক বাহিনী ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের জন্য কোনো বয়সসীমা থাকবে না। সরকারি চাকরিতে শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছাড়া আর কোনো কোটা থাকবে না। ত্রিশোর্ধ্ব শিক্ষিত বেকারের জন্য বেকার ভাতা চালু করা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে সব সরকারি শূন্য পদে নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।

ইশতেহারে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিম্ন আদালতকে পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের অধীনস্থ করা হবে। সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শুধু অনাস্থা ভোট ও অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে দলীয় এমপি দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও তাদের সদস্য পদ শূন্য হবে না এমন সংশোধনী ৭০ অনুচ্ছেদে আনা হবে। সংসদের উচ্চকক্ষ সৃষ্টি করে বিভিন্ন দলের প্রাপ্য সদস্য সংখ্যা নির্ধারণে সংসদ নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বিবেচনায় নেয়া হতে পারে। পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না। ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে বিবেচনায় রাখা হবে সব সংসদীয় কমিটিতে বিরোধী দলের অর্ধেক সদস্য রাখার বিষয়টি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে হবে। প্রতিটি সাংবিধানিক কমিটিতে বিরোধী দল ও নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। পৌর এলাকাগুলোতে সকল সেবা সংস্থাকে মেয়রের অধীনে রেখে সিটি গভর্নমেন্ট চালু করা হবে। জনকল্যাণে প্রশাসনিক কাঠামো বিভাগীয় পর্যায়ে বিন্যস্ত করার লক্ষ্যে কমিশন গঠন করা হবে।

ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি সূত্র জানায়, সারা দেশে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোকে পর্যায়ক্রমে ৫০ শয্যা, প্রতি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে। সকল জেলায় ২০ শয্যাবিশিষ্ট সিসিইউ, ২০ শয্যার আইসিইউ ও ১০ শয্যার এনআইসিইউ স্থাপন করা হবে। পুরনো ২১ জেলায় অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটি করে ২০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার ও একটি করে ক্যানসার কেমোথেরাপি সেন্টার গড়ে তোলা হবে। পর্যায়ক্রমে তা সব জেলায় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হবে। সকল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এক বছর ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করে এক বছর প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে। তিন মাসের মধ্যে ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার খরচ কমানো হবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু যুগোপযোগী পরিবর্তন আনা হবে। কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হবে। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। প্রথম বছর থেকেই ডাকসুসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা হবে। পুরোপুরি ভ্যাটমুক্ত থাকবে বেসরকারি শিক্ষা। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে।
সূত্র জানায়, দায়িত্ব পেলে দুই বছরের মধ্যেই গার্মেন্ট শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। সকল খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে। গার্মেন্টসহ অন্য সব শিল্প এলাকায় শ্রমিকদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষি ভর্তুকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়িয়ে সার বীজ এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করা হবে। কৃষি উৎপাদনকে লাভজনক পেশায় পরিণত করার লক্ষ্যে উৎপাদন খরচের সঙ্গে যৌক্তিক মুনাফা নিশ্চিত করে স্থানীয় সমবায় সমিতির মাধ্যমে সব কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারিত হবে। নগরবাসী কৃষিপণ্য পাবেন উৎপাদক সমবায় সমিতি নির্ধারিত মূল্যের সর্বোচ্চ ৩ গুণ মূল্যে। জলমহাল এবং হাওরের ইজারা সম্পূর্ণ বাতিল করে মৎসজীবী ও দরিদ্র জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, অতি দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করা হবে। বয়স্ক ভাতা, দুস্থ মহিলা ভাতাস বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতার পরিমাণ ও আওতা বাড়ানো হবে। শ্রমিক ও ক্ষেতমজুরসহ গ্রাম ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সুলভ মূল্যে রেশনিং চালু করা হবে। পুনর্বাসন ছাড়া শহরের বস্তিবাসী ও হকারদের উচ্ছেদ করা হবে না। হতদরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দুর্নীতির তদন্ত করে তার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে। সংবিধান নির্দেশিত সব দায়িত্ব পালনে ন্যায়পালকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা গ্রেপ্তারে সরকারের অনুমতির বিধান (সরকারি চাকুরী আইন-২০১৮) বাতিল করা হবে। অর্থ পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যাংকিং সেক্টরে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যাংকগুলোকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সর্বময় ক্ষমতা দেয়া হবে। সরকারি মদতে শেয়ার বাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। সঠিক ব্যবস্থা ও প্রণোদনার মাধ্যমে শেয়ার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা করে শেয়ারবাজারকে তার সঠিক গতিপথে নিয়ে যাওয়ার সব ব্যবস্থা খুব দ্রুত নেয়া হবে।

সূত্র জানায়, নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রথার পরিবর্তে সরাসরি নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীর জন্য বাধ্যতামূলক ২০% মনোনয়নের বিধান করা হবে। এই বিধানের সঙ্গে আগামী পরের দুটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৩০০ আসনের অতিরিক্ত ১০% সংরক্ষিত নারী সদস্যের বিধান থাকবে। সরকারি পর্যায়ে কর্মজীবী নারীদের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে। বেসরকারি ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করার ক্ষেত্রে খুব সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হবে। সূত্র জানায়, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। ইউরোপ, জাপানসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শ্রমশক্তি রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা হবে। মধ্যপ্রাচ্যে প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে মরদেহ সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে আনা হবে এবং বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপরে নৃশংস হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে। বড় শহরগুলোতে ট্রাফিক জ্যাম নিরসনকল্পে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হবে। শহরে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবহন নীতি প্রণয়ন করা হবে। মানুষের জন্য আরামদায়ক গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা হবে। রেলখাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সমপ্রসারণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঐক্যফ্রন্ট সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম বছরে সব গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের দাম বাড়বে না। সর্বোচ্চ ১০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের মূল্য আগামী পাঁচ বছরে বাড়বে না। গ্রামীণ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং দেশের সব সরকারি বেসরকারি হাসপাতালকে বাণিজ্যিক দামের পরিবর্তে হ্রাসকৃত বাসস্থানের দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার প্রণয়ন সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান তৈরিসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে মানুষের মুক্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। দায়িত্বপ্রাপ্তির এক বছরের মধ্যে মানুষকে ভেজাল ও রাসায়নিক মুক্ত নিরাপদ খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া হবে। মোবাইল ইন্টারনেটের খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। দেশের বিভিন্ন গণজমায়েতের স্থানে ফ্রি ওয়াফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সূত্র জানায়, সংখ্যালঘুদের মানবিক মর্যাদা, অধিকার, নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠা করা হবে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়। সংখ্যালঘুদের ওপর যেকোনো রকম হামলার বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যাসহ অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা হবে। বিশেষ করে কৃষিনির্ভর ও শ্রমঘন শিল্পে বিশেষ প্রণোদনা দেয়া হবে।

দেশের দারিদ্র্য প্রবণ জেলাগুলোতেও শিল্পায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র এবং অন্যান্য সব সরঞ্জাম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কেনা হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য কল্যাণমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধকল্পে বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন ও এর ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করার জন্য বাংলাদেশে আরো অনেক বেশি আন্তর্জাতিক সাহায্য নিশ্চিত করার চেষ্টা এবং সেটা সদ্ব্যবহার করা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status