এক্সক্লুসিভ

নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার

৭ ডিসেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

তফসিল ঘোষণার পর সকল রাজনৈতিক দল, ভোটারসহ প্রত্যেকের সমান সুযোগ সৃষ্টির যে উদ্যোগ কমিশনের পক্ষ থেকে নেয়া দরকার ছিল, তা আজ অবধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। নির্বাচন কমিশনের অতীত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশেষ করে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ জনমনে যে অনাস্থা তৈরি হয়েছিল, তা দূর তো হয়নি বরং কমিশন ক্রমাগত আস্থাহীনতার সংকটে পড়ছে। এদিকে তফসিল ঘোষণার পর সরকারি দল ও মহাজোট একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চললেও নির্বাচন কমিশন কিছুই দেখছে না বলে নিজেদেরকে উটপাখীর পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে। গতকাল রাজধানীর পল্টনস্থ মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম এসব কথা বলেন।
শাহ আলম বলেন, সারা দেশের মানুষের মনে এখনো শঙ্কা-আদৌ নির্বাচন হবে কি না? নির্বাচন হলে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবো কি না? ভোটের ফলাফল সঠিকভাবে প্রকাশিত হবে কি না? তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের অতীত অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত। তাই নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের মনে এতো শঙ্কা। তিনি বলেন, অতীতে যে ১০টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার ৬টি দলীয় সরকারের অধীনে
হয়েছে, একটিতেও ক্ষমতার পরিবর্তন হয়নি। আর বাকি ৪টি নির্বাচন তদারকি সরকারের অধীনে হয়েছে বলে জনগণ নিজের ভোট অন্তত দিতে পেরেছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি, কারণ ঐ নির্বাচনগুলোতে কালোটাকা, পেশীশক্তি, সামপ্রদায়িক প্রচারণা, প্রশাসনিক কারসাজি মুক্তভাবে হয়নি। আমরা মনে করি সরকারও বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে সংলাপের সময় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাও রক্ষা করেননি। তিনি বলেন, তখন বলা হয়েছিল সংলাপের একটা সারসংক্ষেপ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে তুলে ধরবেন। কিন্তু কোন অদৃশ্য কারণে তিনি তা আজও জানাননি। উপরন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন নির্বাচনকালীন সরকার ছোট পরিসরে হবে। যারা নির্বাচনের সময় শুধু রুটিন ওয়ার্ক (কাজ) করবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সরকারের আকার ছোট তো হয়ইনি উল্টো প্রকল্পের কাজের দোহাই দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সব কাজই করে যাচ্ছে। এ থেকেই বোঝা যায়, এটা কোন নির্বাচনকালীন সরকার নয়। তুচ্ছ ঘটনায় বাম জোটসহ অনেক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের কথা উল্লেখ করে বাম নেতাদের এই সমন্বয়ক বলেন, এবারে মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা সংশোধনযোগ্য তুচ্ছ ঘটনায় যেভাবে গণহারে বিরোধী দলগুলোর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে, তা সত্যিই অভূতপূর্ব। যা কমিশনকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধই করেনি, কমিশন কর্তৃক প্রণীত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল ২০১৮ এর ২য় অধ্যায়ে উল্লিখিত ১৫নং অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন করেছে। এসময় সাতক্ষীরা-১ আসনে বাম জোটের প্রার্থী আজিজুর রহমানের এলাকায় পুলিশি হয়রানি ও শহীদুল ইসলামকে অহেতুক ও গ্রেফতারেরও নিন্দা জানায় ৮টি বাম দলের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status