ইলেকশন কর্নার

খুলনার ৬টি আসনে ফ্যাক্টর হবে নতুন দেড় লাখ ভোটার

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

৬ ডিসেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:২৪ পূর্বাহ্ন

খুলনার সংসদীয় ৬টি আসনে লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের প্রতীকের। প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত দুই জোটেই আসনভিত্তিক একাধিক প্রার্থী থাকবে। তবে, অতীতের তুলনায় এবার ভোটের আগাম হিসাব-নিকাশ কষছেন দুই শিবিরের প্রার্থীরাই। সাংগঠনিক কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সব প্রার্থীই নতুন ভোটার বা তরুণ প্রজন্মকেই কাছে টানছে। খুলনার ৬টি আসনে এবার দেড় লক্ষাধিক নতুন ভোটার ফ্যাক্টর হবে ফলাফল নির্ধারণে এমনই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এবারে ৬টি সংসদীয় আসনে মোট ভোটার ১৮ লাখ ৬৫৬ জন। অংশগ্রহণমূলক সর্বশেষ ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে ভোটার ছিল ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৮৬২ জন। দশম সংসদ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ২ হাজার ৪৯ জন। এবারের একাদশ এ নির্বাচনে মোট ভোটার ১৮ লাখ ৬৫৬ জন। এবার প্রায় এক লাখ ৫৯ হাজার নতুন ভোটার জীবনের প্রথম ভোট দেবেন। মনোনয়ন জমা দিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রার্থীরা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে এসব তরুণ ভোটারদের।
সূত্র মতে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ননী গোপাল মণ্ডল এক লাখ ২০ হাজার ৮০১ ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার একমাত্র নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী আমীর এজাজ খান পেয়েছিলেন ৬৮ হাজার ৪২০ ভোট। এখন পর্যন্ত বর্তমান সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, সাবেক সংসদ সদস্য ননী গোপাল মণ্ডল ও মহাজোট শরিক জাপার সুনীল শুভরায় প্রার্থী রয়েছেন। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এ আসনটিতে মহাজোটের মধ্যে চলছে দেন-দরবার। অপর শিবিরে একক প্রার্থী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান। খুলনা-২ আসনে নজরুল ইসলাম মঞ্জু ১ হাজার ৬৭০ ভোটের ব্যবধানে মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজানকে পরাজিত করেছিলেন। ওই নির্বাচনে মঞ্জু পেয়েছিলেন ৯০ হাজার ৯৫০ ভোট; আর মিজান পেয়েছিলেন ৮৯ হাজার ২৮০ ভোট। এবার এ আসনে প্রার্থী বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানায় সাংগঠনিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। খুলনা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ৭৪ হাজার ৬৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম পেয়েছিলেন ৫৮ হাজার ১৭৭ ভোট। আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকলেও এখনো পর্যন্ত বিএনপি’র রকিবুল ইসলাম বকুল ও এস এম আরিফুর রহমান মিঠু নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। জনসমর্থন দেখাতে ব্যস্ত দুজনই। খুলনা-৪ আসনে নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শরীফ শাহ কামাল তাজকে মাত্র ১১ হাজার ৬৬৯ ভোটে হারিয়ে আওয়ামী লীগ থেকে মোল্লা জালাল উদ্দিন নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি পেয়েছিলেন এক লাখ ৯ হাজার ২১৬ ভোট। আর শরীফ শাহ কামাল তাজ পেয়েছিলেন ৯৭ হাজার ৫৪৭ ভোট। এবার এখানে আওয়ামী লীগের নতুন মুখ আব্দুস সালাম মুর্শেদী। আবার শরীফ শাহ কামাল তাজ-এর পাশাপাশি একই দলের প্রার্থী রয়েছেন আজিজুল বারী হেলাল। দুজনেই ছুটছেন সাংগঠনিক কর্মসূচিতে। খুলনা-৫ আসনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী (বর্তমান) নারায়ণ চন্দ্র চন্দের কাছে ২০০৮ সালে ৩৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। অবশ্যই ২০০১ সালের নির্বাচনে ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে ৪ হাজার ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। এবার ধানের শীষ প্রতীকে জামায়াতে ইসলামীর এ নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিলেও বিএনপির ড. মামুন রহমান ও অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একক প্রার্থীর বিরুদ্ধে ২৩ দলের মিয়া গোলাম পরওয়ার ও বিএনপির দুজন প্রার্থী তাদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাংগঠনিক কর্মসূচি করছেন। খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সোহরাব আলী সানা নির্বাচত হন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস এক লাখ ১৬ হাজার ১৬১ ভোট পেয়েও পরাজিত হন।
তবে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট শেখ মো. নুরুল হক। এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের নতুন প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের আক্তারুজ্জামান বাবু ছাড়াও আছেন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু ও মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর। তবে, জাতীয় পার্টি থেকে মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অপরদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগরী আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ২৩ দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তবে মনার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বাছাইয়ে। যদিও তিনি আপিল করেছেন; যা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status