শেষের পাতা

নির্বাচন সামনে রেখে পর্যবেক্ষণে বিনিয়োগকারীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

২১ নভেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

দেশের পুঁজিবাজারে সমপ্রতি টানা পতন চলছে। কোনো কোনো দিন কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। আবার চীনা কনসোর্টিয়ামের টাকা বিতরণের খবরেও পুঁজিবাজার স্থিতিশীল আচরণ করছে না। একদিন ঊর্ধ্বমুখী হলে তিনদিন পতনে থাকে। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারা নতুন করে বিনিয়োগ না করার সিদ্ধান্তহীনতায় দিন পার করছে। ফলে উঠানামা করছে দেশের দুই শেয়ারবাজার।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিসেম্বর মাসে ব্যাংক ক্লোজিং হওয়ার কারণে এর আগে ব্যাংক খাতের শেয়ারের দর কিছুটা পড়ে যায়। কারণ, রিপোর্টিংয়ের সুবিধার্থে নগদায়ন করতে ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কাছে থাকা অনেক শেয়ার ছেড়ে দেয়। ফলে এ সময় এ খাতে শেয়ারের দামে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যায়। তবে এই মুহূর্তে বাজারের যে আচরণ তা কোনোভাবেই স্বাভাবিক না।

জানা গেছে, ডিসেম্বরে ব্যাংক ক্লোজিংয়ে বোনাস শেয়ার বেশি দেয়ার ফলে এর আগে ব্যাংক খাতে কিছুটা দরপতন হয়। গত জুন ক্লোজিংয়ে কোম্পানিগুলো বোনাস বেশি দেয়ায় শেয়ারবাজারে বোনাস শেয়ারের সংখ্যা বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। নতুন শেয়ার কেনার মতো বিনিয়োগকারী বাজারে নেই। ফলে দরপতন হচ্ছে শেয়ারবাজারে। প্রতিনিয়ত কমছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূলধন।

এদিকে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে শেয়ারবাজার চাঙ্গা রাখতে রাষ্ট্রায়ত্ত ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু সেই অর্থের বিনিয়োগ এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি। এছাড়া চীনা কনসোর্টিয়ামের দেয়া প্রায় এক হাজার কোটি টাকার মধ্যে অনেকেই বিনিয়োগ করে কাঙ্ক্ষিত হারে মুনাফার পরিবর্তে লোকসান গুনতে শুরু করেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।

ওদিকে সমপ্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী দুই চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের শর্তে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ১০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। আগামী ছয় মাস পর্যন্ত এই সুবিধা দেয়া হয়েছে। এই অর্থ বাজারে প্রবেশ করলে কিছুটা গতি পেতে পারে শেয়ারবাজার। তবে সবকিছু নির্ভর করছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপরে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সোমবার মূল্য সূচকের সামান্য উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে ডিএসইতে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে বড় ব্যবধানে। এদিন ডিএসইতে প্রায় ৪৪ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেন বেড়েছে।

সোমবার ডিএসইতে ৮০৩ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ২৪৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি। ডিএসইতে ৫৫৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৬টির, কমেছে ১৫৭টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫২টি কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৩১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৬ হাজার ১৪১ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০২টির, কমেছে ১০৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে  ৩০টির শেয়ার দর।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status