খেলা

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজ

জয়ের কক্ষপথে থাকার চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার

২১ নভেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:০৫ পূর্বাহ্ন

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশর প্রথম টেস্ট জয় এমনকি হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয়, সবই ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তবে সেটি ২০০৯-এ। মাঝে কেটে গেছে নয় বছর। সবশেষ সাফল্য বলতে ড্র, তাও প্রায় আট বছর আগে। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২০১১-তে। এখান পর্যন্ত ১৬ টেস্টে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মাত্র ২ জয় আর একই সমান ড্র ছাড়া টাইগারদের সম্বল। এরই মধ্যে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে জয় দল। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিপক্ষে জয় যেন সোনার হরিণ। শেষ ৭ টেস্টে শুধু হার আর হার। যার ক্ষত এখনো তরতাজা। কারণ, এ বছরের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে রচিত হয়েছে ব্যাটিং লজ্জার। প্রথম টেস্টে সাকিব আল হাসানের দল প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৪৩ রানে। এখানেই শেষ নয় এই সিরিজের ২ টেস্টের কোনো ইনিংসেই দেড়শ পার করতে পারেনি টাইগাররা। বছরের শেষে আবারো মুখোমুখি ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে, তবে এবার লড়াই দেশের মাটিতে। ইনজুরি থেকে ফিরে আবারো দলের নেতৃত্বে সাকিব আল হাসান। কাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ক্যারিবীয় মিশন। সেখানে সাকিবের দলের একমাত্র চ্যালেঞ্চ দুঃস্মৃতি ভুলে ঘুড়ে দাঁড়ানোর। আর সেই অনুপ্রেরণা হতে পারে সব শেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দাপুটে জয়।
এ বছরের শুরুতেই টাইগারদে টেস্টে উড়িয়ে দিলে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরেছে। আর এ দেশে এসে লড়াই সহজ নয় সেটিও তাদের বেশ ভালো ভাবেই জানা। আর তা বলতে দ্বিধা করেননি ক্যারিবীয়দের ভারপ্রাপ্ত কোচ নিক পোথাস। প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল‘ পদত্যাগ করেছেন। যদিও কথা ছিল বাংলাদেশ সফর দিয়েই তিনি শেষ করবেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দায়িত্ব ভার কিন্তু তা হয়নি। তিনি দলের সঙ্গে আসেননি বাংলাদেশ সফরে। যে কারণে দলের ফিল্ডিং কোচ পোথাসই ভরসা, তিনি অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। নিজের প্রথম মিশন অবশ্য বেশ চ্যালেঞ্জই জানছেন পোথাস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলে ২০০২-এ। সেবারও চট্টগ্রাম ও ঢাকাতে দুই সিরিজের টেস্ট হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ দেশ দল। দ্বিতীয় দেখা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ২০০৪-এ। সেবারও সিরিজে হোয়াইটওয়াশ। তবে ২০০৯-এ বদলে যায় ইতিহাস। প্রথমবার বিদেশের মাটিতে টেস্ট জয় ও হোয়াইটওয়াশ করে টাইগার ক্রিকেটে নতুন দিনের সূচনা করে। যদিও সেবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে বিদ্রোহের কারণে তেমন কোনো বড় তারকাই ছিল না। বলা হয়, দুর্বল দলের বিপক্ষে এই জয় পেয়েছিল টাইগাররা।
গেল এক বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটে দারুণ ভাবে ভুগ ছিল দল। এরই মধ্যে গেল মাসে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশ সফরে আসে। দলটির বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটশ করে আনন্দে ভাসছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টেস্ট সিরিজে এসে খায় বড় ধাক্কা। সিলেটের অভিষেক টেস্টে ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে হেরে যায় দল। সব মিলিয়ে শেষ চার টেস্টের ৮ ইনিংসে মাত্র একটিই দেড়শ ছাড়ানো দলীয় সংগ্রহ ছিল দলের। সিরিজের শেষ টেস্ট ছিল ঢাকায়। তবে মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে ব্যাট হাতে ঘুড়ে দাঁড়ায়। মুশফিকুর রহীমের ডাবল সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক সৌরভের সেঞ্চুরিতে ৮ ইনংস পর শুধু ২শই ছাড়ায়নি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫২২ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে হাতে ৭ উইকেটে। পরের ইনিংসেও ইনিংস ঘোষণা করে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল ২২৪ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে। শেষ পর্যন্ত ৪৬৭ রানের লক্ষ্যে জিম্বাবুয়ে ব্যাট করতে নেমে হারে ২১৮ রানে। বলতে গেলে এই টেস্টে বাংলাদেশ দল ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ফিরে পেয়েছে জীবন। এই ধারাবাহিকতা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ধরে রাখতে পারাই এখন হবে সাকিব আল হাসানের দলের চ্যালেঞ্জ।
বলার অপেক্ষা রাখে না স্পিন আক্রমণেই ক্যারিবীয়দের বধ করার পরিকল্পনা বাংলাদেশ দলের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ১৯ উইকেট পাওয়া তাইজুলের সঙ্গে আছেন সাকিব আল হাসান। আছে তরুণ অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তাই স্পিন বিভাগ নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ দেই দলের। অন্যদিকে পেস আক্রমণে মোস্তাফিজ ছাড়াও স্পেশালিস্ট কেউ নেই। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেন পেস অলরাউন্ডার আরিফুল হক। এছাড়া যদি সৌম্য সরকার একাদশে থাকেন তাহলে প্রয়োজনে তিনি পেস বোলিংয়ের দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে সবচেয়ে আশার বিষয় বদলের গুরুত্বপূর্ণ তিন চার তিন ব্যাটসম্যানের রানে ফেরা। মুশফিক ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। মুমিনুল খেলেছেন ১৬১ রানের ইনিংস। এমনকি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও হাঁকিয়েছেন সেঞ্চুরি করেছেন। মোহাম্মদ মিঠুন, আরিফুল ও মিরাজরাও রেখেছেন ছোট ছোট অবদান। তবে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে ওপেনিংয়ে। কারণ তামিম এখনো ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেনি। ব্যর্থতায় বাদ পড়েছেন লিটন কুমার দাস। তাই ওপেনিংয়ে গুরু দায়িত্ব পালন করতে হবে ইমরুল কায়েসই। তার সঙ্গে কে হবেন পার্টনার? সৌম্য নাকি সাদমান!
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status