বাংলারজমিন
মরে যাচ্ছে ফলন্ত টমেটো গাছ
আবু সাঈদ শুনু, বাগেরহাট থেকে
২১ নভেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৮:৪৩ পূর্বাহ্ন
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় কৃষকের শত-শত একর ক্ষেতের ফলন্ত টমেটো গাছ হঠাৎ করেই ‘স্ট্রোক’ করে মরে যাচ্ছে। এই উপজেলায় এ বছর ১ হাজার ৫শ’ একর জমিতে চক্র, পানপাতা, মিন্টু সুপার, লাভলী, হাইটম ও বিউটিসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ হয়। ভালো ফল ধরার পরপরই ক্ষেতগুলোর টমেটো গাছে হঠাৎ করেই মহামারী আকারে স্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে। এতে চিতলমারীরর কয়েক শত কৃষক ক্ষেতের টমেটো হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন। চিতলমারী উপজেলা সদর বাজারে এক চায়ের দোকানে বসে কুরমনি গ্রামের টমেটো চাষি অনুপ বিশ্বাস (৩৫) জানান, শীতকালীন আগাম সব্জি হিসেবে ৩ লাখ টাকা ঋণ করে ১ একর জমিতে টমেটো লাগিয়েছিলাম। কঠোর পরিশ্রম ও পরিচর্যায় গাছগুলোতে প্রচুর টমেটো ধরেছিল। আশা ছিল এ বছর টমোটে বিক্রি করে সব ধারদেনা পরিশোধ করব। সব ফলন্ত টমেটো গাছ স্ট্রোক করে হঠাৎ করেই মরে গেছে। এখন ঋণের টাকা তো দূরের কথা- পরিবার নিয়ে বাঁচাই এখন দুরুহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিতলমারী উপজেলার কুরমনি, সুরশাইল, পাটরপাড়া, সাবোখালী, দানোখালী, পাঁচপাড়া, শ্যামপাড়া, খড়মখালী, উমাজুড়ি, খলিশাখালী, গরিবপুর, ডাকাতিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে হাজার হাজার টমেটো চাষি কিশোর রায়, জোতিন পোদ্দার, শষধর রায়, সুকেশ বাড়ৈ, অসীম বসু, তারক বিশ্বাস, শামসুর রহমান, মাহফুজ হাওলাদার, কামরুল ফকির, আজমল বিশ্বাস, নিখিল বড়াল, তরুণ সরকার, অমলেশসহ অনেকে নিজেদের দুঃখের বর্ণনা দিয়ে জানান, এ বছর হঠাৎ করে করে স্ট্রোক করে তাদের শত-শত একর জমির ফলন্ত টমোটো গাছ মরে যাওয়ার তারা একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এ অঞ্চলের টমেটো চাষিদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে তারা এবার ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। চিতলমারী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনন্দ বিশ্বাস বলেন, চিতলমারীতে এ বছর ১ হাজার ৫শ’ একর জমিতে চক্র, পানপাতা, মিন্টু সুপার, লাভলী, হাইটম ও বিউটিসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের টমেটোর চাষ করেছিল চাষিরা। ভালো ফল ধরার পরপরই ক্ষেতগুলোর টমেটো গাছে হঠাৎ করেই মহামারী আকারে স্ট্রোক রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাচ্ছে। এটি মাটিবাহিত ব্যাটেরিয়া সংক্রান্ত রোগ। এ রোগে গাছের শেকড় একেবারে নষ্ট করে ফেলে। টমেটোর চারা লাগানোর আগে চাষিরা ভালো করে মাটি পরিশোধন না করার কারণেই ক্ষেতে মহামারী আকারে স্ট্রোক রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।