বিনোদন

ইউটিউবে অশ্লীল ভিডিওর ছড়াছড়ি

এন আই বুলবুল

২১ নভেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৮:৩১ পূর্বাহ্ন

প্রযুক্তির কল্যাণে এখন অনেকেই ইউটিউব চ্যানেল চালাচ্ছেন। টিভি চ্যানেল সম্প্রচারের জন্য সরকারি নিয়ম-নীতি থাকলেও এই ইউটিউব চ্যানেলের জন্য তা নেই। সবাই এখানে ব্যাপক স্বাধীনতা পাচ্ছেন। প্রযুক্তি সব কিছু আমাদের সহজ করে দিচ্ছে। ফলে যে যার মতো সেটিকে ব্যবহার করছে। বাণিজ্যিক ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলগুলোও এখন নানা রকম কন্টেন্ট প্রকাশ করছে। তবে, এই কন্টেন্টগুলোর বেশিরভাগ অশ্লীলতায় ভরপুর। এই কন্টেন্টগুলোর কমেন্টস বক্সে কোনো পজেটিভ মন্তব্য থাকে না দর্শকের। অরুচিকর ও বিরক্তিকর বলেই সবাই মত প্রকাশ করেন। তবুও থেমে নেই এসব কন্টেন্টের প্রকাশ। আর্থিক সুবিধা ও বেশি ভিউয়ার্সের জন্য এসব কন্টেন্টগুলো প্রকাশ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। একটি কন্টেন্ট প্রকাশের এক মাসেরও কম সময়ে এগুলোতে দেখা যায় ২০ থেকে ৩০ লাখ ভিউয়ার্স। ‘মডার্ন ভাদাইম্যা’, ‘ছোট টাইসান’, ‘বাসর ঘরে আপনি কি করবেন’সহ এমন অনেক কন্টেন্ট দেশীয় ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে প্রকাশ হচ্ছে। দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে নিম্নমানের নির্মাতারা ভিউ ও আর্থিক লাভের আশায় তৈরি করছেন সুড়সুড়ি দেয়া কন্টেন্ট। সাম্প্রতিক সময়ে মূলধারার কন্টেন্টগুলোতেও থাকছে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। টিভিতে নাটক প্রচারের জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে নাটক নির্মাণ করতে হয়। কিন্তু ইউটিউবের জন্য নাটক-ওয়েব সিরিজ নির্মাণের জন্য কোনো নিয়ম মানার প্রয়োজন পড়ে না। এদিকে যে সব নির্মাতা টিভিতে নাটক প্রচারে ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের অনেকেই ইউটিউবের জন্য নির্মাণ করছেন ওয়েব সিরিজ। ওয়েব সিরিজ এই সময়ে অনলাইন দর্শকের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশ্বের নানা দেশে বড় বড় নির্মাতা ও তারকারা ওয়েব সিরিজে এই সময়ে কাজ করছেন। দেশীয় নির্মাতা ও অভিনয় শিল্পীরাও এ মাধ্যমটিতে এখন ঝুঁকছেন। কিন্তু দেশীয় ওয়েব সিরিজগুলোতে থাকছে অশ্লীলতা। নির্মাণশৈলীতে নেই কোনো শৈল্পিকতা। সিরিজের নামে যৌনতার উচ্ছৃঙ্খল চিত্রায়ণ দেখানো হচ্ছে। অনেকে গল্প আর চরিত্রের চেয়ে যৌনতা, বিছানা দৃশ্য আর অশ্লীলতায় উস্কানি দেয় এমন সব সংলাপকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। দর্শক বিনোদন পাবার আশায় এগুলো দেখে বেশ বিরক্ত হচ্ছে। পাশের দেশের ওয়েব সিরিজগুলোও অশ্লীলতায় ভরপুর। তবে সে দেশে ওয়েব সিরিজের জন্য সেন্সর বোর্ড চাওয়া হয়েছে শুরু থেকেই। আমাদের দেশেও ওয়েব সিরিজের জন্য সেন্সরের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। ইউটিউবে অশ্লীল ভিডিও ও ওয়েব সিরিজ নিয়ে নির্মাতা ও অভিনেতা গাজী রাকায়েত বলেন, আমরা প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার জানি না বলেই আমাদের এই অধঃপতন। প্রযুক্তি আমাদের অনেক কিছু সহজ করে দিয়েছে। তাই বলে এটিকে যেমন খুশি তেমন ব্যবহার করতে হবে তার কোনো মানে হয় না। একজন সূস্থ মানুষ কখনো এসব অশ্লীলতার পক্ষে বলবে না। আমি মনে করি, প্রশাসনিকভাবে এগুলোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। যে সব ইউটিউব চ্যানেল থেকে এ ধরনের অশ্লীল কন্টেন্ট প্রকাশ করা হয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। তাহলে ক্রমান্বয়ে এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ওয়েব সিরিজ নির্মাণের জন্যও কিছু নিয়ম-নীতি তৈরি করা হলে যে সে আর এগুলো নির্মাণের জন্য এগিয়ে আসবে না। নির্মাতা ও অভিনেতা সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, ভারত যেখানে ওয়েব সিরিজের জন্য সেন্সরের কথা ভাবছে তাহলে বুঝতে হবে এটির ভয়াবহতা কোন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। ওয়েব সিরিজ অনলাইন দর্শকের জন্য বিনোদনের নতুন একটি মাধ্যম। কিন্তু এই বিনোদনের মানে এই নয় এখানে অশ্লীল কিছু নিয়ে দর্শকের সামনে আসতে হবে। দর্শক বরারবই রুচিশীল কন্টেন্ট দেখতে চায় বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া সস্তা ও মানহীন ভিডিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। না হয় নতুন প্রজন্মের নৈতিকতার অবক্ষয় হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status