বাংলারজমিন

কুড়িগ্রাম-৪

চলছে হিসাব নিকাশ

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৮:২১ পূর্বাহ্ন

ঘনিয়ে আসছে সময়, চলছে দৌড়ঝাঁপ। ভোটের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে আলোচনার ঝড়। প্রার্থীদের নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি জাতীয় পার্টির (জাপা) কাছ থেকে দখলে নিলেও পরের নির্বাচনে আর ধরে রাখতে পারেনি আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের তখনকার সংসদ সদস্যকে হারিয়ে দশম সংসদে সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী। এ কারণে একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কৌতূহল বাড়ছে। কুড়িগ্রাম-৪ আসন চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা নিয়ে জাতীয় সংসদের ২৮ নম্বর নির্বাচনী এলাকা। এ আসনে এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক ডজনেরও বেশি নেতা মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে আলোচনা থাকলেও এই আসন থেকে ৩০ জন প্রার্থী এবং বিএনপি ও জাতীয় পার্টিরও একাধিক ব্যক্তি নিজ নিজ দলীয় মনোনয়ন ক্রয় করেছেন বলে জানা গেছে। কুড়িগ্রাম-৪ আসনটি এক সময়ে জাতীয় পার্টির দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন সে অবস্থা আর নেই। নবম সংসদ নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে হারিয়ে দেন। কিন্তু দশম সংসদ নির্বাচনে জেপির প্রার্থী রুহুল আমিনের কাছে হেরে যান আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন। এই আসনটিতে পূর্বেও অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে জোটের একাধিক প্রার্থী থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরেও উঠেছে আলোচনার ঝড়- জোট দলগুলোর একক না একাধিক প্রার্থী থাকছে। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ দলের মনোনয়ন ক্রয় করেছেন একাধিক ব্যক্তি। মাঠে-ঘাটে শুরু হয়েছে ভোটের উত্তাপ। চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কোন দল থেকে কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন, কাকে মনোনয়ন দিলে জিতবে আবার কাকে মনোনয়ন দিলে হারবে, কার কোন দোষ এমন আলোচনা চলছে নির্বাচনী এলাকার প্রায় সব জায়গাতেই। এর মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ক্রয়ের পর মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও তদবিরও করছেন তারা। এছাড়াও এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি বড় ফ্যাক্টর হবেন বলে চলছে ভিন্ন আলোচনা।
আওয়ামী লীগ: খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৩০ জন প্রার্থী কুড়িগ্রাম-৪ আসনের দলীয় মনোনয়ন ক্রয় করেছেন যদিও এর আগে ৮-১০ জন প্রার্থী ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি। এই আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জাকির হোসেন, চিলমারী উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী বীরবিক্রম, রৌমারী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিনু, রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম, হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, রৌমারী যুবলীগের সভাপতি হারুন অর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মিনু, চিলমারী যুবলীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান আজাদ জামান, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি মারশাদ আক্তার খুকী, হাজী মুরাদ লতিফ, ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক, অ্যাডভোকেট মাসুম ইকবাল, জেলা পরিষদ সদস্য আজিমুদ্দিন প্রমুখ।
বিএনপি: কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিগত বছরগুলোতে সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট থেকে বিএনপির প্রার্থী দেয়া হয়নি। জোট থেকে জামায়াতের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এবারে বিএনপি থেকে প্রার্থী দেয়ার জন্য দাবি করবেন দলের নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন চিলমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল বারী সরকার, সহ-সভাপতি ও নয়ারহাট ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা, রাজীবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোখলেছুর রহমান, মমতাজ হোসেন লিপি, বেসরকারি সংস্থা আরএসডিএর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইমান আলী প্রমুখের নাম শোনা যাচ্ছে। এ আসনে জামায়াতের মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাককে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যেতে পারে।
জাতীয় পার্টি (জাপা): এ আসনে একাধিকবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়লাভ করেন। কিন্তু দলটির সাংগঠনিক অবস্থা আর আগের মতো নেই। দলের চেয়ারম্যান এরশাদের কর্মকাণ্ডে দলটির প্রতি আস্থাহীন হয়ে পড়েছে সাধারণ ভোটাররা। মূলত তার কারণে জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সাধারণ মানুষ। তা ছাড়া দলের সাংগঠনিক অবস্থাও ভালো নয়। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর কিছুটা এগিয়ে নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন ভোটারা। সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে দল থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত আশরাফ-উদ-দৌলা তাজ, রাজীবপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি ও রাজীবপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ইউনুছ আলী প্রমুখ।
জাতীয় পার্টি (জেপি): গেল নির্বাচনে জেপির প্রার্থী রুহুল আমিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু দলটির সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। শুধু পারিবারিক ও সাবেক এমপি জাকির হোসেনের কর্মকাণ্ডের কারণে রুহুল আমিনের বিজয় হয় বলে জানান এলাকাবাসী। এদিকে জোটগতভাবে নির্বাচনে জেপির এই প্রার্থী নৌকা প্রতীক চাচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
স্বতন্ত্র: এছাড়াও এই আসনে বড় ফ্যাক্টর হলেন সাবেক এমপি গোলাম হাবিব দুলাল। সাবেক এমপি গোলাম হাবিবের ব্যক্তি ইমেজ আর জনকল্যাণে সব সময় কাজ করায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেন তিন উপজেলার ভোটারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status