অনলাইন

সাইবার নিরাপত্তা মন্ত্রী জীবনেও কম্পিউটার চালাননি

মানবজমিন ডেস্ক

১৬ নভেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ৮:০৪ পূর্বাহ্ন

জাপানের সাইবার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী বলেছেন, তিনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনে কখনই কম্পিউটার ব্যবহার করেননি। এমকি ইউএসবি ড্রাইভ বলতে কী বোঝায় তা নিয়েও দন্ধে পড়ে গেছেন তিনি। এই ঘটনা জাপানে রীতিমতো বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইয়োশিতাকা সাকুরাদা (৬৮) জাপান সরকারের সাইবার নিরাপত্তা কৌশল মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান। এছাড়াও তিনি ২০২০ সালে টোকিওতে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক ও প্যারা অলিম্পিক গেমসের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী।

বুধবার তিনি পার্লামেন্টে স্বীকার করেন যে, তিনি কম্পিউটার ব্যবহার করেন না। পার্লামেন্টের নি¤œকক্ষে বিরোধী দলীয় এক সদস্যের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২৫ বছর বয়স থেকেই আমি আমার কর্মচারী ও সচিবদের নির্দেশ দিয়ে চালিয়ে গেছি। এ কারণে আমি নিজে কম্পিউটার ব্যবহার করি না।’ তাকে এ-ও প্রশ্ন করা হয় যে, জাপানের পারমাণবিক স্থাপনাসমূহে ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহার করা হয় কিনা। কিন্তু এই প্রশ্নে তিনি দ্বিধায় পড়ে যান।
প্রতিক্রিয়ায় হতবিহবল হয়ে পড়েন বিরোধী দলীয় আইনপ্রণেতারা। মাসাতো ইমাই নামে এক বিরোধী দলীয় পার্লামেন্ট সদস্য বলেন, ‘এটি অবিশ্বাস্য যে জীবনে যিনি কম্পিউটার ছুঁয়েও দেখেননি, তাকেই আমাদের সাইবার নিরাপত্তা নীতিমালার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

মন্ত্রীর এই মন্তব্যে অনলাইনেও ঝড় উঠেছে। এক টুইটার ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তার কি কোনো লজ্জা বোধ হচ্ছে না?’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এখন একটা কোম্পানির প্রধানও ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করেন। আর তিনি জানেনই না যে, ইউএসবি কী!’ আরেকজন মজা করে বলেছেন যে, সাকুরাদা সম্ভবত নিজের ঘরানার সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘কোনো হ্যাকার যদি মন্ত্রী সাকুরাদার কোনো তথ্য হ্যাক করতে চায়, তারা কোনো তথ্যই চুরি করতে পারবে না। এটি নিশ্চিতভাবেই সবচেয়ে শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা!’

সাকুরাদা এই পদে এসেছেন মাত্র এক মাস হলো। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দলের প্রধান হিসেবে পুনর্নিবাচিত হলে মন্ত্রীসভা পুনর্গঠন করা হয়। তখনই তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সাইবার নিরাপত্তা ছাড়াও, অলিম্পিক ইস্যুতেও আইনপ্রণেতাদের ব্রিফ করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে তাকে। অথচ, আর টোকিওতে এই মহাযজ্ঞ শুরু হতে আর দুই বছরও বাকি নেই।

এই মাসের শুরুর দিকে তিনি দাবি করেন, এই মাসের শেষের দিকে টোকিওতে একটি সভায় উত্তর কোরিয়ার ক্রীড়া মন্ত্রীর অংশগ্রহণের ব্যাপারে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। অথচ, জাপানে উত্তর কোরিয়ার কোনো কর্মকর্তার প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, এই বিষয়ে তিনি জানতেন না। কিন্তু তার এক সহযোগী হস্তক্ষেপ করলে তিনি দ্রুতই উল্টো ঘুরে বলেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রধান থমাস বাখ উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে মার্চে চিঠি লিখেছেন যাতে টোকিও অলিম্পিকে তার দেশের ক্রীড়াবিদরা অংশ নিতে পারেন। কিন্তু সাকুরাদা বলছেন, তিনি এ নিয়েও কিছু জানেন না। তিনি বলেন, ‘এই ইস্যুতে নাক গলানোটা আমার পক্ষে সমীচীন হবে না। এটা আমার ক্ষমতা বলয়ের বাইরে।’ তবে প্রশ্নের জবাব দিতে এই বেহাল দশার জন্য বিরোধী দলের এমপিকে দায়ী করেছেন সাকুরাদা। তার বক্তব্য, এমপি রেনো মুরাতা তাকে আগেভাগে এই প্রশ্ন হস্তান্তর করেননি।

রেনো তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ২০২০ অলিম্পিক ও প্যারা অলিম্পিক আয়োজনের খরচ কেন্দ্রীয় সরকার কতটা বহন করবে। জবাবে তিনি বলেন, ১৫০০ ইয়েন! অর্থাৎ মাত্র ১৩ ডলার! অথচ, বাস্তবে সরকার ব্যয় করবে ১৫০০০ কোটি ইয়েন!
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status