প্রথম পাতা

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল, ভাঙচুর, আগুন, আহত অর্ধশত

পল্টন রণক্ষেত্র

স্টাফ রিপোর্টার

১৫ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

নয়াপল্টনে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করছে হেলমেট পরা এক যুবক। এ সময় আরেক যুবক গাড়িতে আগুন দিচ্ছে -ছবি: জীবন আহমেদ

প্রথম দুই দিনের মতো কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শোডাউনের মাধ্যমে গতকালও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ এবং জমা দিচ্ছিলেন ধানের শীষ প্রতীক প্রত্যাশীরা। নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়। চারদিকে উৎসবের পরিবেশ। তবে গতকাল সকাল থেকেই পুলিশ রাস্তা থেকে সরিয়ে দিচ্ছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের। দাঁড়াতে দিচ্ছিল না রাস্তায়। তার পরও সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। সময় তখন দুপুর পৌনে ১টা। হঠাৎ করেই দৃশ্যপট বদলে যায়। বিশাল একটি মিছিলসহ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে নয়াপল্টনে আসেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। কার্যালয়ের সামনে থেকে তার মিছিল সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। তবে কর্মী-সমর্থকরা সরে না যাওয়ায় একপর্যায়ে পুলিশের গাড়ি উঠে যায় মিছিলের ওপর।

ওই সময় কয়েকজন আহত হন। এ নিয়ে কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়। মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। পুলিশ কয়েকজন কর্মী-সমর্থককে লাঠিপেটা করে। বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরাও রুখে দাঁড়ায়। ফলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। সংঘর্ষের মধ্যে বিএনপি অফিসের সামনে থাকা অনেকে আশ্রয়ের আশায় কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে যান। এ সময় বিএনপি অফিসের মূল ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশের জলকামান ও সাঁজোয়া যান। থেমে থেমে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ।

সকাল থেকে নয়াপল্টনে নেতাকর্মীদের ভিড় থাকলেও পাশেই ভিক্টোরি হোটেলের সামনে পুলিশের একটি ভ্যান ও হক-বে’র সামনে একটি টহল কার দাঁড়ানো ছিল। সংঘর্ষের একপর্যায়ে হেলমেট পরিহিত একদল যুবক পুলিশের দুটি গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আহত হয় দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার রুদ্র মিজানসহ অন্তত ৫০ জন কর্মী-সমর্থক। আহতদের মধ্যে রয়েছেন- পিরোজপুরের শামসুল হক ও আসাদুজ্জামান, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের আবদুর রহমান, রাজধানীর মুগদার মেহেদি হাসান মিরাজ, অরিন, পল্টনের মো. কাদির, হৃদয় শেখ, মতিঝিলের মকবুল হোসেন, সবুজবাগের মনির হোসেন, খিলগাঁওয়ের মোস্তাক, কলাবাগানের সুমন, বিমানবন্দর থানা এলাকার মহিউদ্দিন রতন ও মাদারীপুরের সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ। এদিকে সংঘর্ষের মাঝেই পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে নয়াপল্টনে বিএনপির অফিসের সামনের সড়কে নেতাকর্মীরা জড়ো হন। বিএনপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় একপর্যায়ে সেখান থেকে পিছু হটে পুলিশ।

এ সময় ড্যাবের একজন চিকিৎসক আহত ও পুলিশের ছররা গুলিতে আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। অ্যাম্বুলেন্স ডেকে গুরুতর আহতদের পাঠিয়ে দেয়া হয় হাসপাতালে। মহিলা দলের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আহত মুকুল আক্তার কনা বলেন, আমরা কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। পুলিশ বিনা উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে মাইকে বারবার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ ও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। নেতাকর্মীদের কোনো উস্কানিতে পা না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় বারবার। পুলিশ পিছু হটে নাইটিঙ্গেল মোড়ে অবস্থান নেয়ার পর নয়াপল্টন ভিআইপি রোডের দক্ষিণ পাশ দখলে নেয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। তারপর বিএনপি ও অঙ্গদলের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মী-সমর্থকরা মিছিলে-স্লোগানে মুখরিত করে তোলে নয়াপল্টন। সংঘর্ষের কারণে বিএনপির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে আসা অনেকেই ফিরে যান। এদিকে সংঘর্ষের কারণে তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমার কর্মকাণ্ড। বিকালে বিজয়নগর এলাকায় মোতায়েন করা হয় র‌্যাবের একটি টহল দল। র‌্যাবের টহল দলটি নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে কয়েকদফা টহল দেয়। এ সময় কর্মী-সমর্থকরা স্লোগান দিতে থাকলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হয়।

এদিকে স্বেচ্ছাসেবক দল দাবি করেছে, নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় তাদের ৪ নেতা আহত হয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় নিন্দা জানান। এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বামজোট। আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জোটের সমন্বয়ক কমরেড মো. শাহ আলম বলেন, ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ব্যাপক শোডাউন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে তাকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হয়নি। কিন্তু অন্যান্য বিরোধী দল একইভাবে শোডাউন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হিসেবে নির্বাচন কমিশন পরিপত্র প্রকাশ করেছে। এই পক্ষপাতমূলক আচরণ নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে আবারো জনমনে প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় পুলিশ বাধা দিলে সেখানে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। নির্বাচনের আগে এই ধরনের সংঘর্ষ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশকে ব্যাহত করবে বলে বামজোট মনে করে।

পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে হেলমেট বাহিনী: রিজভী
হেলমেট বাহিনীই নয়াপল্টনে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির  সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, পুলিশ সকাল থেকে নানাভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের বাধা দিচ্ছিল, হেনস্তা করছিল। তখনই মনে হচ্ছিল যে, পুলিশের কোনো একটা অশুভ উদ্দেশ্য আছে আজকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জমায়েতের ওপর। এর আলামত গতকাল নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের বক্তব্যে আমরা আশঙ্কা করছিলাম।

তারই প্রতিফলন আজকে দেখা গেলো। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। আমি আপনাদের সামনে সেই পুরনো ঘটনার কথা বলতে চাই। নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন ও কোটা সংস্কার আন্দোলন আপনারা দেখেছেন। ওই আন্দোলন দমন করতে গিয়ে হেলমেটধারীরা কী করেছিল। আজকে এখানেও তারা চালিয়েছে সে তৎপরতা। রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, এই হেলমেটধারীরা কারা? এটা আপনাদেরকে আমি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেই- এরাই হচ্ছে এজেন্ট প্রভোগেটিয়ার। এই এজেন্টদেরকে দিয়ে নিজেরা পুড়িয়ে আগুন লাগিয়ে বিরোধী দলের ওপর চাপানো পুরোনো ব্লেইম গেইম চলছে। যেভাবে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গত আন্দোলনের সময়ে করেছে।

ঘটনার সময়ে বিএনপি কার্যালয়ে তিন তলার বারান্দায় দাঁড়ানো রিজভী বলেন, আমি এই তিনতলা থেকে দেখেছি কিছু হেলমেটধারীদের তৎপরতা। তারা মোটরসাইকেলগুলো যেখানে আছে সেখানেও কিন্তু যাচ্ছে। নেতাকর্মীরা এখান থেকে হৈ হৈ করে উঠেছে। মোটর সাইকেলের দিকে তারা আগুন লাগাতে গেছে। তিনি বলেন, আজকে ঘটনার জন্য দায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কতিপয় কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনের সচিব। তাদের প্রত্যক্ষ ব্যবস্থাপনায় বিএনপি অফিসের সামনে নেতাকর্মীদের ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালিয়েছে পুলিশকে দিয়ে। তিনি বলেন, আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন চার-পাঁচ দিন আওয়ামী লীগের অফিসের পাশপাশের রাস্তা-ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রতিদিন সংঘর্ষ লেগেছিল। এটির জের হিসেবে আদাবরে দুজন মারাও গেছে। এক্ষেত্রে সিইসি ও কমিশনাররা কোনো বিধি-নিষেধ জারি করেননি, আইজিকে বলেননি- নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে। কিন্তু নয়াপল্টনে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখে ওদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে- এটা কী কাণ্ড, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেই এই অবস্থা। তাই বিএনপির নেতা-কর্মীদের রক্তাক্ত করা, আজকে সহিংস ঘটনার জন্য সরকারের প্রতিভু হয়ে সিইসির নেতৃত্বে কমিশনের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই দায়ী। নয়াপল্টনের ঘটনা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রিজভী বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য আমরা নই, গণবিচ্ছিন্ন সরকারই বিনাভোটে অথবা ভোট বিহীন নির্বাচন করার ষড়যন্ত্র করছে। এটা ওবায়দুল কাদেরদের চক্রান্ত।

তারা মনে করছে, এত নির্যাতন করলাম তার পরেও কেন এত লোক এখানে আসছে। তারাই নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কারণ তারা গণবিচ্ছিন্ন। এছাড়া পুলিশের কতিপয় সদস্য এ হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল বলেও দাবি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। রিজভী জানান, আজকে এই ঘটনায় ৫০ জনের অধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন। এদিকে পল্টনের ঘটনায় তিন ঘণ্টা মনোনয়ন ফরম বিক্রি বন্ধ ছিল। রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগর (উত্তর) জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করার পরও এখনও পযর্ন্ত তাকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করেনি। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এটি একটি পুরনো পদ্ধতি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক পারভেজকে আটক করা হলেও তাকে আটকের বিষয়টি অস্বীকারের জন্য পারভেজের পরিবার ও দলের নেতাকর্মীরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমি অবিলম্বে পারভেজকে জনসমক্ষে হাজির করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলামকে সব মিথ্যা মামলায় জামিনে থাকা সত্ত্বেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া ঢাকা মহানগর ৪৭নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি গোলাম রাব্বানী রবিন, খুলনা মহানগর ১৬নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসেনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ তল্লাশির নামে তাণ্ডব চালিয়েছে হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ পৌরসভা বিএনপি নেতা শমসের আলীর বাড়িতে। তৃতীয় দিনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৭৭টি ফরম বিক্রি ও ৩৩৭টি জমা পড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী, মুনির হোসেন, সাইফুল ইসলাম পটু ও কুমিল্লা নাঙ্গলকোটের নেতা শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সংঘর্ষের পর পরিবেশ কিছুটা শান্ত হলে দুপুর ২টায় বিএনপি অফিসের নিচে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, বিনা উস্কানিতে সরকারের লেলিয়ে দেয়া পুলিশ বাহিনী অতর্কিতভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সরকারের নির্দেশেই আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করেছে লেলিয়ে দেয়া পুলিশ বাহিনী।

আমাদের নেতাকর্মীদের গুলি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ। পুলিশের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনারা মৌচাকে ঢিল মেরেছেন কেন? আপনারা ভেবেছেন শান্তিপূর্ণ এই মনোনয়ন ফরম বিক্রি করার সময় হামলা চালিয়ে আমাদের স্বাভাবিক কাজ বন্ধ করবেন। তবে সেটি আর হবে না। কোনো রক্ত চক্ষুকে শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা ভয় করে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নির্দেশে নেতাকর্মীদেরকে ফুটপাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী।

ইস্যু তৈরিতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীরা: পুলিশ
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য পুলিশ শুধু বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা শান্ত পরিস্থিতিকে অশান্ত করার জন্য পুলিশের ওপর হামলা করে। হামলায় মতিঝিলের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শিবলী নোমান, সহকারী কমিশনার মিশু বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার (অপারেশন) আবু সিদ্দিক, সহকারী কমিশনার (পেট্রোল) ও আরও ১৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি ইস্যু তৈরির জন্য বিনা উস্কানিতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। প্রতিহত করার জন্য আমাদের বিপুল পরিমাণ ফোর্স ছিল। তাই আমরা যেহেতু ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি তাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপির দুজন নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় বিপুল পরিমাণ নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে পার্টি অফিসের সামনে আসেন।

এসময় রাস্তা বন্ধ হয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় পুলিশ তাদেরকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তারা সেটি মানেননি। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঢিল ছুড়তে শুরু করে। তারা আমাদের ওপর হামলা করে এবং পুলিশের ১টি পেট্রোল কার ও ১টি পিকআপ ভ্যান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শিবলী নোমান সাংবাদিকদের বলেন, সংঘর্ষের সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে ২০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসা দিতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

২০ দলীয় জোটের সংবাদ সম্মেলন আজ নির্বাচনের পরিবেশ ও চলমান রাজনীতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। সকাল ১০টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বক্তব্য উপস্থাপন করবেন এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীরবিক্রম। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status