খেলা

বোলারদের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

ইশতিয়াক পারভেজ

১৫ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪২ পূর্বাহ্ন

ব্যর্থতার লজ্জায় মোড়ানো ছিল বাংলাদেশের শেষ চার টেস্ট। দুই ইনিংস মিলিয়ে দলীয় স্কোর ৪শ ছুঁতে পারেনি। একেকটি টেস্ট যেন হতাশার সেল হয়ে বিঁধছিল টাইগার ক্রিকেটের ভক্তদের বুকে।  জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম টেস্টে হার অন্তর আত্মা কাঁপিয়ে দেয় সবার। ‘এভাবেও ব্যাটিংয়ে করা যায়!’ অবশেষে ঢাকা টেস্টে প্রথম  ইনিংসে ৫২২ রান ৭ উইকেট হারিয়ে। মুশফিকুর রহীমের ডাবলের সঙ্গে মুমিনুল হক সৌরভের ১৬১ রান যেন ব্যাটিং প্রাণ ফেরায়। গতকাল দ্বিতীয় ইনিংসেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরি। সঙ্গে অভিষিক্ত মোহাম্মদ মিঠুনের ফিফটি। ২২৪ রান ৬ উইকেট হারিয়ে ফের ইনিংস ঘোষণা। সব মিলিয়ে ২ ইনিংসে ৭৪৪ রান। সেই সঙ্গে তৃতীয় ইনিংসে ৪৪২ রানের লিড, যা টাইগারদের টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বলতে গেলে বেদনার কালো বর্ণ ধারণ করা ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত পড়েছে রংতুলির আঁচড়। ম্যাচের চতুর্থ ইনিংস ৪শ’ রান টপকে জয়ের নজির হাতে গোনা। শেষ বিকালে জবাব দিতে নেমে সেই অসাধ্যকে সাধনের চেষ্টাও চালান জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার। দুজনের জুটিতে শুরুটা ভালো ছিল জিম্বাবুয়ের। কিন্তু  শেষ পর্যন্ত দুজনই ফিরে যান। জিম্বাবুয়ের আজ শেষ দিন জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৭১ রান। হাতে অবশিষ্ট আছে ৮ উইকেট। আর এই বাঁধার দেয়াল ভাঙতে পারলেই টাইগার ক্রিকেটে ‘রং’ ফেরাবে জয়।
জয় কঠিন জেনেও অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ব্রায়ান চারিকে নিয়ে তেড়ে-ফুঁড়ে আক্রমণ চালান। দুজনকেই একবার করে জীবন দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এদিনও অভাগা অভিষিক্ত পেসার খালেদ আহমেদ। এই নিয়ে চারটি উইকেট পাওয়া হলো না তার ক্যাচ ছাড়ার মহড়াতে। তবে হাল ছাড়েন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ২৫ রানে তিনি মিরাজের শিকার। আর ৪৩ রান করা চারিকে ফিরিয়ে আরো রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তাইজুল।
গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে চতুর্থ দিনের সকাল ছিল ভীষণ ফুরফুরে। তৃতীয় দিন জিম্বাবুয়েকে গুটিয়ে দিয়েছিল ৩০৪ রানে। সেই সুবাদে ২১৮ রানের লিড টাইগারদের দিচ্ছিল টেস্ট জয়ের পূর্বাভাস। জিম্বাবুয়ে টাইগারদের প্রথম ইনিংস তাড়া করে ফলোঅনও এড়াতে পারেনি মাত্র ১৯ রানের জন্য। তাই ঢাকা টেস্টের লাগাম ছিল টাইগারদের হাতেই। ফলোঅনে নামবে নাকি জিম্বাবুয়েকে ব্যাট করতে পাঠাবে? শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নেয়নি অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মিরপুরের উইকেট বেশ রহস্যময়। অনুমান করাই কঠিন যে, কখন কী হবে! ভয়  ছিল  ২শ’  বেশি রানে পিছিয়ে থাকা মাসাকাদজার দল যদি দ্বিতীয় ইনিংস ঘুড়ে দাঁড়ায়। উল্টো লিড নিয়ে শেষ ইনিংসে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়! সেই সঙ্গে সুযোগ ছিল ব্যাটিং অনুশীলনটাও সেরে নেয়ার। এই ম্যাচ শেষ হতেই সপ্তাহখানেক পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। কিন্তু সকালের শুরুটা হলো ভীষণ হতাশার। মাত্র ২৫ রানেই হারায় চার উইকেট। দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও লিটন কুমার দাসের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি। তবে ভয় ধরিয়ে দেয় প্রথম ইনিংসে দুই সেঞ্চুরিয়ারের বিদায়। মুমিনুল হক সৌরভ ১ ও ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো মুশফিকুর রহীম ফিরেন ৭ রানে।
চার টপঅর্ডারের বিদায়ে যখন নড়বড়ে বাংলাদেশ দল। তখন জিম্বাবুয়েকে ফলোঅনে না পাঠানোর সমালোচনাও শুরু কয়ে গেছে। কিন্তু অধিনায়ক প্রমাণ করেন যে ভুল ছিল তাদের সিদ্ধান্ত। প্রথম ইনিংসে অভিক্ত মিঠুন ফিরেছিলেন ০ রানে। আর মাহমুদুল্লাহ লড়াই করছিলেন নিজে ফর্মে ফেরার। এই দিন যেন দুজন উজ্জ্বলে উঠলেন এক সঙ্গে। এই দুইয়ের মধ্যে ১১৮ রানের জুটি দলকে উদ্ধার করে বিপর্যয় থেকে। মিথুন ফেরেন ১১০ বলে ৬৭ রান করে। সিকান্দার রাজার বলে চাকাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৪টি চার ও ১টি ছয় আছে তার ইনিংসে। মিথুনের বিদায়ের পর উইকেটে এসে আরিফুল হক অবশ্য খুব বেশি সময় টিকে থাকতে পারেননি। ৫ রান করে শন উইলিয়ামসের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। এরপর মেহেদী মিরাজ ৩৪ বলে ২৭ করে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদ উল্লাহর সঙ্গে। ঢাকা টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখছেন মাহমুদ উল্লাহ। ২০১০-এ টস্টে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন সেই নিউজিল্যান্ডে। এবার প্রথমবারের মতো নিজের দেশে হাকালেন সেঞ্চরি। মাহমুদ উল্লাহর ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি ইনিংসটি ১২২ বলে, ৪টা চার ও দুটি ছয়ে সাজানো। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১০১ রানে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status