এক্সক্লুসিভ

ঢাকা-১০

হ্যাটট্রিক না পুনরুদ্ধার

দীন ইসলাম

১৪ নভেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:৪৪ পূর্বাহ্ন

অনেক আগেই ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে অভিজাত এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১০ আসনে। এ সংসদীয় আসনের প্রতিটি অলিগলি বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। বিরাজ করছে একতরফা নির্বাচনী আমেজ। তাপসের বাইরে এ আসনে আওয়ামী লীগের অন্য কোনো প্রার্থীর তৎপরতা চোখে পড়েনি। তাই এ আসনের প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভার। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসিম-এর কিছু পোস্টার দেখা গেছে। তার প্রার্থী হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ফেরারি আসামি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন তিনি। বিএনপির আরেক প্রার্থী ধানমণ্ডি থানা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা মহানগর বিএনপি (দক্ষিণ)-এর যুগ্ম সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন। দলকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ সংসদীয় আসনে হ্যাটট্রিক জয় চায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে এ আসনটিতে জয় পায় বিএনপি। এর বাইরে সবক’টি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জিতেছে। রাজধানীর ধানমণ্ডি, কলাবাগান, ঝিগাতলা, হাজারীবাগ ও নিউমার্কেট এলাকার সংসদীয় সীমানা। নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমদ। তাকে পরাজিত করে নৌকা নিয়ে বিজয়ী হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ছেলে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। দশম জাতীয় নির্বাচনেও দ্বিতীয় মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হন শেখ পরিবারের অন্যতম এ উত্তরাধিকার। এ আসনের প্রার্থী পর্যালোচনায় দেখা যায়, পঞ্চম থেকে নবম পাঁচটি জাতীয় ও একটি উপনির্বাচন মিলিয়ে বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তন করেছে পাঁচবার। অন্যদিকে অনেকটাই স্থিতিশীলতা রক্ষা করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল মঙ্গলবার সংসদীয় আসনটির এসব এলাকা ঘুরে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ থেকে এবার একক প্রার্থী হচ্ছেন শেখ ফজলুল হক মণির পুত্র শেখ ফজলে নূর তাপস। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে রাজি নন কেউ। এ ছাড়া তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরও ব্যাপক সমর্থন রয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিবারের এই সদস্যের প্রতি। গত দশ বছর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়নে তার প্রভাব থাকায় এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের থানা পর্যায়ের নেতারা। হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক হামিদ সাজু বলেন, আমাদের এমপি ধানমণ্ডি এলাকার প্রতিটি নাগরিকের ভালো-মন্দ দেখেছেন। তাই এবারও বিপুল ভোটে আমাদের প্রার্থী বিজয়ী হবেন। বিএনপির প্রার্থী ধানমণ্ডি থানা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা মহানগর বিএনপি (দক্ষিণ)-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবি বলেন, গত দশ বছরে ধানমণ্ডি এলাকায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়েছে বলে আমি মনে করি না। অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হলে জনগণ আবারো বিএনপিকে বিজয়ী করবেন। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বাইরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিনের তৎপরতাও কিছুটা চোখে পড়ছে। তবে তা উল্লেখ করার মতো নয়। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হেলাল উদ্দিন বলেন, মহাজোটের স্বার্থে দুইবার আসনটি আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এবারও প্রার্থীর ব্যাপারে চেয়ারম্যানের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। গতকাল ঢাকা-১০ আসন সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় ফজলে নূর তাপসের সমর্থনে টাঙানো ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। প্রচারণার দিক থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একধাপ এগিয়ে আছেন। পাশাপাশি ইয়াং ইমেজ কাজে লাগিয়ে তরুণ ভোটারদের মন দখল করে নিয়েছেন তিনি। ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, আওয়ামী লীগসহ দলের অঙ্গ সংগঠনের সবার ফজলে নূর তাপসের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। বিগত সময়ের কাজ, একাগ্রতা আর দূরদর্শিতার কারণে নৌকার প্রার্থী তাপসকে জনগণ নির্বাচিত করবে বলে মনে করেন তিনি। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, সাধারণ মানুষেরও অকুণ্ঠ সমর্থন আছে তার প্রতি। ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঢাকা-১০ আসনে ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে আছেন দলটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক (বর্তমানে লন্ডনে অবস্থানরত) ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম। ঝিগাতলা, পশ্চিম ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ এলাকার বেশির ভাগ বাসিন্দা নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের হওয়ায় আঞ্চলিক সমীকরণ কাজে লাগাতে চায় বিএনপি। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নাসির উদ্দিন অসীমের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাপুর উপজেলায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status