দেশ বিদেশ

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত বেড়ে ২৫০০ কোটি টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

১২ নভেম্বর ২০১৮, সোমবার, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

দেশব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এজেন্ট ব্যাংকিং। এতে দ্রুত বাড়ছে এর গ্রাহক ও এজেন্ট সংখ্যা। ফলে গত একবছরের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ২০ লাখ ২৯ হাজার অ্যাকাউন্ট বা হিসাবে গ্রাহকের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্কিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৯০২ জন। এর মধ্যে গ্রামে ৩ হাজার ৫৫১ জন ও শহরে ৩৫১ জন। গ্রামে ও শহরে আউটলেটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৯১টিতে। এসব আউটলেটের মাধ্যমে খোলা হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ২৮ হাজার ৮৬৪টি। এর মধ্যে গ্রামে খোলা হয়েছে ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৭১১টি এবং শহরে খোলা হয়েছে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৬৫টি হিসাব। হিসাবধারীদের মধ্যে পুরুষ রয়েছেন ১৩ লাখ ১৪ হাজার। নারীদের ৬ লাখ ৯৭ হাজার এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ১৭ হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব হিসাবের মাধ্যমে সংগ্রহ করা আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরে ছিল ৯২২ কোটি টাকা। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সবার মাঝে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা হয়। কম খরচে এজেন্ট খোলা যায়। অন্যদিকে, গ্রাহক সহজেই এতে হিসাব খোলে আমানত রাখতে পারে। ঋণও নিতে পারে। বিদ্যুৎ বিলসহ অন্য ছোট আার্থিক সুবিধাও নিতে পারে। তাই গ্রাহক দূরদূরান্তের ব্যাংকে না গিয়ে কাছাকাছি থাকা এজেন্টেই ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারে। তাই দ্রুত এই পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ব্যাংকিং সেবা বঞ্চিতদের সেবা দিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পর এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারির পরের বছর ব্যাংক এশিয়া প্রথমে এ সেবা চালু করে।

এজেন্ট পয়েন্ট থেকে আমানত সংগ্রহ, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ, সুবিধাভোগীর কাছে রেমিট্যান্সের অর্থ পৌঁছে দেয়া, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় ভাতাপ্রাপ্তদের অর্থ প্রদান, অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স জানা, অ্যাকাউন্ট ফরম সংগ্রহ, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের আবেদন ফরম এবং চেক বই সংগ্রহ করতে পারেন গ্রাহকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পল্লী অঞ্চলের ১৭ লাখ ৬১ হাজার ৭১১টি হিসাবের মাধ্যমে মোট ২ হাজার ১৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা আমানত সংগ্রহ হয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শহরাঞ্চলের ছিন্নমূল ও তুলনামূলক কম আয়ের মানুষ জমা করেছে ৫০৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। তবে, আমানত সংগ্রহের পাশাপাশি ঋণ বিতরণেও ভূমিকা রাখছে এজেন্ট ব্যাংকিং।

ব্যাংকাররা জানায়, যারা আর্থিকভাবে তুলনামূলক সক্ষম, তারা এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করছে। আমানত সংগ্রহ করার পাশাপাশি তারা ঋণও গ্রহণ করছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ১৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ পর্যন্ত ২০টি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমতি নিয়েছে। কার্যক্রম শুরু করেছে ১৭টি বেসরকারি ও ১টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো হলো ডাচ-বাংলা, ব্যাংক এশিয়া, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, দি প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংক। এছাড়া রাষ্ট্রায়াত্ত একমাত্র অগ্রণী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status