শেষের পাতা

বাংলাদেশের নির্বাচনের ওপর নজর রাখছে চীন

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১০ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১:৪২ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর নজর রাখছে চীন। ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসির আওতায় বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এমন বার্তাই দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের পর বাংলাদেশের সরকার প্রধানকে চীন সফরের আমন্ত্রণের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে বেইজিং। দ্বিপক্ষীয় ওই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শহীদুল হক। আর চীনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেনÑদেশটির ভাইস মিনিস্টার কং যুয়াইও। ঢাকা ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য মিলেছে। সূত্র মতে, বৈঠকে নির্বাচনের আগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রথম ব্যাচ পাঠানো নিশ্চিত করা, বিশেষ করে মধ্য নভেম্বরে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটি যেন মিয়ানমার পালন করে তা নিশ্চিত করতে চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। জবাবে চীনের ভাইস মিনিস্টার সংকট উত্তরণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় উদ্যোগ ও চেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। জানান, এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ‘কমিউনিকেশন চ্যানেল’ হিসাবে কাজ করছে চীন। নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই বেইজিং কাজটি করছে বলে দাবি করেন তিনি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের অঙ্গীকার মতে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় তা করতে সু চি সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর অনুরোধ করেন। বৈঠকে চীনের ঋণে গৃহীত বাংলাদেশের মেগা প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন, ঋণের শর্ত শিথিল করণ, সময়মত ঋণের অর্থ ছাড়করা, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূরিকরণে রপ্তানীযোগ্য সব পণ্যের সার্টিফিকেশন অব অরিজিন ম্যানুয়েলি না করে অনলাইনে আপলোড করার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৈঠকটি চলে মধ্যাহ্ন অবধি। তবে রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন পক্ষেই আনুষ্ঠানিক বিবৃতি বা বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়নি। উল্লেখ্য, গত ৭ই নভেম্বর থেকে তাৎপর্যপূর্ণ সফরে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক চীনে রয়েছেন। আগামী ১১ই নভেম্বর পর্যন্ত তিনি দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবেন। চীনের মধ্যস্থতায় প্রতীক্ষিত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এগিয়ে চলছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াং ই’র উপস্থিতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের দপ্তরের মন্ত্রী তিন সোয়ের মধ্যে এ পর্যন্ত দু’দফা আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা এবং অন্তত একটি ব্যাচ পাঠানোর বিষয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সে মতে ঢাকায় গেল সপ্তাহে প্রত্যাবাসন বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মধ্য নভেম্বরে প্রথম ব্যাচ পাঠানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমার কোন তারিখে, কীভাবে বাস্তুচ্যুতদের গ্রহণ করতে চায়- তা এখনও জানায় নি। যদিও প্রস্তাবিত প্রত্যাবাসন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় শুরু থেকেই অব্যাহতভাবে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো স্বপ্রণোদিত বা স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের তাগিদ দিচ্ছে। তড়িঘড়ি করে বাস্তুচ্যুতদের ফের বিপদের মুখে ঠেলে না দেয়ার অনুরোধও করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার রোহিঙ্গাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে প্রত্যাবাসনকে বাংলাদেশের জন্য কোন ইস্যু না বানাতেও বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা। এই যখন অবস্থা তখন সচিবের বেইজিং যাত্রা। সঙ্গত কারণেই এটাকে  গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন পেশাদার কূটনীতিকরা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status