ষোলো আনা
শখের বশে টার্কি পালন
পিয়াস সরকার
৯ নভেম্বর ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ন
মাহবুবুল হাসান সাদেক, একজন শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার বরাটিয়া গ্রামে। অধ্যয়নরত আছেন রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সাদেক একদিন টেলিভিশনে টার্কি পালন নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখেন। এরপর এক বন্ধুর বাসায় খাবার সুযোগ হয় টার্কির মাংস। তখনই শখ জাগে টার্কি পালন করার।
সাদেক প্রথমে ইন্টারনেট ঘেঁটে জানার চেষ্টা করেন টার্কি পালনের পদ্ধতি। এরপর বাজার থেকে কেনেন ৭টি টার্কির বাচ্চা। ১ দিন বয়সের একটি টার্কির মূল্য ৩শ’ টাকা। মোট খরচ হয় ২১শ’ টাকা। প্রথম কয়েকদিন বাচ্চাগুলোকে দেন হালকা দানাদার খাবার। এরপর সপ্তাহখানেক পর থেকে টার্কিগুলো খেতে শুরু করে ঘাস, লতাপাতা। মোটামুটি ৭০ শতাংশ খাবার ছিল প্রাকৃতিক ঘাস, লতাপাতা। এ ছাড়াও দানাদার যেমন ব্রয়লার মুরগির ফিড, চাল, ভুট্টা ভাঙা ইত্যাদিও দিতেন। সাদেক বলেন, ‘দেশি মুরগির সঙ্গে লালনপালন করা যায়। বিশেষ কোনো থাকার স্থান প্রয়োজন পড়ে না। দেশি মুরগির মতোই এগুলো ছেড়ে দেয়া থাকে।’
টার্কির রোগ বালাই নেই বললেই চলে। ঠাণ্ডার সমস্যা ছাড়া অন্য কোনো রোগ দেখা যায় না সাধারণত। ঠাণ্ডাজনিত রোগ দমনে বাচ্চা থাকতে দিতে হয় ভ্যাকসিন। যা অত্যন্ত কমমূল্যে মেলে উপজেলা পশু হাসপাতালে।
সাদেক লেখাপড়ার জন্য টার্কি পালন শুরু করার কয়েকদিনের মাথায় চলে আসেন ঢাকায়। এরপর টার্কিগুলো পালন করা শুরু করেন তার মা। কোনো ঝামেলা ছাড়াই বড় হতে থাকে টার্কিগুলো।
ছয় মাস পার হতে টার্কিগুলোর ওজন হয় প্রায় ৫ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত। সাদেক বলেন, ২১শ’ টাকায় ৭টি বাচ্চা কিনি। যা পরবর্তীতে ১টি টার্কির মূল্য দাঁড়ায় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা’।
সাদেক হিসাব করে বলেন, ‘তার টার্কির পেছনে সর্বমোট খরচ হয় ৫ হাজার টাকার মতো। ৬ মাস পর ৫টি টার্কি বিক্রি করি প্রায় ১০ হাজার টাকায়।’ এখন তার বাড়িতে রয়েছে ২টি টার্কি। ১টি টার্কি প্রতিদিন ১টি করে ডিম দেয়। আর এই ডিম বিক্রি হয় ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা হালি।
সাদেক আরো বলেন, ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি শখের বসে টার্কি পালন করি। বেশ লাভের মুখও দেখেছি। ভবিষ্যতে বড় খামার দেয়ার ইচ্ছা আছে আমার।’