শেষের পাতা

শিক্ষকদের সহযোগিতা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার

২১ অক্টোবর ২০১৮, রবিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

শান্তি ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সম্মেলনে তিনি এ আহবান জানান। আগামী নির্বাচনে জয় লাভ করতে নৌকার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সমর্থনও প্রত্যাশা করেন তিনি। দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন এ সমাবেশের আয়োজন করে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা ধরে রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেয়ার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে এটা দেশবাসী এখন দেখতে পাচ্ছেন। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থায়ন বন্ধ করলেও আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে তা বাস্তবায়ন করছি।

অনেক কষ্ট আমরা সহ্য করেছি, কিন্তু কারো কাছে মাথা নত করি নাই। আমার বাবা কারও কাছে মাথানত করার শিক্ষা দিয়ে যাননি। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য আমরা দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবো। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত দেশে পরিণত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন, সাক্ষরতার প্রায় ৭৩ শতাংশ উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। শিক্ষাকে শুধু গুরুত্ব দেইনি, উচ্চ শিক্ষা যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা পায়, কারিগরি শিক্ষা যেন পায়, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষা যেন পায়, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, এখন বহুমুখী বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি; যাতে করে শিক্ষাটা বিভিন্নভাবে হতে পারে। আমরা ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, মেরিটাইম, টেক্সটাইল, ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, আর্ট কালচার- সব বিষয়ে যাতে মানুষের  শিক্ষা বহুমুখী হয়, কর্মসংস্থান বাড়ে, দেশ-বিদেশেও যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা কাজ করতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেমন তৈরি করছি তেমনি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ও যেন হয় এজন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালযেল মান বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যে নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করেছি। এদিকে আরেকটু আমাদের নজর দেয়া দরকার। সেটাই আমরা চাই।  শিক্ষক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫১টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। যেখানে ৪৮টি পাবলিক আর ১০৩টি প্রাইভেট। আমাদের একটা লক্ষ্য রয়েছে, বড় বড় এলাকা বা জেলায় যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় নেই সেখানে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি।

যেখানে নেই করে দিব। উদ্দেশ্য একটাই ঘরে বসে আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন লেখাপড়া করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা শুধু ঘোষণা দিয়ে বসে নেই। যা করার তা-ই করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি। যার ভিত্তিপ্রস্তর ১৯৭৫ সালের ১৪ই জুলাই বেতবুনিয়ায় জাতির পিতা করে গিয়েছিলেন।  সমগ্র বাংলাদেশে প্রায় ৯০ শতাংশ জেলায় ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়েছি। তাছাড়া ইন্টারনেট সার্ভিস সমগ্র বাংলাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি। সাড়ে ৮ হাজার পোস্ট অফিস সেগুলোও ডিজিটাল সেন্টারে পরিণত করে দিয়েছি। কম্পিটউটার শিক্ষাকে সর্বজনীন করার কারণে সব করতে পারছে। সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন চালু করে দিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ১০২টি হলসহ ৪২৭টি অবকাঠামো, প্রশাসনিক, একাডেমিক, আবাসিক, অডিটরিয়াম, মেডিকেল সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।

এছাড়া ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৬টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ৭৯টি শিক্ষার্থীদের আবাসিক ভবনে ৪৭ হাজার ৯৩ জনের আবাসিক সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। ১ হাজার কোটি টাকা ট্রাস্ট ফান্ডে জমা দিয়েছি। কারিগরি শিক্ষা ও ভোকেশনাল ট্রেইনিংয়ের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে না- এজন্য শুরুতেই যেন কারিগরি শিক্ষা পায় সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, যারা ক্ষমতাটাকে ভোগের বস্তু মনে করে আর ব্যবসার সুযোগ মনে করে তারা কখনো দেশের উন্নয়ন করতে পারে না। এটা হলো বাস্তবতা। নিজের ভাগ্য গড়া এটাই যাদের মূল লক্ষ্য থাকে তারা দেশকে কী দেবে- মানুষকে কী দেবে। আমরা তো নিজের কথা কখনো চিন্তা করতে শিখিনি। আমরা যা শিখেছি বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আমরা শিখেছি কীভাবে ত্যাগ স্বীকার করা যায়। কোনো মহৎ অর্জনের জন্য মহৎ ত্যাগের প্রয়োজন। এটাই তিনি শিখিয়েছেন, সেভাবেই আমরা শিখেছি। সেভাবেই আমরা দেশের কাজ করছি।

ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে সমাবেশে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বক্তব্য রাখেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status