বাংলারজমিন

তাড়াশে একই পরিবারে ৩ ভাই বোন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী

এম এ মাজিদ, চলনবিল (সিরাজগঞ্জ) থেকে

২০ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার, ৭:৫৩ পূর্বাহ্ন

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ চলনবিলে একই পরিবারে তিন ভাই-বোন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বিপাকে হতভাগা ক্ষুদে মেকানিক বাবা। সুস্থ হয়ে জন্ম নিলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অজানা এক রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টি হারিয়েছে এক হতদরিদ্র পরিবারের ওই তিন সন্তান। কি এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পর পর তিন ভাই-বোন দৃষ্টি হারিয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে তা জানার আগ্রহ সবার মধ্যে থাকলেও আর্থিক অসচ্ছলতায় তা জানার সুযোগ না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে নিঃস্ব ওই পরিবারটি। সুস্থ হয়ে জন্ম নিলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞাত রোগে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে ক্ষুদে মেকানিক আকবর হোসেনের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। এতে বাকি পরিবারের সুস্থ একমাত্র ছোট ছেলেটি নিয়েও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে হতভাগা ওই পরিবারটি।
 সরজমিনে জানা গেছে, উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের  মালশিন গ্রামের ক্ষুদে মেকানিক আকবর আলী (৬০) তিন দশক আগে বিয়ে করেন একই গ্রামের মর্জিনা খাতুন (৫৫)কে। বিয়ের পর তাদের ঘর আলো করে একে একে জন্ম নেয় আফরোজা খাতুন (২৮) মনসুর রহমান টুটুল (২৬) মাহফুজা খাতুন (১৯) এবং ওমর ফারুক (১৭)। জন্মের পর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে এক ছেলে ও দুই মেয়ে। দৃষ্টি হারানো বড় মেয়ে আফরোজা খাতুন ও ছেলে মনসুর রহমান টুটুলকে কয়েক দফা চিকিৎসা  করানো হলেও  দৃষ্টি ফেরানো যায়নি তাদের। সমাজের আর অন্য মেয়েদের  মতো স্বামীর সংসার করার কথা থাকলেও দৃষ্টি হারানোর অপরাধে স্বামীর সংসার থেকে বিতাড়িত হয়ে এক সন্তানসহ বাবার ঘরের বোঝা হয়ে বসে আছেন আফরোজা খাতুন। ছেলে টুটুল দৃষ্টি হারিয়ে কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় স্ত্রী ও এক সন্তানসহ বাবার সংসারে অভাবের বোঝাটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। মেয়ে মাহফুজা খাতুন আলিম শ্রেণিতে পড়ালেখা করলেও দৃষ্টি না থাকায় পড়ালেখা বন্ধ করতে বাধ্য। ছোট ছেলে ওমর ফারুক বাবার হাতুড়ে মেকানিকের কাজে কিছুটা সহযোগিতা করলেও তার দৃষ্টি হারানোর আতঙ্কে  রয়েছে অসহায়  পরিবারটি। সেই সঙ্গে ৮০ বছর বয়সের বৃদ্ধা মাকেও টানতে হচ্ছে তাকে।
 হতভাগ্য পিতা আকবর আলী জানান, নুন আনতে যেখানে পানতা ফুরায় সেখানে ১০ সদস্যের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে ছেলে-মেয়েদের চিকিৎসা করানো আমার সাধ্যের মধ্যে নেই। এত বড় পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য আমার হাতুড়ে মেকানিকের কাজই একমাত্র ভরসা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কি রোগে আক্রান্ত হয়ে ছেলে-মেয়েরা এমনভাবে দৃষ্টি হারাচ্ছে তা জানতেও পারলাম না। সম্পদ বলতে আমার সরকারি ২ শতক জমির উপর কুঁড়ে ঘরে বসবাস। আমার অবর্তমানে অভাবের এ বিশাল পরিবার কীভাবে চলবে একথা বলতেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। অজানা রোগ সম্পর্কে জানা ও সুচিকিৎসার জন্য তিনি সরকার ও দেশের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন, প্রয়োজনে যোগাযোগ ০১৯৪৫১৭১৯৬১/ ০১৭২৮০০৪২১৭। এ বিষয়ে  তাড়াশ চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, তারা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কি কারণে দৃষ্টি হারাচ্ছেন তা পরীক্ষার পর জানা যাবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status