বাংলারজমিন
নবীগঞ্জে জলাবদ্ধতায় পাঠদান ব্যাহত
এম এ বাছিত, নবীগঞ্জ থেকে
১৯ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
নবীগঞ্জে শহর এলাকায় বিরল এক ঘটনা। জলাবদ্ধতায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। সচেতন নাগরিক বেষ্টিত জনপদের ভোগান্তি নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। আধুনিক জীবনযাত্রায় কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। পানি নিষ্কাশনের দৈন্যদশা, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দুর্ভোগ কবলিত জনপদে নীরব ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ যেন আদিমযুগের ইতিহাস। আলোচিত এলাকাটি হচ্ছে- নবীগঞ্জ শহরের পৌর এলাকার নহরপুর গ্রাম। বছরের বারো মাস জলাবদ্ধতা নিয়েই পরিচালিত হচ্ছে নহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। বর্ষা মৌসুমে বেহালদশা চরমে উঠে। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বৈরী পরিবেশ চলে আসছে। এর স্থায়ী কোনো সমাধান হচ্ছে না। আধিপত্য আর অহমিকায় কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। অল্প বৃষ্টিতেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী। বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। শহর জনপদে এ যেন এক বিরল ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় অবস্থিত নহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায়। পানি জমে পুকুরে পরিণত হয়। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীসহ নহরপুর গ্রামের প্রায় ২৫-৩০টি পরিবারের লোকজন। কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। স্থানীয়রা জানান, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে করে সাধারণ মানুষ ছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মালিকানাধীন রাস্তায় সভ্যতা আজ বিলীন। আকবর হোসেন নামে স্থানীয় এক ভুক্তভোগী বলেন, অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে চায় না। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি পুকুরে পরিণত হয়। শিক্ষার্থী এনামুল আহমেদ জানায়, বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ে আসতে আমাদের সমস্যায় হয়। রাস্তায় অনেক পানি থাকে। তাই স্কুলে আইতে ভালো লাগে না। বর্ষা মৌসমের পাশাপাশি অল্প বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ে যাতায়াত কঠিন হয়ে পড়ে। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠে। এ নিয়ে জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, প্রশাসন কারো তরফ থেকে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে নহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিপ্রা নাথ বলেন, ডিজিটাল যুগে শহর এলাকায় জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চলছে। বছরের বারো মাস শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থানীয়রা একটু সহনশীল হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে সচেতন মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। এসএমসির সভাপতি আবদুস সামাদ (চুনু মিয়া) বলেন, যাতায়াতের রাস্তা নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও দুর্ভোগে রয়েছেন। রাস্তার পাশের কলেবর বৃদ্ধি এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় অধিবাসীদের ঐকমত্য একান্ত প্রয়োজন। রাস্তার পাশে মালিকানাধীন ভূমি থাকায় সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ভূমি মালিকরা ছাড় দিতে নারাজ। আবার টাকা দিয়ে বিক্রি করতেও অনাস্থা পোষণ করেন। জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও পৌর কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।