এক্সক্লুসিভ
মৌলভীবাজারে বাইসাইকেলে বরযাত্রা
ইমাদ উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে
১৮ অক্টোবর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:১৮ পূর্বাহ্ন
চমৎকার চোখ ধাঁধানো সাজসজ্জা। সাইকেল আর চালকদের। শহরে মধ্যে দিয়ে হঠাৎ এমন র্যালি দেখে তা উপভোগ করতে ভিড় বাড়ে উৎসুক জনতার। পথচারী ও দোকানিরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তা প্রত্যক্ষ করেন। একই সাজে প্রায় অর্ধশতাধিক বাইসাইকেল ও চালক থাকায় দৃষ্টি কাড়ে সবার। এমন দৃশ্য দেখে কৌতূহল বাড়ে দর্শনার্থীদের। কিসের জন্য এই দৃষ্টিনন্দন র্যালি। কাদের উদ্যোগে হয়েছে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন। ইত্যাদি নানা প্রশ্ন আর কৌতূহল। অনেকেরই ধারণা ছিল হয়ত কোন কোম্পানি বা সংস্থার র্যালি। কিন্তু না মৌলভীবাজার শহরের কুসুমভাগ চৌমোহনায় যানজটে আটকা পড়লে জানা যায় এই র্যালির মূল্য রহস্য। ওই র্যালি থেকেই বলা হলো আমরা বর নিয়ে কনে আনতে যাচ্ছি। হাসি মুখে বরযাত্রীরা এমন তথ্যদিয়ে সবার দোয়া চান। বিয়ের জন্য বাইসাইকেল র্যালি এমনটি শোনে রসিক দর্শনার্থীরা তাদের অভিনন্দন ও শোভকামনা জানান। আর রসিকতার চলে ওই র্যালির নাম দেন বিবাহ র্যালি। ওদের শোভকামনা নিয়ে বরসহ যাত্রীরা র্যালির করে একসাথে হাবীবী হাবীবী গানসহ নানা গান ও স্লোগানে বর নিয়ে এগিয়ে চলে। বরের সাথে যারা বাইসাইকেল নিয়ে যাত্রী হয়েছিলেন তাদের পোশাকও (পাঞ্জাবী, পাজামা, পাগড়ি আর ফুলের মালা) ছিল বরের মতো। তবে বরের সাইকেলের চাকা ছিল অন্য সাইকেল থেকে একটু বড়। অবশ্য র্যালির পিছনের সারিতে বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ছিল সাজানো গোছানে কয়েকটি হাইয়েছ (মিনি মাইক্রো) গাড়ি। এমন ব্যতিক্রমী আয়োজনকে বিবাহ র্যালি নাম দিয়ে শহরের ব্যবসায়ীরা দিনভর নানা মুখরোচক আর রসিক কথাবার্তা মুখে মুখে ছিল সবার। গতকাল দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের সাদিয়া কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হল এমন চোখ ধাঁধানো বর ও যাত্রীদের বাই সাইকেল র্যালির বিবাহ অনুষ্ঠান। জানা যায় মৌলভীবাজার পৌর শহরের বড়হাটের মরহুম আশরাফ আলী ও রুবেনা সুলতানা দম্পতির ২য় সন্তান ও মৌলভীবাজার শহরের সাদী মোবারক ইভেন্টম্যানেজমেন্ট এর স্বত্বাধিকারী আহমদ আলী ছায়েম এর সাথে সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের মোজাফরাবাদ গ্রামের সজিব মিয়া ও হাজেরা বেগম দম্পতির ২য় কন্যা সোনিয়া সুলতানা রুমার সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বর আহমদ আলী ছায়েম মুঠোফোনে মানবজমিনকে জানান এমন আয়োজনের ইচ্ছে ছিল। মৌলভীবাজার সাইকেলিং কমিউনিটির আমার প্রিয়জনরা তা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছেন। হেসে বলেন তবে পুরো ইচ্ছা পূরণ হয়নি কারণ নতুন বউকে সাইকেলে করে নিয়ে যেতে পারিনি। তাৎক্ষণিকভাবে অনুষ্ঠান হওয়ায় রেইসার বাইসাইকেলে সেই ব্যবস্থা করতে পারিনি। তার প্রত্যাশা সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে যুব ও তরুণ সমাজ ভালো কাজে এগিয়ে যাবে। মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটির এডমিন ইমন আহমেদ ও রাফসান রাজা জাওয়াদ জানান, বর আমাদের সাইক্লিং কমিউনিটির এডমিন। আমাদের শ্লোগানই হচ্ছে “সু-স্বাস্থ্যের জন্য সাইক্লিং” পরিবেশ বান্ধব সাইক্লিংয়ে আমরা সবসমই তরুণ ও যুব সমাজকে উৎসাহিত করে থাকি। আমাদের লক্ষ্য তরুণ ও যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রেখে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করে কর্মচঞ্চল রাখতে। সাইক্লিংয়ের মাধ্যমেই আমাদের তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে ভালো কাজে নিয়োজিত করতে চাই।