দেশ বিদেশ
সিলেটে ভুয়া বাদী সাজানোর ঘটনায় মামলা, ২ আইনজীবীকে শোকজ
স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১৬ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১০:১১ পূর্বাহ্ন
সিলেটের আদালতে ভুয়া বাদী সাজিয়ে আদিবাসীদের জায়গা নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গতকাল বিকালে সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে এই জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক আইনজীবীকে শোকজ ও ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাছাড়া এই জালিয়াতির সঙ্গে সিলেটের একাধিক আইনজীবী যুক্ত থাকারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বিচারক সাজেদুল করিম জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিবাদী পক্ষের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান ও অ্যাডভোকেট এনামুল করিম আজাদকে শোকজ করেন এবং বিচারক নিজে বাদী হয়ে ভুয়া বাদী ছয়জন ও এই মামলার দুই বিবাদীর বিরুদ্ধে হাকিম আদালতে প্রতারণা মামলা করেন। এই বিবাদীদের মধ্যেও একজন আইনজীবী রয়েছেন। জানা যায়, সিলেটের শাহপরানের বুড়িবস্তি এলাকার বাসিন্দা একটি চা শ্রমিক পরিবারের এক একর জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বালুচর এলাকার ওই জমি রক্ষায় ২০১৪ সালে আদালতে মামলা করেন পরান মুড়া, কর্মী মুড়া, পদ্মাবতী মুড়া, রেবতি মুড়া ও সারদী মুড়া। স্থানীয় আবুল বশরের ছেলে অ্যাডভোকেট এনামুল হক ও সাইফুল হককে বিবাদী করে এই মামলা করেন তারা। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান শিপু জানান, এই মামলার বাদী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী বেদানন্দ ভট্টাচার্য দেশের বাইরে রয়েছেন। এই সুযোগে মামলার গত তারিখে খাদিম চা বাগানের ছয়জন শ্রমিককে এই মামলার বাদী সাজিয়ে আদালতে একটি জাল আপোষনামা পেশ করেন বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা। এই আপোষনামায় উল্লেখ করা হয়, বিরোধ থাকা জমি নিয়ে বাদী ও বিবাদী দুইপক্ষই নিজেদের মধ্যে আপোষ করে নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, জালিয়াতির বিষয়টি নজরে আসার পর আজ সোমবার (গতকাল) আমরা আদালতে মূল বাদীদের হাজির করে জালিয়াতির বিষয়ে একটি আবেদন করি। এ সময় ভুয়া বাদী সাজা ছয়জনও আদালতে হাজির হন। আদালতে তারা স্বীকার করেন, একটি গোষ্ঠীর প্ররোচনায় অর্থের বিনিময়ে তারা এই মামলার বাদীপক্ষ সাজেন। এ সময় মামলার বাদী দাবি করা মিন্টু মুড়া, সুনীল মুড়া, রন্টু মুড়া, প্রশান্তি মুড়া, সবিতা বাগচি ও যমুনা মাহালিকে আটকের নির্দেশ দেন আদালত। এই ছয়জনসহ মামলার বিবাদী অ্যাডভোকেট এনামুল হক ও সাইফুল হককে আসামি করে নিজে বাদী হয়ে হাকিম আদালতে প্রতারণা মামলা করার কথাও জানান বিচারক সাজেদুল করিম। এ ছাড়া প্রতারণা ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিবাদী পক্ষের দুই আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট এনামুল করিম আজাদকে মৌখিকভাবে শোকজ করেন আদালত।
জানা যায়, দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ উঠার পর তাদের রক্ষায় ওই এজলাসে হাজির হন অনেক আইনজীবী। তারা অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার জন্য আদালতে সুপারিশ করেন। এ অবস্থায় আদালত অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে কেনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে মৌখিকভাবে শোকজ করেন। আইজনীবীদের বিরুদ্ধে এই প্রতারণা ও জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লালা বলেন, কেউ আইনজীবীদের কাছে এসে বাদী বা বিবাদী পক্ষ দাবি করলে আইনজীবীদের অনেকক্ষেত্রে তা যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ থাকে না। তারপরও আইনজীবীদের কেউ এ কাজে জড়িত কী না তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।
জানা যায়, দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ উঠার পর তাদের রক্ষায় ওই এজলাসে হাজির হন অনেক আইনজীবী। তারা অভিযুক্ত আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার জন্য আদালতে সুপারিশ করেন। এ অবস্থায় আদালত অভিযুক্ত দু’জনের বিরুদ্ধে কেনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে মৌখিকভাবে শোকজ করেন। আইজনীবীদের বিরুদ্ধে এই প্রতারণা ও জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লালা বলেন, কেউ আইনজীবীদের কাছে এসে বাদী বা বিবাদী পক্ষ দাবি করলে আইনজীবীদের অনেকক্ষেত্রে তা যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ থাকে না। তারপরও আইনজীবীদের কেউ এ কাজে জড়িত কী না তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন।