অনলাইন

বাকস্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগে কমিশন সভা বর্জন মাহবুব তালুকদারের

সিরাজুস সালেকিন

১৫ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার, ১২:০১ অপরাহ্ন

ছবি- সিরাজুস সালেকিন

বাকস্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগে নির্বাচন নির্বাচন কমিশনের সভা বর্জন করেছেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। আজ কমিশন সভা শুরুর পাঁচ মিনিট পর আনঅফিসিয়াল (ইউও) নোট দিয়ে বের হয়ে আসেন তিনি। বের হওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের সভা বর্জনের বিষয় নিশ্চিত করলেও বিস্তারিত কিছু বলেননি। সকাল ১১টা ১০ মিনিটে কমিশনের ৩৬ তম সভা শুরু হয়। সভায় বাকস্বাধীনতা খর্ব করার অভিযোগ তুলে কয়েকটি বিষয়ে নোট দিয়ে সভা থেকে বের হয়ে আসেন মাহবুব তালুকদার। সভা সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, নির্বাচনে নিরপেক্ষতা এবং সরকারের সঙ্গে সংলাপ ইস্যুতে কমিশন সভায় লিখিত প্রস্তাব উত্থাপনের সুযোগ চেয়েছিলেন মাহবুব তালুকদার। গত ৮ই অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে ইউও (আনঅফিসিয়াল) নোটের মাধ্যমে এসব বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব উত্থাপন করতে বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। কিন্তু তিনজন কমিশনার ওই প্রস্তাব উত্থাপন না করার জন্য সিইসিকে পাল্টা অনুরোধ করেন। এর প্রতিবাদে সভা বর্জন করেন মাহবুব তালুকদার।

সভায় উত্থাপেনর জন্য তৈরি করা মাহবুব তালুকদারের প্রস্তাবে বলা হয়, ইসির সংলাপে ২৬টি দল সেনা মোতায়েনের পক্ষে ও ৩ টি দল বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। স্বাধীনতার পর সব নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হয়েছে। তবে তা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে।

ভোটে সেনা মোতায়েন হলেও তারা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে তা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংজ্ঞা থেকে সেনাবাহিনী বাদ দেয়ার পর তাদের কার্যপরিধি কেমন হবে তা নির্ধারিত হওয়া উচিত।
দশম সংসদ নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা রয়েছে। এ নির্বাচনটি একটি দল বর্জনও করেছে। তবে বর্তমান বিরোধী দল সরকারের পাশাপাপাশি মন্ত্রিসভায় অংশ নিয়েছে। এ অবস্থায় কীভাবে একটি দল সরকারে ও বিরোধীদলে থাকে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে কঠিন সমস্যারও সমাধান হতে পারে।

প্রস্তাবে আরো বলা হয়, ভোটে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি নির্বাচনের পূর্বশর্ত। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় ক্ষমতাসীন দল যে সুবিধা ভোগ করে বিরোধীদল তা ভোগ করতে পারে না। শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের কমিটি ধরে ধরে মামলা দায়ের ও গায়েবি মামলা দায়েরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় তফসিল ঘোষণার আগে ইসি সম আচরণ নিশ্চিতে বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। লিখিত ওই প্রস্তাবে বলা হয়, নির্বাচনকালে সার্বিকভাবে জনপ্রশসান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে ন্যস্ত করতে বলেছেন অনেকে। এ দু’টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ইসির কাছে অর্পিত হলে জন আস্থা বেড়ে যাবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে তা সহায়ক হবে।

এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নযোগ্য মনে হলে তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের সঙ্গে তা নিয়ে ইসির সংলাপ করা উচিত। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ ও অন্যান্য কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন। দুপুরে বিরতির পর দ্বিতীয় দফা বৈঠক শুরু হবে।

এর আগে গত কমিশন সভাতেও ইভিএম-এর ব্যাপারে আপত্তি তুলে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন মাহবুব তালুকদার। ওই সভা থেকেও তিনি ওয়াক আউট করেছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status