বাংলারজমিন

গোয়াইনঘাটে অবৈধ নিয়োগ: ২ শিক্ষকের বহিষ্কার দাবি

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি

১৫ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন

গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন ইউনিয়নে ভুল তথ্য সরবরাহ করে ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্তি করে ভোটার, স্থায়ী নাগরিক সেজে গোয়াইনঘাটের কোটায় অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া দুই সহকারী শিক্ষক রাজমীন নাহার রুবা ও মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। ভুয়া নাগরিক সনদে চাকরি নেয়া এই দুই নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষককে অবিলম্বে বহিষ্কার না করা হলে দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে গোয়াইনঘাট উন্নয়ন সংসদসহ এই ঘটনায় প্রতিবাদমুখর সর্বস্তরের সচেতন মানুষ। বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ সমন্বয় সভায়ও সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া এসব প্রতারকদের চাকরি থেকে বহিষ্কার ও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। উপজেলার ৬নং ফতেহপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী উপজেলা পরিষদের রেজুলেশনে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানালে একজন জনপ্রতিনিধি ছাড়া সিংহভাগ জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। ৭ই অক্টোবর আন্দোলনকারীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে, এসব অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে দাবি জানালে তিনি তা গ্রহণ করে দ্রুত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সর্বশেষ গতকাল দুপুর ১২টায় সিলেট সার্কিট হাউসে গোয়াইনঘাট উন্নয়ন সংসদের পক্ষ থেকে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি এম নিজাম উদ্দিন, উন্নয়ন সংসদ নেতা মাহফুজুল কিবরিয়া মাহফুজসহ সংশ্লিষ্ট সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বরাবর অনুরূপ স্মারকলিপি দিয়েছেন। এদিকে জন্মসূত্রে গোয়াইনঘাট উপজেলার নাগরিক না হয়েও অবৈধ যোগসাজশে নাগরিক সনদ সংগ্রহ, নির্বাচন কমিশনকে ভুল তথ্য প্রদান করে স্থায়ী ঠিকানা গোপন রাখা, ভোটার সেজে নিয়োগ পাওয়া দুই শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান ও রাজমীন নাহার রুবার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা কমিটি গঠিত ৩ সদস্যের তৈরি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে উপজেলা শিক্ষা কমিটি গঠিত তদন্ত কমিটি। ৯ই অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি আব্দুল হাকিমের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন তুলে দেন তদন্ত কমিটি প্রধান পশ্চিম জাফলং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস শহিদ। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায় যে, সরজমিনে গিয়ে স্থানীয় সাধারণ জনগণ, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারেন যে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা জন্মসূত্রে গোয়াইনঘাটের কোনো ইউনিয়নের নাগরিক নয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম তদন্ত কমিটির কাছে গোয়াইনঘাট আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া রাজমীন নাহার রুবা পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের নাগরিক নয় এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নিয়েছে মর্মে লিখিতভাবে বিষিয়টি উত্তাপন করেন। এ ছাড়াও পূর্ব জাফলং চৈলাখেল ৮ম খণ্ড গ্রামে মিজানুর রহমান নামে লুনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া অপর সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান জন্মসূত্রে পূর্ব জাফলংয়ের চৈলাখেল ৮ম খণ্ড গ্রামের নাগরিক নয় বলে তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউ/পি সদস্য জিলানী আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম, ব্যবসায়ী হাজী হোসেন মিয়া, সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন প্রমুখ। এ ব্যাপারে কথা হলে উপজেলা শিক্ষা কমিটি গঠিত তদন্ত কমিটি প্রধান পশ্চিম জাফলং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস শহিদ জানান, আমরা সরজমিন গোয়াইনঘাটের কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি, নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যসহ সার্বিক তদন্তে আমরা যে তথ্য পেয়েছি তাতে প্রতিয়মান হয় যে, নিয়োগপ্রাপ্ত এই দুই শিক্ষক প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এখানকার নাগরিক, ভোটার সেজে এখানকার কোটায় চাকরি নিয়েছেন। তারা এখানকার স্থায়ী নাগরিক নন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও সুপারিশ করেছি। গোয়াইনঘাট উন্নয়ন সংসদের সভাপতি অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন কমিটির সভাপতি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামাল উদ্দিন মাস্টার জানান, একটি পরিচ্ছন্ন আধুনিক গোয়াইনঘাট বিনির্মাণে আমরা সমবেত আছি। চাকরির ক্ষেত্রে গোয়াইনঘাটের কোটায় আর যেন বহিরাগতরা না ঢুকতে পারেন সেই লক্ষ্যেই আমাদের এ আন্দোলন। অবৈধ এসব সহকারী শিক্ষকদের অবিলম্বে বহিষ্কার না করলে লাগাতার কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলা হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status