দেশ বিদেশ

সময়ক্ষেপণে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো অসম্ভব হতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার

১৪ অক্টোবর ২০১৮, রবিবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে অধিক সময় লাগলে তাদের পাঠানো অসম্ভব হয়ে যেতে পারে। আবার তাদের নিজের দেশে ফিরিয়ে দিলেই তাদের অধিকার নিশ্চিত হবে তাও বলা যাচ্ছে না। গতকাল হোটেল সোনারগাঁওয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে আলোচনায় এই অভিমত ব্যক্ত করেন জার্মানভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলে’র প্রধান সম্পাদক ইনেস পোল এবং বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। দুইদিনের সফরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে আসার পর অভিজ্ঞতার আলোকে ইনেস পোল বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, অনেক দেশ এই সমস্যার মধ্য দিয়ে পাড়ি দিয়েছে। জার্মানিতে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য অনেকে পাড়ি জমায়। সমস্যা হচ্ছে তখন আমরা তাদের কি হিসাবে দেখবো? আমাদের জনগোষ্ঠী না তাদের পুনর্বাসনে উদ্যোগ নেবো? না তাদের সাহায্য করবো? জার্মানরাও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রায় ১ কোটি জার্মান নাগরিক অন্য দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেছে মিয়ানমার সরকার। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তারা পুনরায় মিয়ানমারে নিজ দেশে ফেরত যেতে চায়। এক প্রশ্নের জবাবে ইনেস পোল বলেন, একটি প্রজন্মকে হারিয়ে দিতে না চাইলে এখনই তাদের যথাযথ শিক্ষাউপকরণ বিতরণের ব্যবস্থা করা উচিত। শুধু শিক্ষা উপকরণই নয়, এর পাশাপাশি তাদের কর্মমুখী শিক্ষার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করা উচিত। তিনি বলেন, বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে তাদের পুনর্বাসনের জন্য বিকল্প পথ খুঁজতে হবে। তারা ২০-৩০ বছর ধরে আতঙ্কে রয়েছে। তারা এদেশে আতঙ্কমুক্ত হয়েছে। তাই তাদের ফেরাতে যত সময় বেশি লাগানো হবে তাদের ফেরার সম্ভাবনা তত কমবে। তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, বাংলাদেশে যেহেতু রিসোর্সের অভাব রয়েছে রোহিঙ্গাদের জন্য বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন ছিল। আমরা গত বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৩৮ শতাংশ বরাদ্দ পেয়েছি। এত অধিক পরিমাণ আশ্রয়কেন্দ্র বানানোর জন্য যা অত্যন্ত অপ্রতুল। তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে একটি সমঝোতা রয়েছে। কিন্তু ১০ মাস গেলেও ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়নি। প্রথম ধাপে ৮ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর কথা ছিল তারও কোনো পদক্ষেপ নেই। সমঝোতাতে উল্লেখ ছিল, দুই বছরে কয়েক ধাপে ফেরত যাবে রোহিঙ্গারা। কিন্তু এই লোকগুলো অধিকার নিশ্চিত না হলে তারা স্বভাবতই যেতে রাজি হবে না। ১৫ বছরের মেয়ে দুই সন্তানের জননী। সেতো চাইবে না বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে নিজের দেশের তুলনায় অধিক সুবিধা পাচ্ছে, তাই অনেকে এ দেশ ছেড়ে যেতে চায় না। শরণার্থী বিষয়ে সংকটের ধরন ও উত্তরণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এই আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডয়েচে ভেলে’র দক্ষিণ এশিয়ার ডিস্ট্রিবিউশন এক্সিউটিভ তোবিয়াস গ্রোটে, ডয়েচে ভেলে’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ও বাংলা ট্রিবিউনের হেড অব নিউজ হারুন উর রশীদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডয়েচে ভেলে’র এশিয়া বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status