খেলা

ক্রিকেটের হ্যাটট্রিক কন্যার গল্প

এস আলম তুহিন, মাগুরা থেকে

১৪ অক্টোবর ২০১৮, রবিবার, ৯:০৯ পূর্বাহ্ন

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশের বল হাতে প্রথম হ্যাটট্রিকের গৌরব মাগুরার মেয়ে ফাহিমা খাতুনের। ফাহিমাদের সাফল্যে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে। এ সাফল্যে দারুণ খুশি ফাহিমা ও তার পরিবার। ক্রিকেট তাদের মেয়েকে দেশ বিদেশে এমন পরিচিতি দেবে এমনটি ভাবেননি তারা। মাগুরা শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় ফাহিমাদের বাড়িতে বসে একান্ত আলাপচারিতায় ফাহিমার ক্রিকেটার হয়ে উঠার পেছনের নানা গল্প জানালেন ফাহিমার বাবা-মা ও ফাহিমা নিজে। ছেলেবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অপরিহার্য অলরাউন্ডার ফাহিমার। তারপরও খেলার নেশা তার লেখাপড়ায় বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতে পারেনি। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অনার্স শেষবর্ষের পরীক্ষার্থী।
ফাহিমা বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার খেলনার সামগ্রী ছিল ব্যাট-বল। অন্য মেয়েরা যেমন পুতুলের বায়না ধরে আমি তা না করে ব্যাট-বল চাইতাম। বাবা পুলিশের চাকরি করতেন তাই ব্যস্ততার কারণে আমার প্রতি এতটা খেয়াল ছিল না তার। স্কুল জীবনে আমি ব্যাডমিন্টনে ভালো করতে থাকলাম তাতে বাড়ির সবাই খুশিই হতো। এরপর যখন পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা শুরু করলাম তখন বাড়ি থেকে খুব উৎসাহ দেয়নি। বরং আমার বড় ভাই এতে বাধা দিত। বাড়ির পাশেই স্টেডিয়াম। জানতে পারলাম ওখানে মেয়েদের জন্য ক্রিকেট কোচিং হবে। যোগ দিলাম সে ক্যাম্পে। প্রথম পর্যায়ে পঞ্চাশজন মেয়ে যোগ দিলেও শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলাম আমি একাই। আমি এখনো মাগুরা স্টেডিয়ামে প্র্যাক্টিস করি ছেলেদের সঙ্গে। আমার কোচ সাদ্দাম হোসেনসহ ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা খুব ভালো। তাদের জন্যই এখনো ধৈর্য নিয়ে খেলে যাচ্ছি। নেদারল্যান্ডসে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে আরব আমিরাতের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক প্রসঙ্গে ফাহিমা বলেন, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করলো আর আমি সে দলের একজন সদস্য এটিতো অবশ্যই গর্ব করার বিষয়। সবচেয়ে ভালো লাগে ভাবতে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় আমি আমার সেরা খেলাটা খেলতে পেরেছি।
ফাহিমার বাবা আলতাফ হোসেন সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগ থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি আর দশজন পিতার মতো আমার চাওয়াও ছিল মেয়ে পড়ালেখা শেষ করে ভালো চাকরি করবে এবং সংসার করবে। ক্রিকেটার হবে এমনটি ভাবিনি। তবে এখন ভালোই লাগে এই ভেবে যে, ও দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনছে। আর পড়াশোনাটাও চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পড়াশোনা করে ভালো চাকরি করলেও দেশের জন্য ফাহিমা যে সুনাম বয়ে এনেছে তা সম্ভব হতো কিনা জানি না। মা ফরিদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছে এটা নিয়ে বাইরে বা ভেতরে অনেকে অনেক কিছু বলেছে। তবে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল ও এমন কিছু করবে যা সবার জন্য সম্মান বয়ে আনবে। ২০১৩’র এপ্রিলে আহমেদাবাদে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক গেল স্পিনার ফাহিমা খাতুনের। ক্যারিয়ারে তিনি ১২ ওয়ানডে ও ৪১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status