অনলাইন

আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের উর্বর জমি: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার, ১:৫৪ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের উর্বর জমি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তাদের বক্তৃতা, আচরণ, দেশ শাসন সর্বত্রই রক্তাক্ত সন্ত্রাসের চিহ্ন দৃশ্যমান। আওয়ামী সন্ত্রাসের ধারা জেনেটিক্যাল। তারা শুধু গুম, খুন আর ক্রসফায়ারের ব্যাপক বিস্তার ঘটাতে আইন আদালতকে গড়ে তুলেছে রাষ্ট্রীয় টেররিজমের হাতিয়ার হিসেবে। আজ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। এসময় তিনি পূজার কারণে পরিবর্তিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
রিজভী জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে সারাদেশে বিএনপির পূর্বঘোষিত কালো পতাকা মিছিল ১৬ই অক্টোবরের পরিবর্তে ২১ শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও মহিলাদলের মানববন্ধন ১৭ই অক্টোবরের পরিবর্তে ২০ই অক্টোবর এবং শ্রমিকদলের মানববন্ধন ১৮ই অক্টোবরের পরিবর্তে ২১ অক্টোবর পালিত হবে।
 
ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ২১শে আগস্ট বোমা হামলা মামলায় বিরোধী দলের প্রতি সরকারের আচরণ নিয়ে উচিৎ-অনুচিতের নানা বিষয় রায়ের পর্যবেক্ষণে তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে কিন্তু বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি দেয়া উচিৎ কিনা সেটা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘তোমরা চুড়ি পরে থাকো, আমাদের ১টা মারলে ওদের ১০ জনকে মারতে হবে’-বিরোধী দলের প্রতি এই বিপজ্জনক হুমকি কি একজন প্রধানমন্ত্রী দিতে পারেন? ওবায়দুল কাদের সাহেবকেও বলতে চায়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য কি ‘বিশ^ শান্তি সম্মেলনের বাণী’? সরকারের হুকুমে প্রতিদিনই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিনা বিচারে মানুষ হত্যার হিড়িক চলছে। এই হিড়িক কি উন্নয়নের নমূণা নাকি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস? এগুলো রায়ের পর্যবেক্ষণে না থাকলেও এর দায় তো বর্তমান সরকারের কাউকে নিতেই হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দর্পী মানসিকতা কেন রায়ের পর্যবেক্ষণে আসেনি?

রিজভী আহমেদ আরো বলেন, সাগর-রুনীসহ ৩৩ জন সাংবাদিককে হত্যার দায় কার? এটা কেন রায়ের পর্যবেক্ষণে আসেনি? বোমা হামলা শুরুই হয়েছে আওয়ামী লীগের আমলে। যশোরে উদীচির অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, রমনা বটমূলে বোমা হামলা, কমিউনিষ্ট পার্টির জনসভায় পল্টনে বোমা হামলাসহ অসংখ্য বোমা হামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের শাসনামলে। তাহলে এগুলোর রায়ের পর্যবেক্ষণে এলো না কেন? এগুলোর জন্য আওয়ামী লীগ কেন দায়ী নয়? তনু, মিতু, রিশা-দিশাসহ অসংখ্য নারী পাশবিক নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে। শুধু টাঙ্গাইল জেলাতেই কলেজ ছাত্রী রুপাসহ চলন্ত বাসে তিন জন নারীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এগুলি দুঃশাসনেরই ফলশ্রুতি। নারী নির্যাতনের এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কেন রায়ের পর্যবেক্ষণে আসেনি। রায়ের পর্যবেক্ষণে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের কথা নাই কেন? বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রুপালী ও পুবালী ব্যাংক, ফার্মার্স ব্যাংক, বেসিক ব্যাংকসহ শেয়ার মার্কেট হরিলুটের কথা রায়ের পর্যবেক্ষণে নেই কেন ? এগুলো নিয়ে জনগণের মনে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছে।

তিনি বলেন, লক্ষীপুরের বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামের হত্যাকারী সেখানকার আওয়ামী পৌর মেয়রের ছেলে বিপ্লব, নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী মন্ত্রীর জামাই, উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন বাবুর হত্যাকারিরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী। প্রকাশ্য দিবালোকে কিশোর শ্রমিক বিশ^জিতের হত্যাকারিরা জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের সশস্ত্র ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। ঔদ্ধ্যতের চরম সীমা অতিক্রম করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এমপি পুত্র রনি রাস্তায় জ্যাম থাকার কারণে সামনের সিএনজিকে গুলি করে দুইজনকে হত্যা করেছে। আবার কয়েকদিন পরপর টেন্ডার দখল ও ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগরাও নিজেরা নিজেদের লোকদের হত্যা করছে, রক্তাক্ত করছে জনপদ। বিশ^বিদ্যালয়গুলো ছাত্রলীগের হাতে রক্তে রঞ্জিত। কেবলমাত্র আধিপত্য বিস্তার নিয়েই ক্যাম্পাসগুলোতে নিজেরা একে অপরকে হত্যা করেছে। গণমাধ্যমে তথ্যানুযায়ী ছাত্রলীগের হাতে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির ভাগাভাগি নিয়ে খুন হয়েছে ২৭ জন।
ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সাংগঠনিক সহ সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সাংবাদিক নেতা কবি আবদুল হাই শিবদার, বিএনপির দপ্তর সহ সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status