অনলাইন

গ্রেনেড হামলার রায়কে গুরুত্ব না দিয়ে জাতীয় ঐক্যের আন্দোলন চলবে: মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার, ১০:৪০ পূর্বাহ্ন

২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দেয়া রায়কে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে জাতীয় ঐক্যের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া রায় বাতিল ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জিয়া পরিষদের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মওদুদ আহমদ বলেন, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের কারণে সরকার মনে করছে আমাদের যে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া করতে যাচ্ছি, এটাকে ব্যহত করা হবে। আমি বলবো, এই রায়কে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করে, উপেক্ষা করে, এই রায়কে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্যের আন্দোলন চলবে। খুব শিগগিরই আমরা এটার একটা রূপরেখা দেবো এবং এই আন্দোলনের একটা কাঠামো ঘোষণা করবো। এরপর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে এই সরকারের পতনের ব্যবস্থা করবো। এই সরকার বাধ্য হবে সংলাপে আসতে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনকে খুশি করছে। তাদের খুশি করার জন্য নানা সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এমনকি যারা অবসরপ্রাপ্ত, পেনশনের টাকা শতভাগ উত্তোলন করে নিয়েছে তাদেরকেও আবার নতুন করে পেনশন দিচ্ছে। এতে যদি কিছু ভোট তারা পায়! এই ভোট পাওয়ার জন্য কওমি মাদ্রাসাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ভোট পাওয়ার জন্য প্রতিদিন তারা প্রকল্প উদ্বোধন করছে। এগুলো সব নির্বাচনী প্রকল্প, দেশের মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য করছে। কিন্তু সরকার জানে না যাদের এতো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তারা কেউ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না।

মওদুদ আহমদ বলেন, ২১শে আগস্টের বোমা হামলার ঘটনায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। আমরা এই ধরনের ঘটনাকে ঘৃণা করি। এ ধরনের ঘটনা আর যেন বাংলাদেশের মাটিতে না ঘটে সেটাই আমরা কামনা করি। তার মানে এই নয় যে, যিনি এই ঘটনায় জড়িত নন সেই তারেক রহমানের নাম জড়িয়ে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়া হবে। তিনি বলেন, এই মামলার সাক্ষী মুফতি হান্নানকে অকথ্য নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। মুফতি হান্নান পরবর্তীতে আদালতে বলেছেÑ আমি তারেক রহমানকে চিনি না, কোনোদিন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। মওদুদ বলেন, প্রথম চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম ছিল না। মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তি বক্তব্যে ছিল না, এফবিআইয়ের রিপোর্টে ছিল না, ইন্টারপোলের রিপোর্টেও ছিল না। তারপরে এই সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরে আবার নতুন করে একটা বিতর্কিত ব্যক্তিকে দিয়ে তদন্ত শুরু করে। অকথ্য অত্যাচার করে এই মুফতি হান্নানের কাছ থেকে জোর করে তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ করিয়েছিল। বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার একটাই পথ আছে এখন, সেটা হলো রাজপথ। রাজপথ ছাড়া খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। এখন আপনারা প্রস্তুতি নেন। সময় এসে গেছে । মাঠে নেমে এই দাবি আদায় করতে হবে।

বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়। এখনো যেতে চায়। দেশে যত আন্দোলন সংগ্রাম বিএনপি করছে সবই নির্বাচনকে ঘিরে। কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে এটা মনে হয় আল্লাহ্ তালাও বিশ্বাস করে না। শয়তানও বিশ্বাস করে না। মানুষের কথা তো বাদই দিলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি ফ্যাসিবাদে কবলিত। ফ্যাসিবাদে গ্রাস করে ফেলেছে বাংলাদেশকে। যে জন্য একাত্তর সালে যুদ্ধ হয়েছিল তার ছিটেফোঁটাও বর্তমানে নেই। এই কথাটা বলাও এখন ভয়ঙ্কর। কারণ এখন ডিজিটাল আইন পাস করা হয়েছে। দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা নাই।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কবির মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কুদ্দুস, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বিদ্যালয়ের অধ্যাপক এসএম হাসান তালুকদার, জিনাফের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status