শিক্ষাঙ্গন

জাবিতে শিফট ভিত্তিক পরীক্ষায় মেধার অবমূল্যায়ন

জাবি প্রতিনিধি

৯ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার, ৫:২৭ পূর্বাহ্ন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় নানা বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ৩০শে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ভর্তি পরীক্ষায় একই ইউনিটের পরীক্ষা ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নে একাধিক শিফটে নেওয়ায় এই মেধা মূল্যায়নের বৈষম্য হচ্ছে বলে দাবি করছেন ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকরা।

গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় কিছু শিফটে বাংলা ভার্সনে, কিছু শিফটে ইংরেজি ভার্সনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া প্রশ্নের মানের তারতম্য ছিল। ভর্তি পরীক্ষার ফরম তোলার সময় প্রদত্ত নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক শিফটে পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ পছন্দের ভার্সন অনুযায়ী প্রশ্ন পাবে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনে কিছু শিফটেই ঢালাওভাবে ইংরেজিতে প্রশ্ন করা হয়েছে। এই নিয়ে ভর্তিচ্ছু একাধিক শিক্ষার্থীরা মানবজমিনের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘সি’ ইউনিটের (কলা ও মানবিকী অনুষদ) ৫ম ও ৬ষ্ঠ শিফটে ৮০টি প্রশ্নের মধ্যে বাংলা (১০) বাদে ৬৫-৭০টি প্রশ্ন হয়েছে ইংরেজিতে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিফটে ৮০টা প্রশ্নের মধ্যে বাংলা (১০) ইংরেজি-(১০) বাদে ৬০টি প্রশ্নের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০টা প্রশ্ন বাংলায় হয়েছে। যার ফলে শেষ দুই শিফটে যাদের প্রবেশ পত্রে বাংলা ভার্সন লেখা তাদেরও ইংরেজিতে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। তাছাড়া ‘সি’ ইউনিটে কলা ও মানবিক অনুষদ হলেও এবারের প্রশ্নে বেশ কয়েকটি ম্যাথ এসেছে। ফলে প্রতিযোগিতায় মানবিক বিভাগ থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলেও দাবি ভর্তিচ্ছুদের। এসব কারণে তারা প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
অপরদিকে ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় যে সব শিফটে বাংলায় পরীক্ষা হয়েছে সেসব শিফটের পরীক্ষার্থীরা মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে।

যোগাযোগ করা হলে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে বৈষম্য হওয়ার অভিযোগে আমি দ্বিমত করছি না। তবে আগামীবার থেকে যাতে এটা না হয় আমরা তার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তবে অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক এই ইউনিটে এবছর থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করে চান্স পেলেই ভর্তি হতে পারবে বলে জানালেও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কার্যত সম্মিলিত প্রতিযোগিতায় রাখা হয়নি।  

আর ৪ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত ‘বি’ ইউনিটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ছাত্রদের ১৬৩টি আসনের বিপরীতে উত্তীর্ণ ১০ গুণ শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

সেখানে ছাত্রদের শীর্ষ ৫০ জনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এই ইউনিটের চতুর্থ শিফট থেকে ভর্তি পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। শীর্ষ ৫০ জনের ২৬ জন এসেছেন ৪র্থ শিফট থেকে। বাকি ২৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন অন্য ৪টি শিফট থেকে। এর মধ্যে দ্বিতীয় শিফট থেকে সবচেয়ে কম দুই জন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
এই নিয়ে কথা বলতে ভর্তি পরীক্ষার পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আবু হাসান কে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন ধরেননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্বে ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বপালনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শিফটভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা বিতর্কিত। কারণ, এখানে কাউকে একই পাল্লায় মাপা যায় না। কেউ হাইকোর্টে রিট করলেই পরীক্ষা আবার নিতে হবে। কিন্তু, আমার কাছে এটা অবাক করা ব্যপার যে কেউ রিট করে না।’
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status