খেলা

এশিয়া কাপ-২০১৮

এ যেন ‘এলোমেলো’ বাংলাদেশ!

স্পোর্টস রিপোর্টার

২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, সোমবার, ১০:২৮ পূর্বাহ্ন

পরপর তিন ম্যাচে ব্যর্থ ওপেনার লিটন কুমার দাস। তামিম ইকবালের ইনজুরিতে ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী হওয়া তরুণ নাজমুল হোসেন শান্তরও একই অবস্থা। আফগানিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে হেরে যেন ভিত কেঁপে যায় দলের। তাতেই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাসহ সবাইকে অবাক করে দেশ থেকে উড়িয়ে নেয়া হয় দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে। কিন্তু এশিয়া কাপের চতুর্থ ও সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে ভাগ্য বদলায়নি দলের। ব্যাটিংয়ে সেই ব্যর্থতার চিত্র। শান্ত ও লিটনের ওপর আস্থা রাখা হলো আফগানদের বিপক্ষে এশিয়া কাপের টিকে থাকার লড়াইয়ে। কিন্তু লিটন ৪১ করলেও বদলায়নি ওপেনিংয়ে দৈন্যদশা। এদিন দেশ থেকে উড়ে যাওয়া ওপেনার ইমরুল কায়েসের দলে জায়গা হলো ছয় নম্বরে। তাও ৮৭ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে যান তিনি। এর আগে দুইবার এশিয়া কাপের শিরোপা হাতছাড়া হয়। তাই এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে শিরোপা জয়ই ছিল লক্ষ্য। কিন্তু বিধিবাম ভুল সিদ্ধান্তে মাঠে দেখা যাচ্ছে এলোমেলো এক বাংলাদেশকেই। যেখানে প্রতিটি ম্যাচেই শিরোপার স্বপ্ন একটু একটু করে মিলিয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেটবোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক সবারই দাবি অপরিকল্পিত সিদ্ধান্তই এমন ঘটনার জন্য দায়ী। যার দায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কোনোভাবে এড়াতে পারবে না।
দেশের মাটিতে তিন এশিয়া কাপের দুটি ফাইনাল খেলে টাইগাররা। যদিও শিরোপা হয়ে থাকে আক্ষেপের নাম। তারপরও বিশ্বাস ছিল একদিন এশিয়া কাপের মুকুট পড়বে বাংলাদেশ দল। তাই এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে সেই স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। কিন্তু আসরে নামার আগেই যেন সব কিছু ‘এলোমেলো’। বিশেষ করে ইনজুরি আক্রান্ত সাকিব আল হাসানকে দলে নেয়ার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা। যেখানে সাকিব নিজে দাবি করেছেন তিনি খেলার জন্য ২০ থেকে ৩০ ভাগ ফিট সেখানে সাকিবকে খেলানোর সিদ্ধান্ত সবাইকে অবাকই করে। এরপর দলের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল পড়েন ইনজুরিতে। তা নিয়েই তিনি খেলতে যান ফলাফল প্রথম ম্যাচেই আসর থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। ইনজুরি ছিল মুশফিকুর রহীম ছাড়াও দলের তরুণ সদস্য নাজমুল হোসেন শান্তরও। এসবই জানতেন টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু কি উপায় কি! সাকিব, তামিম, মুশফিকদের যে বিকল্প তৈরি হয়নি! তাদের বিকল্প হিসেবে লিটন দাস, শান্ত, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেনরা যে এখনো দাঁড়াতে পারেননি নিজ পায়ে। ফলাফল যা হওয়ার তাই। উদ্বোধনী দিনে শ্রীলঙ্কাকে দাপটের সঙ্গে হারালেও খেই হারায় মাশরাফির দল। পরের ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে তরুণদের ব্যর্থতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচেও নড়বড়ে দল বাজে ভাবে হারে ভারতের কাছে। গতকাল এশিয়া কাপের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচেও দেখা মেলে আত্মবিশ্বাস হারানো ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে।
অন্যদিকে দুই ম্যাচে ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যর্থ হওয়াতে অধিনায়ক মাশরাফিকে না জানিয়েই এশিয়া কাপের দলে ডাকা হয় সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসকে। ভাবা হচ্ছিল তাদের ওপেনিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হবে। কিন্তু ম্যাচের একাদশে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। ওপেনিংয়ে দায়িত্ব সামলাতে আসলেন লিটন ও শান্তই। কিন্তু দলের ১৬ রানেই শান্ত আউট মাত্র ৬ রানে। তারপর দলের দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় মিঠুনের হাতে। পরপর তিন ম্যাচে ব্যর্থ সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে এবার ওয়ান ডাউনে নামানোর সাহস করেনি দল। কিন্তু কেন মিঠুন ওয়ানডাউনে সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগেই তিনি সাজঘরে। দলের জন্য প্রথম ম্যাচে মিডল অর্ডারে নেমে অবদান রেখেছিলেন ৬৩ রানের। আর গতকাল তিনি নতুন জায়গাতে নেমে করেন ১ রান। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন করে সুফল পাননি। এরপর লিটন এ ম্যাচে নিজেকে প্রমাণ করার লড়াই শুরু করেন। নিজের ১৫তম ওয়ানডে ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ৪১ রান করে জানান দিচ্ছিলেন ভালো কিছু করার। কিন্তু বাজে এক শটে রশিদ খানকে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে ফিরলেন সাজঘরে। তার ব্যাট থেকে এর আগে সর্বোচ্চ এসেছিল ৩৭ রানের ইনিংস। দুই ওপেনার বিদায় নিলেও আশা ধরে রেখেছিলেন প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো মুশফিক। তিনি হাল ধরে রাখলেও ব্যাটিং অর্ডারে পাঁচ নম্বরে ডিমোশন পাওয়া সাকিব এসে বাজেভাবে রান আউট হয়ে ফিরে যান সাজঘরে কোনো অবদান না রেখেই। এরপর ৩৩ রান করা মুশফিকও যেন এলোমেলো হয়ে যান। তিনিও বাজে রান আউটের শিকার হন। মাত্র ৬ রানের মধ্যেই দুই সিনিয়রের বিদায়ে ফের বিপদে পড়ে দল। তবে সেখান থেকে দলকে কিছুটা হলেও রক্ষা করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। কিন্তু শুরু থেকে নানা ভুল সিদ্ধান্ত দলের ওপর দারুণভাবে প্রভাব ফেলেছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যার প্রভাবে গোটা দলকেই দেখা গেছে খেই হারিয়ে এলোমেলো হতে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status