অনলাইন

বন্দুক তাক করে থাকলে বিদেশে গিয়ে লিখবেন ছাড়া কি গণভবনে বসে লিখবেন ?

স্টাফ রিপোর্টার

২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১২:৩৮ অপরাহ্ন

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বলেছেন, রাষ্ট্রের বন্দুকধারীরা যদি প্রধান বিচারপতির দিকে বন্দুক তাক করে দেশের বাহিরে যেতে বাধ্য করে তখন তিনি কি করবেন ? বিদেশে গিয়ে বই লিখবেন নাকি গণভবনে সবুজ লনে বসে লিখবেন ?
আজ শনিবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী আহমেদ বলেন,  সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দেশে বসেই সৎ সাহসের সঙ্গে কাজ করছিলেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতির কাছে তো বন্দুক নেই। রাষ্ট্রের বন্দুকধারীরা তার দিকে বন্দুক তাক করে দেশের বাহিরে যেতে বাধ্য করে। আওয়ামী লীগ সরকারের লোকেরা একজন নিরস্ত্র প্রধান বিচারপতিকে সন্ত্রাসীদের কায়দায় বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়। এটা কোন বীরের কাজ নয়, এটা কাপুরুষের কাজ। সভ্য গণতান্ত্রিক দেশে বিচার বিভাগ একটি স্বাধীন সংস্থা। অথচ বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী-উপদেষ্টারা কথা বলার নামে এমন আচরণ করেছেন যেন তারা প্রধান বিচারপতিকে রিমান্ডে নিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব তাকে বঙ্গভবনে ডেকে নিয়ে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সামনে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীরা ধমকাধমকি করেছেন তা সন্ত্রাসী আক্রমণেরই সমতুল্য। প্রধান বিচারপতি তার বইয়ে লিখেছেন যে, ক্ষমতাসীন সরকারই তাকে পদত্যাগে এবং নির্বাসনে যেতে বাধ্য করেছে। সুতরাং নির্যাতিত এস কে সিনহা সাহেব কি আওয়ামী লীগের মৌসুম দেখে বই প্রকাশ করবেন ? সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন- প্রধান বিচারপতি সাবেক হয়ে গেছেন, সাবেক হওয়ার অন্তর্জালা আছে। আপনারা তো বন্দুকের নল ঠেকিয়ে এস কে সিনহাকে সন্ত্রাসী কায়দায় সাবেক হওয়ার আগেই সাবেক করেছেন। তাই সত্য কথা লিখাতে অন্তর্জালা হচ্ছে আপনাদের।    
রিজভী বলেন, যদি ভোটারবিহীন ক্ষমতাসীন সরকার দেশের প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে ও নির্বাসনে যেতে বাধ্য করে তাহলে প্রশাসন, আইন আদালতকে বাধ্য করে বিচারকের কাছ থেকে মামলা ফেরত এনে সম্পূরক চার্জশীটে তারেক রহমানের নাম জড়ানো তো কঠিন কাজ নয়। গণবিরোধী অবৈধ সরকার যেকোন কাজই করতে পারে। আজ জনগণের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ২১শে আগস্টের বোমা হামলার আইনী প্রক্রিয়া নিয়ে। ১/১১ এর সরকার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম তদন্ত করে পেলো না। তদন্তকারি কর্মকর্তারা কোথাও সন্দেহবশতও তারেক রহমানসহ সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করেনি, অথচ আওয়ামী লীগ ২০০৯ এ ক্ষমতায় এসে নজীরবিহীনভাবে পছন্দের তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহার আকন্দকে অবসর থেকে ডেকে এনে ২১শে আগস্ট বোমা হামলা মামলার পুনঃতদন্তের ভার দেয়। সে বিচারকদের কাছ থেকে মামলাটি ফেরত এনে পুনঃতদন্তের নামে তারেক রহমানকে মামলায় জড়িয়ে ষড়যন্ত্রের যাত্রা শুরু করে।
রিজভী বলেন,  আদালত দিয়ে প্রতিশোধ গ্রহণের রমরমা রাজনৈতিক সফলতায় ক্ষমতাসীনরা উল্লসিত। এই অবৈধ সরকার আইন, বিচার সবকিছু কুক্ষিগত করে দেশকে ‘মগের মুলুক’ এ পরিণত করেছে। সরকারের ‘গাইডলাইন’ অনুযায়ী ২১শে আগস্ট বোমা হামলা মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে কি না, তা নিয়ে জনগণের মনে বড় ধরণের সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারের সব ধরণের বক্তব্য, বিবৃতি ও প্রচারকেই জনগণ বাকোয়াস বলে মনে করে। তাদের উন্নয়নের ফানুস ফেটে গেছে। গণতন্ত্রকে বন্দী করে, বিরোধী দলের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত দমনের পথ বেছে নিয়ে, মামলা-হামলা-গ্রেপ্তার করে সরকার বিরোধী দলের নেতাদের ঘুম কেড়ে নিতে চাচ্ছে। তবে আমি আবারও দৃঢ় কন্ঠে বলতে চাই-সরকারের এই সমস্ত অনাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের সম্মিলিত কন্ঠস্বরে সরকার ও সরকারপ্রধান কতটুকু শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন তা দেখার জন্য জনগণ অপেক্ষা করছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status