বিশ্বজমিন

উত্তর কোরিয়া সফরে দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৯:১৮ পূর্বাহ্ন

তৃতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরের রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে এবারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়ন ও কোরিয়া উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সস্ত্রীক পিয়ংইয়ং পৌঁছান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম। এ সময় কিমের স্ত্রী রি সল জুও উপস্থিত ছিলেন। পরে পিয়ংইয়ংয়ের রাজপথে দুই নেতা একটি শোভাযাত্রায় অংশ নেন। উত্তর কোরিয়ার হাজার হাজার মানুষ মুন জায়ে ইনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। তারা দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ নিয়ে বিভিন্ন সেøাগান দিতে থাকেন। একটি ছাদ খোলা গাড়িতে চড়ে দুই কোরিয়ার নেতা হাত নেড়ে সমবেত জনতার অভিবাদনের জবাব দেন। এক দশকের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের পিয়ংইয়ং সফরের ঘটনা এটিই প্রথম। মুন জায়ে ইন তিন দিন উত্তর কোরিয়ায় অবস্থান করবেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, দিনের মধ্যভাগে পিয়ংইয়ংয়ে আন্তঃকোরিয়া বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার নেতা নিজের দেশের পক্ষে সাফাই গান। তিনি বলেন, গত জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের ফলে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এসেছে। তিনি দক্ষিণ কোরিয়াকে ওই বৈঠক বাস্তবায়নের কৃতিত্ব দেন। বলেন, প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই সিঙ্গাপুর সামিট বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার দীর্ঘদিন ধরে চলা ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব এ বছরে নতুন মোড় নিয়েছে। দফায় দফায় পরস্পরের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন তারা। তবে, ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে কিম জং উন পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করার অঙ্গীকার করলেও এখনো উত্তর কোরিয়া তেমন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগের অঙ্গীকার করলেও এর বাস্তবায়নের রূপরেখা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। ফলে কোরিয়া উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া অনেকটা থমকে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব নিরসনে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের পিয়ংইয়ং সফর বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কোরিয়া উপদ্বীপের পারমাণবিক হুমকি কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে দুই কোরিয়ার নেতা আলোচনা করবেন। তবে, আলোচনার টেবিলে মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় না ওঠার সম্ভাবনা বেশি। সিউলে বিবিসির প্রতিনিধি লরা বিকার বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া দু’টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে। প্রথমত, আন্তঃকোরিয়া পারস্পরিক সহযোগিতা ও পুনর্মিলন জোরদার করা। দ্বিতীয়ত, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করা। এপ্রিলে দুই কোরিয়ার নেতা যখন প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসেন, তখন দুই নেতার এক টেবিলে বসার বিষয়টিই মুখ্য ছিল। কিন্তু এখন মুন জায়ে ইনকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি আনতে হবে। অন্যথায় আন্তঃকোরিয়া বৈঠক ও ট্রাম্পের সঙ্গে কিম জং উনের বহুল আলোচিত বৈঠকের সফলতা শুধু চকচকে ছবির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ধৈর্য হারিয়ে ফেলতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status