বাংলারজমিন

শাল্লা কলেজে হোস্টেল না থাকায় ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৯:১১ পূর্বাহ্ন

হাওর বেষ্টিত শাল্লা উপজেলার উচ্চ শিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান শাল্লা কলেজ। এ কলেজটিতে আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এ উপজেলার শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আবাসন না থাকায় নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এতে তাদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। জানা যায়, ১৯৮৬ সালে শাল্লা উপজেলা সদরে কর্মরত তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় শাল্লা কলেজ। ১৯৮৬ সালের ১লা অক্টোবর তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. আবুল কাসেম কলেজটি উদ্বোধন করেন। প্রায় তিন একর জায়গাজুড়ে শাল্লা কলেজ ক্যাম্পাস। কলেজে রয়েছে তিনটি একাডেমিক ভবন। বর্তমানে মানবিক, বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও ডিগ্রিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৬শ’ ছাড়িয়েছে। কলেজে বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, যুক্তিবিদ্যাসহ মঞ্জুরিকৃত ২৫টি পদের মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন ১৭ জন, বাকি ৮টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বর্ষাকালে দ্বীপের মতো ভেসে থাকে শাল্লা উপজেলা সদরটি। কলেজে আসতে হয় নৌকায়। আবার শুষ্ক মৌসুমে উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ ভালো না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। কলেজ শিক্ষার্থীরা জানান, বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর বাড়ি কলেজ থেকে দূরে। কলেজে কোনো হোস্টেল না থাকায় অনেকেই উপজেলা সদরে লজিং থেকে লেখাপড়া করে। কলেজের শিক্ষার্থী রিনি রানী দাস জানান, কলেজে হোস্টেল না থাকায় তাদের সহপাঠীদের অনেকেই লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘরে বসে আছে। কারণ, লজিং থাকার কোনো সামর্থ্য নেই তাদের।
কলেজ শিক্ষার্থী শ্যামারচর গ্রামের চম্পা রানী রায় সাগরিকা বলেন, ‘শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে কলেজে আসতে হয়। অন্যদিকে বর্ষকালে নৌকা বা ট্রলারে আসতে হয়। অনেক সময় নৌকা না পেলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যথাসময়ে ক্লাসে আসা যায় না। যদি হোস্টেল থাকত তাহলে এ সমস্যায় পড়তে হতো না। কলেজ শিক্ষার্থী সাশখাই গ্রামের বিষ্ণু প্রসাদ জানান, শাল্লা উপজেলার সবচেয়ে দুর্গম এলাকায় বাড়ি তার। তার বাবা একজন কৃষক। বাড়ি থেকে ট্রলারে কলেজে আসতে এক ঘণ্টা সময় লাগে তার। প্রতিদিন ট্রলার ভাড়া করে কলেজে আসার সামর্থ্য তার নেই। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ক্লাস করতে আসে। হোস্টেল না থাকায় বছরের পর বছর এভাবেই ক্লাস করতে হচ্ছে তার। শাল্লা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ বলেন, আমাদের কলেজসহ হাওর এলাকায় প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হোস্টেলের ব্যবস্থা করা না গেলে শিক্ষার হার ও মান কোনোটাই বাড়বে না। হাওরে দরিদ্র মানুষের বসবাস। তাদের সামর্থ্য নেই টাকা খরচ করে লজিং মাস্টার বাড়িতে রেখে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করবে। তাই ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার উন্নয়নে দ্রুত কলেজ ক্যাম্পাসে আলাদা দুটি হোস্টেল স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status