বাংলারজমিন

গোয়াইনঘাটে ২২ কিলোমিটার বেহাল সড়ক

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি

১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৯:০৪ পূর্বাহ্ন

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা অভ্যন্তরে দুটি সড়ক বেহাল। এতে চরম দুর্ভোগ, ভোগান্তি নেমে এসেছে যানবাহন ও পথচারী পর্যটক চলাচলে। বিশেষ করে জাফলং ও বিছনাকান্দিতে বেড়াতে আসা পর্যটক, দর্শনার্থী আর তাদের বহনকারী যানবাহনের চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসী, বেড়াতে আসা আগন্তুক দর্শনার্থীদের। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর হতে জাফলং শ্রীপুর, আলুবাগান, নলজুরী, তামাবিল, মোহাম্মদপুর, মামার দোকান হয়ে পর্যটন স্পট বল্লাঘাট ও সিলেট-বঙ্গবীর-হাদারপার সড়কের পীরের বাজার গরুরঘাট, লামারবাজার হয়ে হাদারপার পর্যন্ত এলাকার বিস্তৃত এ দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সড়ক। সড়ক দুটির এ স্থানগুলোতে পথচারী যান চলাচল যেন অসাধ্য। উক্ত সড়ক দুটির মোট ২২ কিলোমিটিার এলাকা যেন সড়ক নয়, মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সর্বত্রই খনাখন্দ, হাজার হাজার ছোট-বড় গর্তে ভরে গেছে সড়ক বেহালের কারণে। সড়কের পুরো ২২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহনতো দূরে থাক, পায়ে হেঁটে পথচারী হাঁটারও উপক্রম নেই। এসব স্থানে প্রায় আটকা পড়ছে যাত্রী ও পর্যটকবাহী সব ধরনের যানবাহন। দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে আহত, পঙ্গুত্ববরণ এমনকি মৃত্যুবরণ করছেন অনেকেই। দীর্ঘদিন ধরে উক্ত সড়কসমূহের সংস্কার, মেরামত না হওয়াতে জনদুর্ভোগের চরম আকার ধারণ করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ, ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীসহ প্রশাসন তরফে এসব সড়ক ব্যবস্থাপনায় সৃষ্ট বেহালে অবস্থার সংস্কার, মেরামতে উদ্যোগ চলমান আছে বলে জানালেও এলাকাবাসীর অভিযোগ এসব সড়কসমূহ মেরামতের উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলছে খুবই ধীরগতিতে। সোমবার সকাল ১০টায় হাদারপার বাজারে কথা হয় ঢাকার রামপুরা থেকে আসা পর্যটক আহমেদ সোহেল জনির সঙ্গে। তিনি জানান এসেছিলাম প্রকৃতি দেখতে কিন্তু সড়কের যানবাহন চলাচলে যাতায়াত ব্যবস্থা তাতে সমস্ত ভ্রমণ যাত্রাকেই কষ্টসাধ্য করে তুলল। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলবো বিছনাকান্দি পর্যটন সম্ভাবনাকে অগ্রগামী করতে হলে দ্রুত এখানকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটান। নচেৎ দ্রুত পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নেবে বিছনাকান্দি থেকে। প্রাইভেট কারযোগে মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা দুই বন্ধু আরাফাত রহমান ও সাইদুল হক। তারা জানান পর্যটনে অপার সম্ভাবনার এই নৈস্বর্গিক স্থানে আসলে যে কারোরই ভালো লাগবে। তবে পর্যটকদের যাতায়াত বিড়ম্বনার প্রধান কারণ সড়কসমূহের যে বেহাল অবস্থা তাতে দেখে মনে হচ্ছে এখানাকার ব্যাপারে সরকার অবহিত নয়। কেননা, এমন একটি স্থানকে কেন নাজুক ও কষ্টসাধ্য যোগাযোগের আওতায় রাখা হলো। সরকার সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বিষয়টি আশা করি নজর নেবেন। স্থানীয় ১নং রুস্তমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন শিহাব বলেন,বিছনাকান্দি পর্যটনস্থসহ এলাকাবাসির যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান সড়ক হলো সিলেট-সালুটিকর-বঙ্গবীর হাদারপার সড়ক। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে সড়কটির সংস্কার,মেরামত না হওয়ায় এলাকাবাসী, পর্যটক ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই সড়কের কোথাও কোথাও দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে যানবাহন, এতে করে ভোগান্তির শেষ নেই। আমি বিষয়টির ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। মামার বাজারের ফার্মসিস্ট ডা. সুমন আহমদ জানান, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের আমাদের মামার বাজারের অংশে যানবাহন, পথচারী চলাচলে কষ্টের অন্ত নেই। কর্তৃপক্ষে একাধিকবার যোগযোগ করেও যেন বিষয়টির সমাধানে কোনো কার্যত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এব্যাপারে কথা হলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ফখরুল ইসলাম জানান, গোয়াইনঘাট একটি বৃষ্টি, বন্যা আর প্রাকৃতিক দুর্যোগময় উপজেলা। এখানকার অভ্যন্তরীণ সড়কসমূহ সাধারণত ২২ এম থেকে ৪০ এম এমে স্থাপথশৈলীর ভেতরে তৈরি হয়ে থাকে। এসব সড়কের পর্যাপ্ত টিকনেস দিয়ে তৈরির পরও সড়কসমূহের ওপর দিয়ে সড়কের ওপর দিয়ে চলে পাথরবাহী ট্রাক, ট্রাক্টর। সড়কের ধারণ ক্ষমতারও বেশি পাথরবাহী ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে এসব গ্রামীণ সড়কসমূহ মেরামতের বছর ঘুরতেই ভেঙে যাচ্ছে। বঙ্গবীর-হাদারপার সড়ক সংস্কারে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় হতে ইতিপুর্বে যাবতীয় প্রাকলন তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায় অচিরেই তার টেন্ডারসহ সমাধানে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status