ফেসবুক ডায়েরি
প্রসঙ্গ: বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, শনিবার, ৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
বিশ্ববিদ্যালয় শব্দের সঙ্গে যে ‘বিশ্ব’ কথাটা আছে তা দিয়ে ব্যক্তির (শিক্ষক/শিক্ষার্থীর) সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া, সারা বিশ্বের জ্ঞান ধারণ করা বা সারা বিশ্বের উপযোগী হয়ে ওঠা বোঝায় না। যা বলতে চাওয়া হয়, তা হলো সারা বিশ্বে যত জ্ঞান আছে মূলত সেসবের একটা ক্ষুদে সংরক্ষণাগার হবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। (যারা বলতে চান, জ্ঞান সৃজন করে বিশ্ববিদ্যালয়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বিশ্বকে জেনে না জেনে হেয় করেন। জ্ঞানসৃজন আদেশ দিয়ে, পাঠ্যসূচি মেনে হয় না। বিদ্যা শিক্ষা করে নবি বা কবি হওয়া যায় না।)
শিক্ষার্থীরা যেমন চায়, তাদের শিক্ষকরা বিশ্বের সব কিছু সম্পর্কে কিছু কিছু জানবেন, এটা অবাস্তব চাওয়া। বরং শিক্ষকরা বিশ্বের খুব কম কিছু সম্পর্কে সামান্য কিছু জানবেন- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা যে সামান্যটুকু জানবেন সেই জানাটুকু কালক্রমে বিষয় বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার পাথেয় হবে। যদি কোনো দিন তিনি কোনো সামান্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন তাহলেই কেবল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সার্থক শিক্ষক বলে গণ্য হতে পারেন। জ্ঞান-চর্চার-ক্ষেত্র বাছাইয়ে অস্থিরতা শিক্ষকের জন্য আসলে হারাম। যদিও আজকাল দেখছি, শিশুরা যেভাবে নতুন নতুন খেলনার প্রতি আগ্রহী হয়, শিক্ষকরা তেমনি সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি (কল্পনা) সাপেক্ষে নতুন নতুন বিষয় আর প্রযুক্তিতে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
শিক্ষার্থীদের আর একটি দাবি আছে, শিক্ষকদের এই জ্ঞান তাদের ভবিষ্যৎ কাজের জগতের সাথে প্রাসঙ্গিক হতে হবে। (এটি বেশ লোভনীয় একটা ব্যাপার। প্রায় সব শিক্ষিত মানুষই নতুন নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে থেকে ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠতে চায়। শিক্ষিকরাও তার ব্যতিক্রম নন।) এই দাবি পুরন করতে গিয়ে শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত তাদের পাঠ্যসূচি নবায়ন করতে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুত হতে অনেক সময় ব্যয় করেন। তারপর নতুন যে জ্ঞান বিতরণ শুরু করেন, সে সম্পর্কে তিনিও শিক্ষার্থী হয়ে যান এবং যে বিষয়গুলোতে তিনি কিছুদিন আগে বিশেষজ্ঞ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন এবং এখন যা নতুন শিখেছেন/জানছেন বলে দাবি করেন, সেসব দিয়ে তালগোল পাকিয়ে না ঘরকা-না-ঘাটকা পরিস্থিতি তৈরি করেন। এসব আধা জানা বিষয়গুলো পড়াতে গিয়ে তাকে কখনও হকার-জোকার বা দেহবিক্রি করা নারী/পুরুষের মতো ভাবভঙ্গির কসরত করতে হয়। আর পুরানো জানাগুলো চর্চার অভাবে প্রায় পুরোটাই হারিয়ে ফেলেন।
চাকরির বাজারে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার ব্যাপারটা সম্ভবত পাঠ্যসূচির নয়, শিক্ষার্থীদের একান্ত সমস্যা হওয়া উচিত। একটা মোটামুটি ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়েও এতো কিছু থাকে যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা খুঁজে খুঁজে নিজেদের খাবার নিজেরা তৈরি করে নিতে পারেন। আর এই খোঁজা আর বানানোর কাজটি মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে যদি কেউ শিখে নিতে না পারে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে না আসাই সম্ভবত শ্রেয়।
(*আমার কোনো ভাবনাই চূড়ান্ত কিছু না। কোনো ভাবনাই একান্ত নিজের না। আবার সর্বাংশে কোনো একজনেরও না। এই চলতি ভাবনায় চার্লসই অসগুডের হাজিরা স্পষ্ট।)
লেখকঃ আর রাজী
শিক্ষার্থীরা যেমন চায়, তাদের শিক্ষকরা বিশ্বের সব কিছু সম্পর্কে কিছু কিছু জানবেন, এটা অবাস্তব চাওয়া। বরং শিক্ষকরা বিশ্বের খুব কম কিছু সম্পর্কে সামান্য কিছু জানবেন- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা যে সামান্যটুকু জানবেন সেই জানাটুকু কালক্রমে বিষয় বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার পাথেয় হবে। যদি কোনো দিন তিনি কোনো সামান্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেন তাহলেই কেবল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সার্থক শিক্ষক বলে গণ্য হতে পারেন। জ্ঞান-চর্চার-ক্ষেত্র বাছাইয়ে অস্থিরতা শিক্ষকের জন্য আসলে হারাম। যদিও আজকাল দেখছি, শিশুরা যেভাবে নতুন নতুন খেলনার প্রতি আগ্রহী হয়, শিক্ষকরা তেমনি সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি (কল্পনা) সাপেক্ষে নতুন নতুন বিষয় আর প্রযুক্তিতে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
শিক্ষার্থীদের আর একটি দাবি আছে, শিক্ষকদের এই জ্ঞান তাদের ভবিষ্যৎ কাজের জগতের সাথে প্রাসঙ্গিক হতে হবে। (এটি বেশ লোভনীয় একটা ব্যাপার। প্রায় সব শিক্ষিত মানুষই নতুন নতুন জ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে থেকে ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠতে চায়। শিক্ষিকরাও তার ব্যতিক্রম নন।) এই দাবি পুরন করতে গিয়ে শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত তাদের পাঠ্যসূচি নবায়ন করতে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুত হতে অনেক সময় ব্যয় করেন। তারপর নতুন যে জ্ঞান বিতরণ শুরু করেন, সে সম্পর্কে তিনিও শিক্ষার্থী হয়ে যান এবং যে বিষয়গুলোতে তিনি কিছুদিন আগে বিশেষজ্ঞ হওয়ার চেষ্টা করছিলেন এবং এখন যা নতুন শিখেছেন/জানছেন বলে দাবি করেন, সেসব দিয়ে তালগোল পাকিয়ে না ঘরকা-না-ঘাটকা পরিস্থিতি তৈরি করেন। এসব আধা জানা বিষয়গুলো পড়াতে গিয়ে তাকে কখনও হকার-জোকার বা দেহবিক্রি করা নারী/পুরুষের মতো ভাবভঙ্গির কসরত করতে হয়। আর পুরানো জানাগুলো চর্চার অভাবে প্রায় পুরোটাই হারিয়ে ফেলেন।
চাকরির বাজারে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার ব্যাপারটা সম্ভবত পাঠ্যসূচির নয়, শিক্ষার্থীদের একান্ত সমস্যা হওয়া উচিত। একটা মোটামুটি ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়েও এতো কিছু থাকে যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা খুঁজে খুঁজে নিজেদের খাবার নিজেরা তৈরি করে নিতে পারেন। আর এই খোঁজা আর বানানোর কাজটি মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে যদি কেউ শিখে নিতে না পারে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে না আসাই সম্ভবত শ্রেয়।
(*আমার কোনো ভাবনাই চূড়ান্ত কিছু না। কোনো ভাবনাই একান্ত নিজের না। আবার সর্বাংশে কোনো একজনেরও না। এই চলতি ভাবনায় চার্লসই অসগুডের হাজিরা স্পষ্ট।)
লেখকঃ আর রাজী