দেশ বিদেশ

প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে কার কাছে দায়িত্ব দেবেন?

স্টাফ রিপোর্টার

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:২৬ পূর্বাহ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে বিএনপি’র দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে কার কাছে দায়িত্ব দেবেন? দেশে কি কোনো সংবিধান থাকবে না, আইনকানুন থাকবে না? এটা যেন তাদের মামাবাড়ির পুরনো আবদার। গতকাল নগর ভবনে ডিটিসিএ’র ১১তম সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সংবিধানের বাইরে যাবো না, যাচ্ছিও না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমাদের দেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, চলমান অধিবেশন শেষে অক্টোবরে আর একটি অধিবেশন বসবে।

সেই অধিবেশন সম্ভবত মধ্য অক্টোবরের মধ্যেই শেষ হবে। তফসিল ঘোষণার পর আর সংসদ বসবে না। অক্টোবরের অধিবেশন খুবই সংক্ষিপ্ত হবে। এরপর মন্ত্রীরা শুধু রুটিন ওয়ার্ক করবে। আর সংসদ আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙবেও না, সংসদের কোনো কার্যকারিতাও থাকবে না। নির্বাচনকালে সংসদ বসবেও না। এখন দেশে যদি যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সেটা ভিন্ন কথা। তবে আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। আলাপ-আলোচনা করেই সবকিছুর সমাধান চাই। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াইনি। বিএনপি মহাসচিবের জাতিসংঘে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতিসংঘ যদি তাকে আমন্ত্রণ করে, তারা যদি দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে দেখা করেন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই।

জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে কি এজেন্ডা আছে আমি তা জানি না। নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তারা তো জাতিসংঘে অবিরাম অভিযোগ দিয়েই যাচ্ছে। দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করছে, সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করছে, সেসব নালিশের ব্যাপারে তাদের মতামত ‘অপিনিয়ন’ কি সামনাসামনি তাদের পলিটিক্যাল উইং আলাপ করতে পারে বলে অনুমান করছি। সেটা নিয়ে আমাদের আপত্তি করার  বিষয়  না। তিনি বলেন, আমাদের শক্তির উৎস এদেশের জনগণ। নির্বাচনে জনগণ পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। আমাদের সিদ্ধান্ত কোনো সংবিধানবহির্ভূত কোনো ‘প্রেসারের’ চাপের কাছে আমরা মাথা নত করবো না। আর নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপিকে তো আমন্ত্রণ করি নাই, তারা তো সংসদে নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য এদেশের জনগণ যদি উতলা হতো, তাহলে গ্রেপ্তারের পরেই বিস্ফোরণ ঘটে যেত।

একটা ছোট আন্দোলনও দেখলাম না। তারা সর্বাত্মক আন্দোলন করবে- এটা লোকে বিশ্বাস করে না। তাদের নেতাকর্মীদের মধ্যেই ঐক্য নেই। একজন আরেকজনকে বিশ্বাস করে না। একজন আরেক জনকে বলে সরকারের দালাল। তারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ  না। সর্বাত্মক আন্দোলন করবে কীভাবে। তাদের সর্বাত্মক আন্দোলন নিরীহ অনশনে পরিণত হয়েছে। এত ইনোসেন্ট কর্মসূচির পর সর্বাত্মক আন্দোলনের সাহস নেই। সাহস থাকলে আগেই হতো এখন আর সময় নেই। এখন তাদের ডাকে  কেউ সাড়া দেবে না। স্পেস পাবে না। জনগণ এখন নির্বাচন মুডে আছে। বিএনপি’র উদ্দেশে তিনি বলেন, আন্দোলন করেন, জনগণকে নিয়ে করেন। আন্দোলন অহিংস করলে শান্তি। আর যদি সহিংস হয় তাহলে জনগণকে নিয়ে আমরা প্রতিহত করবো। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ট্রেনে জনভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রেস ক্লাবের সামনের মানববন্ধনের নামে সমাবেশ করে লাখ লাখ মানুষের দুর্ভোগ হয় সেটা নিয়ে কেউ কথা বলেন না। আমরা তো স্টেশনে গেছি, সেখানে মাত্র ৬০০ যাত্রী। তারপরেও কিছু দুর্ভোগ হতে পারে। মানুষের মাঝে তাতে কোনো ক্ষোভ ছিল না। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে বিএনপি’র এমন দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার মুক্তির ব্যাপারটি আদালতের এখতিয়ার।

মুক্তি দেয়ার ক্ষমতা বা সুযোগ কোনোটাই সরকারের নেই। আদালত তাকে এরইমধ্যে ৩০টি মামলায় জামিন দিয়েছে। সরকার যদি আদালতে হস্তক্ষেপই করতো এতগুলো মামলার  জামিন পেলো  কীভাবে? জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় উচ্চ আদালতও জামিন দিয়েছে। তাই তার জামিন সম্পূর্ণ আদালতের ওপর বর্তায়। আদালতই তাকে মুক্তি দিতে পারে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা তার মুক্তির ব্যাপারে এত আগ্রহী, এত সিরিয়াস তাহলে ১০ বছর কেন একটা মামলা প্রলম্বিত করলেন? এই মামলা অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। নির্বাচনের সময় পর্যন্ত গড়াতো না, যদি না আপনারা বিলম্বিত করতেন। বেগম জিয়া ১৫৪ বার অনুপস্থিত থাকবেন- এই দায়িত্ব কে নেবে?
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status