দেশ বিদেশ

ভারতের রেমিট্যান্সের চতুর্থ উৎস বাংলাদেশ নয় -ভারতীয় হাইকমিশনার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার:

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:২৫ পূর্বাহ্ন

ভারতের প্রবাসী বা রেমিট্যান্সের চতুর্থ বড় উৎস বাংলাদেশ নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স হিসেবে বছরে ৪০০ কোটি ডলার ভারতে যাওয়ার তথ্যটিও সঠিক নয়। গতকাল রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বস্ত্র খাতের একটি আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার এ দাবি করেন। ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্যের আগে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ভারতের প্রবাসী আয়ের চতুর্থ বড় উৎস বাংলাদেশ। এটা নিয়ে আমরা গর্ব বোধ করি। শফিউল ইসলামের এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, আমি রেকর্ড রাখার জন্য এফবিসিসিআই সভাপতির বক্তব্যটির আংশিক সংশোধনী দিতে চাই। বাংলাদেশ যে ভারতের রেমিট্যান্সের চতুর্থ উৎস, এটা প্রকাশ করেছিল পিউ রিসার্চ। তাদের ওয়েবসাইটে সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে এ তথ্য উঠেছিল, যা পুরোপুরি ভুল। সংবাদটি মিথ্যা। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তথ্যাদি আমরা এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে আদান-প্রদান করতে পারি। এদেশে ভারতীয় নাগরিকদের একটি ছোট দল কাজ করে। এটা অবিশ্বাস্য যে তাদের পক্ষে ৪০০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় পাঠানো সম্ভব। ২০১৫ সালে পিউ রিসার্চের বরাত দিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশকে ভারতের রেমিট্যান্স আয়ের পঞ্চম উৎস বলে উল্লেখ করা হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে ভারত বছরে ৪০৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পায় বলে উল্লেখ করা হয়। গত ২রা জুলাই আরেকটি পত্রিকায় বাংলাদেশ থেকে ভারত এক হাজার কোটি ডলার আয় করে বলে উল্লেখ করা হয়। যদিও সেখানে কোনো প্রতিষ্ঠানের বরাত দেয়া হয়নি। পিউ রিসার্চ গত ২৩শে জানুয়ারি বিশ্বব্যাংকের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করে একটি হালনাগাদ ইনফোগ্রাফিকস প্রকাশ করে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে ২০১৬ সালে ২০০ কোটি ডলার বা সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স বিদেশে যায় বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে ভারতে যায় ১১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। পিউ রিসার্চের একই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত থেকে বাংলাদেশে ২০১৬ সালে ৪০৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক শিল্প দারুণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশ আসে এ শিল্প থেকে। যা অর্থমূল্যে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলার। বাংলাদেশের জিডিপিতেও ১৫ শতাংশ অবদান রাখছে এ খাত। ২০১১ সালে শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধা পাওয়ায় ভারতের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি বেড়েছে ১১৫ শতাংশ। ভারত এখন বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির অন্যতম উদীয়মান বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কাঁচামালের অন্যতম বড় যোগানদাতা দেশও ভারত। এদেশের তুলা ও সুতার মোট চাহিদার চারভাগের প্রায় এক ভাগ আসে ভারত থেকে। ভারতীয় তুলা, সুতা ও ফ্যাব্রিকের রপ্তানির ২৫ শতাংশ আসে বাংলাদেশে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট রুদ্র চ্যাটার্জি ও বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাসির। আইসিসিবিতে বস্ত্র খাতের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সেমস গ্লোবাল। আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রদর্শনীটি চলবে।

   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status