বাংলারজমিন

খানেপুর ইছামতি নদীর দুই পাড়ে মানুষের ঢল

রাশিম মোল্লা

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ন

সরু নদী। পানিও কম। তবু ইছামতি নদীতে বর্ণিল নৌকাবাইচ। আর তা দেখতে মুখে নানা রং মেখে ও সং সেজে নদী ও দুই কূলে দর্শনার্থীদের ঢল। দর্শকদের টান টান উত্তেজনা আর নৌকার মাঝিমাল্লাদের ‘হেঁইয়ো-রে হেঁইয়ো’ ধ্বনিতে পুরো নদী মুখরিত। গতকাল ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার খানেপুর ইছামতি নদীতে বর্ণিল সাজে অনুষ্ঠিত হলো এতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ। খানেপুর-শৈল্যা গ্রামবাসীর উদ্যোগে এই নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। নৌকাবাইচ উপলক্ষে ইছামতি নদীর দুই পাড়ে শিশু-নারী-পুরুষসহ উপস্থিত ছিল হাজার হাজার মানুষ।

বাইচে আগত দর্শনার্থীরা ঢোল, তবলা নিয়ে নেচে গেয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে এলাকাজুড়ে। এছাড়াও দর্শকদের আনন্দ দিতে বিভিন্ন নৌকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এ উপলক্ষে বসেছে গ্রাম্যমেলা। নৌকাবাইচের সময় মাঝিরা একত্রে জয়ধ্বনি দিয়ে নৌকা ছেড়ে দিয়েই একইসঙ্গে গান গাইতে আরম্ভ করে এবং সেই গানের তালের ঝুঁকেঝুঁকে বৈঠা টানে। অন্যসব নৌকাকে পেছনে ফেলে নিজেদের নৌকাকে সবার আগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় প্রয়োজনবোধে কাঁসের শব্দে বৈঠার গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয় এবং সেইসঙ্গে দেহের গতিও বেড়ে চলে। এই সময় দেহ ও মনের উত্তেজনাবশেই গানের মধ্যে ‘ হেঁইয়ো রে হেঁইয়ো ’ এই ধরনের শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। সেই শব্দ উপস্থিত দর্শকদের উৎফুল্লতা বাড়িয়ে দেয়।

নৌকাবাইচ ঐহিত্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, নৌকাবাইচ আমাদের বাঙালির ঐতিহ্য। এটা যাতে হারিয়ে না যায় আমরা কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। ইছামতির পদ্মার অভিমুখে স্লুইচ গেট নির্মাণ করা হলে ইছামতি নদীতে পানির সমস্যা দূর হবে। তাহলে আরো কয়েকস্থানে নৌকাবাইচের আয়োজন করা সম্ভব হবে। বাইচে নবাবগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা থেকে মাসুদ রানা, শেখ বাড়ি, আব্দুল খালেক, সোনার বাংলা, সোনার তরী, জয় বাংলা, বাংলা ঐতিহ্য ৯টি ঘাসী নৌকা ও বেশ কয়েকটি কোষা নৌকা দাদা-নাতি, পানির রাজ ও তুফান প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।  নৌকাবাইচ সোমবার বিকাল শুরু হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় শেষ হয়। পরে শামসুদ্দিন আসালতের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিজয়ীদের প্রথম পুরস্কার হিসেবে একটি ১৫০ সিসি মোটরসাইকেল, দ্বিতীয়-তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ফ্রিজ প্রদান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা-১ আসনের এমপি সালমা ইসলাম এবং উদ্বোধক ছিলেন-দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন জিলু।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status