বাংলারজমিন

জুঁই এখন কেউ চিনে না

বাগেরহাট প্রতিনিধি

১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার, ৮:৫২ পূর্বাহ্ন

যান্ত্রিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কৃষি ও গৃহসামগ্রী। আধুনিকতার কাছে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার এক সময়ের জনসাধারণের বৃষ্টি থেকে বাঁচার প্রধান মাধ্যম বাঁশ ও বেতের তৈরি ‘জুঁইর’ বা জোংলা। (মাথাসহ পিঠ ঢাকার এক ধরনের বর্ষাতি)। এক সময় বর্ষা মৌসুমে ধুমধামের সঙ্গে তৈরি হতো জুঁইর। ব্যস্ত সময় পার করতেন এর নির্মাতা গ্রামীণ কারিগরেরা। এখন তাদের আর হাট-বাজারে দেখা যায় না। অনেকটা বেকার সময় পার করছেন তারা। গ্রামগঞ্জে এখন পুরোপুরি যান্ত্রিক ঢেউ লেগেছে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ ও বেতের তৈরি ‘জুঁইর’। বাগেরহাটের গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘জুঁইর’ আজ বিলুপ্তির পথে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিনদিন জুঁইর কদর কমে যাচ্ছে। গ্রামবাংলার কৃষকদের বাড়ি থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে এ শিল্পটি।

হাতেগোনা দু-একজন জেলে ও কৃষকের বাড়িতে বাঁশ ও বেতের তৈরি বৃষ্টি থেকে বাঁচার অন্যতম সম্বল প্রাচীনতম বর্ষাতি ‘জুঁইর’ এখনও মাঝে-মধ্যে চোখে পড়ে। জেলার কচুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামের বৃদ্ধ দেলোয়ার হোসেন জানান, এক সময়ে জুঁইর খুব কদর ছিল। কিন্তু এখন কয়েক গ্রাম খোঁজ করেও একটি জুঁইর পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ জুঁইর বিলুপ্তির পথে। একই ইউনিয়নের বারুইখালী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জগদিশ চন্দ্র সাহা জানান, বাবা-ঠাকুরদার ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী জুঁইর স্মৃতিস্বরূপ ঘরে রেখে দিয়েছি দীর্ঘসময় ধরে। কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের ভাষা গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি, এক সময়ের জুইর তৈরির কারিগর রহম তরফদার বলেন, এক সময় জুঁইর তৈরি করে তার সংসার চলত। বর্তমানে এর ব্যবহার কমে যাওয়ায় তিনি এ কাজ আর করেন না। তাই শেষ জীবনে অনেকটা বেকার সময় পার করছেন বলেও জানান তিনি। গ্রামীণ জনপদের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে বাপ-দাদার মাটি ও কুঁড়েঘরের বদলে ইটের বাড়িঘর তৈরি বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে বাড়িতে জুঁইর রাখতে চায় না। কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম আবুবকর ছিদ্দিক জানান, জুঁইর এক সময়ে খুবই প্রয়োজনীয় একটি শিল্প ছিল। কালের পরিবর্তনে এখন আর জুঁইর দেখা যায় না। জুঁইর বললে এখনকার অনেকে চিনবেও না। বলতে গেলে এটি এখন বিলুপ্তপ্রায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status