অনলাইন

‘বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ও সক্রিয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মামলা দেয়া হচ্ছে’

স্টাফ রিপোর্টার

১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ২:০৭ পূর্বাহ্ন

সরকারের নীলনকশার অংশ হিসেবে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ও সক্রিয় নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের বিরুদ্ধেও ঢালাওভাবে মামলা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগে করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকেও একতরফা করতে অবৈধ ভোটারবিহীন সরকার নানা নীলনকশা করেই যাচ্ছে। দেশব্যাপি বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় থানায় গায়েবী মামলা দায়ের অব্যাহত রয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষকদের তালিকা করা হচ্ছে, কারা বিএনপি করে বা বিএনপি পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। আর বেছে বেছে আওয়ামী সমর্থিত লোকদেরকে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কার্যক্রম চলছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করা হয়েছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বানানো হয়েছে সরকারের দলীয় বাহিনীতে, বিচার বিভাগের স্বার্ধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে, নি¤œ আদালতে এখন ন্যায় বিচার উধাও হয়ে গেছে।
রিজভী বলেন, গতকালও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জন গমেজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু বকর সিদ্দিককে গতকাল থেকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। খোঁজ না পাওয়ায় তার পরিবার ও বিএনপি’র সকল নেতাকর্মী গভীরভাবে উদ্বেগকুল ও উৎকন্ঠিত। নিশ্চয়ই তিনি সরকারী কোন বাহিনীর নিকটই আছে। আমি অবিলম্বে তাকে জনসমক্ষে হাজির করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। রিজভী আরো বলেন, পুলিশের অনুমোদন নিয়ে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করলেও নির্বিচারে গ্রেফতারের ঘটনা ন্যাক্কারনজনক।
আমি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
চিকিৎসা নিয়ে ছলচাতুরী চলছে এবং কালক্ষেপণ করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর দুদিন পার হয়ে গেলেও খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে কোন কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন দ্রুত বেগম জিয়ার চিকিৎসা না দেয়া হলে তার বাম পা ও হাত অবশ হয়ে যেতে পারে। তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি যাচ্ছে। তাই আমি দলের পক্ষ থেকে কাল বিলম্ব না করে বেগম খালেদা জিয়াকে বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, গত দশ বছরের বর্তমান স্বৈরাচারী সরকার দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর যে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে, যেভাবে হত্যা গুম খুন চালিয়েছে, যেভাবে ক্রসফায়ারের নামে সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে খুন করেছে, যেভাবে নিরাপদ সড়ক ও কোটা আন্দোলনের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালানো হয়েছে, মামলা দেওয়া হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এখনও উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে আছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। এখনও শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার চলছে, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। কয়েকদিন আগে ১২ জন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গতকাল গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই দৃষ্টান্ত সম্পূর্ণভাবে সন্ত্রাসীদের দ্বারাই সম্ভব।
রিজভী আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রের মালিকানা এখন বেআইনী সন্ত্রাসীদের হাতে চলে গেছে। এ অবস্থায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, হেলমেট বাহিনী ও ছাত্রলীগ দিয়ে সেই জনরোষ রোধ করা যাবে না। নেকনজরে পড়ার জন্যই আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আইনানুগ কাজ না করে সরকারের কথা শুনছে। যতদিন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অবৈধ সরকারের গৃহজাত বাহিনী হয়ে থাকবে ততদিন আইনের শাসন অদৃশ্যই থেকে যাবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবির মুরাদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আওয়াল খান, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status