বিশ্বজমিন

রেডক্রসের বিরুদ্ধে রাখাইনে আরাকানিজদের বিক্ষোভ

মানবজমিন ডেস্ক

১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার, ১:০২ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গাদের কাছে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের ত্রাণ বিতরণের বিরুদ্ধে রাখাইনে বিক্ষোভ করেছে প্রায় ৩০০ আরাকানিজ।  বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে আটকেপড়া রোহিঙ্গাদের কাছে ত্রাণ বিতরণের অনুমতি পায় রেডক্রস। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে মংডু শহর এলাকায়। এ খবর দিয়েছে মিয়ানমারের অনলাইন দ্য ইরাবতী।
খবরে বলা হয়, কয়েক দিন আগে ওই শহর কর্তৃপক্ষ আরাকান জাতীয়তাবাদী ইউ সেইন হ্লা ফিউ’কে সোমবার বিক্ষোভের অনুমতি দেয়। কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা এমন একটি চিঠি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যাতে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও মিয়ানমার রেডক্রস সোসাইটির ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে শক্তিশালী প্রতিবাদ বিক্ষোভের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাতে ওই ত্রাণ বিতরণকে বলা হয়, বাঙালি সন্ত্রাসীদের কাছে রেশন পৌঁছে দেয়া হিসেবে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদেরকে রোহিঙ্গা বলে অভিহিত করা হয় না। এমন কি রোহিঙ্গা শব্দটি সেখানে উচ্চারণ করা নিষিদ্ধ। তারা রোহিঙ্গাদেরকে বাঙালি হিসেবে আখ্যায়িত করে এবং দাবি করে  এরা বাংলাদেশী অভিবাসী।  

ত্রাণ বিতরণের বিরুদ্ধে র‌্যালির বিষয়টি ফোনে সোমবার নিশ্চিত করেছে আরাকান ন্যাশনাল পার্টির কেন্দ্রীয় এমপি ইউ কাইওয়া কাইওয়া উইন। তার মতে, আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও মিয়ানমারের রেডক্রস যে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তাতে অসন্তুষ্ট হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তিনি বলেন, মংডু এলাকার অধিবাসীরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক রেডক্রস রোহিঙ্গাদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছেন। তারা ওই এলাকায় অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সমান মানবিক সহায়তা দেখাচ্ছে না।
প্রকৃতপক্ষে গত কয়েক মাস ধরে সীমান্তের কাছে আটকে পড়া কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে মানবিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থানরত জাতিসংঘের বিভিন্ন এজেন্সি। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সফরে মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশ থেকে সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত রাখার আহ্বান জানায়, যাতে রেশন বিতরণ কর্মসূচি মিয়ানমারের দিক থেকে শুরু করা যায়।
গত শুক্রবার রাজধানী ন্যাপিডতে সাংবাদিকদের কাছে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের অফিসের মুখপাত্র ইউ জা হতাই বলেছেন, মিয়ানমারকে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে যে, নিকট ভবিষ্যতে প্রায় ৩০০০ শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রত্যাবর্তন শুরু হবে।
ওদিকে মংডুর বিক্ষোভের খবরে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ওইদিন বিকেলেই একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ওই র‌্যালির বিষয়ে তারা অবহিত। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের দিক থেকেই মংডুর সীমান্তের কাছে তাউং পাইও উপশহরে মানবিক সহায়তা দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কমিউনিটি নেতা ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। মিয়ানমারের ওই অনুরোধের বিষয়টি ব্যবহারিক অর্থেই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, রেডক্রস মুভমেন্টের সব অংশীদার সব সময়ই মানুষকে নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন উপায়ে জরুরি সহায়তা দিয়ে আসছে। রাখাইনে সাম্প্রতিক নৃশংসতায় যেসব মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরকে সহায়তা দেয়ার ম্যান্ডেট আছে এ সংস্থার। তা পূর্ণাঙ্গভাবে পালন করে যাচ্ছে রেডক্রস।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ইউ নি মাল ইরাবতী পত্রিকাকে ফোনে বলেছেন, ওই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা ডাউনটাউন থেকে বিক্ষোভ বের করে আন্তর্জাতিক রেডক্রসের মংডু শাখা অফিস পর্যন্ত যায়। তিনি আরো বলেন, কয়েক মাস ধরে কয়েক শত হিন্দু শরণার্থীও খাদ্য সংকটে ভুগছেন। কিন্তু তার সরকার প্রতিদিন জনপ্রতি দুই ক্যান কন্ডেসন্ডড মিল্ক বিতরণ করে। তাও বিরল। তারা কয়েক মাস ধরে কোনো আন্তর্জাতিক সহায়তা পান নি। তিনি আরো বলেন, মংডুতে হিন্দু শরণার্থীদের শিবির রয়েছে। কিন্তু এখানে কোন রেশন দেয়া হয় নি। তাই আমরা আন্তর্জাতিক রেডক্রসের প্রতি আবেদন জানিয়েছি। এখনও পদক্ষেপ নেয়া হয় নি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status