বাংলারজমিন

চেয়ারম্যানের গালে ভ্যানচালকের চড়

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

২১ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ৭:৩৮ পূর্বাহ্ন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভিজিএফ’র চাল ওজনে কম দেয়ায় চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন চৌধুরীকে চড় মেরেছে শরিফুল ইসলাম নামে এক ভ্যানচালক। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৫নং শিমলা রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে। ঈদ উপলক্ষে জনপ্রতি ২০ কেজি করে দেয়ার কথা থাকলেও শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নে ১০ কেজি করে দুস্থদের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। রোববাব দুপুরে চেয়ারম্যান নাসির চৌধুরীর উপস্থিতিতে ভ্যানচালক শরিফুলকে সাত কেজি চাল দেয় গ্রাম পুলিশ আব্দুল হাকিম। ওজনে কম দেয়া চাল নিতে অস্বীকৃতি জানায় ভ্যানচালক শরিফুল। এ সময় ক্ষুব্ধ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন ভ্যানচালকের মুখে চড় মেরে বলে ‘হাট শালা তোর চাল দেয়া হবে না’। এ সময় ভ্যানচালক শরিফুলও চড়ের প্রতিবাদে পাল্টা চড় বসিয়ে দেয় চেয়ারম্যানের মুখে। চেয়ারম্যানের মুখে চড় মরার পর সেখানে উপস্থিত গ্রাম পুলিশের সদস্যরা ভ্যানচালক শরিফুলকে বেধড়ক মারপিটের পর বের করে দেয়। ঘটনার পর রোববার বিকালেই ভ্যানচালক শরিফুল ইসলাম কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। শরিফুল ইসলাম কালীগঞ্জ উপজেলার ছোটশিমলা গ্রামের ছবেদ আলী মণ্ডলের ছেলে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ইউনিয়নে মোট ভিজিএফ কার্ডধারী ৮৮৪ জন। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ওই ইউনিয়নের ৪৮৩ জনকে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করার কথা থাকলেও কাউকে কাউকে ১০ কেজি করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে শিমলা রোকনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, শরিফুল ইসলাম ভিজিএফএর তালিকাভুক্ত না। গরিব হওয়ায় মানবিক কারণে তাকে ১০ কেজি চাল দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি চাল না নিয়ে গ্রাম পুলিশদের মারধর করেন। তার মুখে ভ্যানচালক শরিফুল চড় মরেনি বলেও তিনি জানান। তবে শরিফুল জানান, চেয়ারম্যান তাকে চড় মারলে তিনিও প্রতিবাদ স্বরূপ একটি চড় মেরে প্রতিশোধ নেন।  
এদিকে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেয়া হতদরিদ্রদের ভিজিএফ কর্মসূচির ১০২ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে প্রশাসন। শনিবার মধ্যরাতে দোগাছি ইউনিয়নের কলমনখালী বাজারে অভিযান চালিয়ে মিঠু জোয়ারদারের বাড়ি, বিপুলের দোকান ও মাসুদ নামে তিন জনের কাছ থেকে এই চাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইছাহাক আলী জোয়ারদার চাল উদ্ধার সম্পর্কে বলেন, ভিজিএফ চাল বিক্রির সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের কেউ জড়িত নয়। ঈদ সামনে করে বাজার সদায় করার জন্য হতদরিদ্ররাই এই চাল বিক্রি করেছেন এবং স্থানীয় চাল ব্যবসায়ীরা এগুলো কিনেছেন। তিনি বলেন আমরা তো চাল দিয়েছি কিন্তু অন্য ইউনিয়নে তো ২০ কেজির পরিবর্তে ৮/১০ কেজি করে দেয়া হচ্ছে। তবে, এলাকাবাসীর অভিযোগ হতদরিদ্রদের নামে ভুয়া স্লিপ তৈরি করে দোগাছি ইউনিয়নের এই চাল কালোবাজারে বিক্রি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের প্রকৌশলী হাসিবুর রহমান জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার গভীর রাতে দোগাছি ইউনিয়নের কলমনখালী বাজারে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে সরকারি বস্তায় রাখা পাঁচ হাজার কেজি অর্থাৎ ১২৭ মণ ভিজিএফ কর্মসূচির চাল জব্দ করা হয়। চালগুলো সিলগালা করে রাখা আছে বলে তিনি জানান। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মি ইসলাম জানান, এ ঘটনার সঙ্গে চেয়ারম্যান জড়িত কি না তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ট্যাগ অফিসারকে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে ঈদের পর নিয়মিত মামলা করা হবে। উল্লেখ্য, ওজনে কম দিয়ে আবার হতদরিদ্রদের নামে ভুয়া স্লিপ বানিয়ে জেলাজুড়ে ভিজিএফ চাল বিক্রির হিড়িক পড়েছে। তবে, এ বিষয়ে দৃশ্যত কোনো আইনি পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status