এক্সক্লুসিভ

ব্যস্ত রাজধানীর কামারপাড়া

স্টাফ রিপোর্টার

২১ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ৭:২৪ পূর্বাহ্ন

ঈদুল আজহার বাকি মাত্র দুই দিন। ব্যস্ত রাজধানী। কেউ কোরবানির পশু কিনেছেন, কেউবা আবার কোরবানির আনুষঙ্গিক কেনা-কাটা নিয়ে ব্যস্ত। এই সময়টুকুতে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদেরও। কোরবানির জন্য দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, কাঠের গুঁড়িসহ প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে কামারদের ব্যস্ততা। চলছে দা, বটি, ছুরি, চাকু তৈরি ও পুরনো অস্ত্রে শান দেয়ার কাজ।

রাজধানীর কাওরান বাজারের কামারশালাগুলো এখন দারুণ ব্যস্ত সময় পার করছে। ঈদে হাজার হাজার পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত দা-বটি, ছুরি-ছোরা, চাপাতির মতো ধাতব হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর তাই ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, প্লাস্টিক ম্যাট, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে ক্রেতারা ছুটতে শুরু করেছে বাজারের দিকে। ছুরি বা চাপাতির কামারশালা ছাড়াও চাটাই ও গাছের গুঁড়িও মিলছে রাজধানীর এসব হাটে। কাওরান বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- এ শিল্পের প্রাধান উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কামাররা সারা বছর কিছুটা সংকটে থাকলেও প্রতিবছর কোরবানির ঈদের মৌসুমে ব্যবসা মোটামুটি ভালো হয়। দোকানিরা জানান, আগে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় এক বস্তা কাঠ-কয়লা পাওয়া যেত। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।

পশু জবাইয়ের বিভিন্ন আকারের ছুরিগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। তবে, ডিজাইন ও কাঁচা মালের তারতম্যে পছন্দ অনুযায়ী জিনিসের দাম কম-বেশি হতে পারে। মাংস কাটা চাপাতির দাম (কোপা) ৪০০ থেকে শুরু করে ৭০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দামের ছুরি, বটি, চাপাতি, কাঠের  গুঁড়িরও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে এসব দোকানির কাছে। পশু জবাই দেয়া বড় ছুরিগুলোর দাম এক হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ছোট ছুরির দাম ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত। আর ঢেউ দেয়া বড় ছুরিগুলো পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। দোকানিরা আরো জানান, দেশি চাপাতিগুলো মূলত কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিদেশি চাপাতির দাম ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এবার প্রতিটি বটির দাম পড়বে ৩০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।

বাজারের আকর্ষণীয় পশুর হাড় কাটার ছোট চায়নিজ কুড়াল পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। গাছের গুঁড়ি পাওয়া যাবে ছোট, বড় ও মাঝারি মোট তিনটি সাইজে। আকার ভেদে মাংস রাখার পলি ও প্লাস্টিকের ম্যাটের দাম রাখা হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের চপিং বোর্ড কেনা যাবে ৫০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকায়। হ্যান্ড মিট কাটার পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। রাজধানীর কাওরান বাজার ছাড়াও নিউ মার্কেট, গুলশান-১ নম্বরে অবস্থিত ডিএনসিসি মার্কেট, চকবাজার, কাপ্তান বাজার, ধানমণ্ডি রায়ের বাজার, খিলগাঁও বাজার, মিরপুর-১ নম্বরসহ সিটি করপোরেশনের প্রায় সব মার্কেটেই ছুরি, বটি, চাপাতিসহ ঈদের পশু কোরবানির প্রয়োজনীয় সব জিনিসই পাওয়া যাচ্ছে হাতের নাগালে। কামার পট্টির ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম জানান, ছুরি, চাপাতি ও গাছের গুঁড়ি কোরবানির ঈদ ছাড়া সারা বছর তেমন একটা বিক্রি হয় না। সারা বছরই আমাদের মানুষের মুখের পানে চেয়েই বসে থাকতে হয়। তাই ক্রেতার চাহিদার ওপর ভিত্তি করে কোরবানি ঈদের সময়ই এগুলো বেশি পরিমাণে বানানো হয়।

তিনি আরো বলেন, হাট থেকে পশু কেনার পর, এখন মানুষ জবাই করার জন্য প্রয়োজনীয় ছুরি, বটি, চাপাতি কিনতে বাজারে ভিড় করছেন। আমাদেরও ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে এখন। আর এই ব্যস্ত বেচা-বিক্রি ঈদের আগের রাত পর্যন্ত চলবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status