বাংলারজমিন

আমদানি কম দাম চড়া

এম ইদ্রিস আলী, শ্রীমঙ্গল থেকে

২১ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ৬:৪৪ পূর্বাহ্ন

কোরবানির ঈদের আর মাত্র ১ দিন বাকি। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া শ্রীমঙ্গলের বড় পশুর হাট পৌর এলাকার সাগরদীঘির পাড়ে খামারি ও বেপারিরা গরু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন। একই সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা তাদের পালিত কোরবানির পশু বাজারে তুলছেন। এছাড়া শ্রীমঙ্গলের আশেপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাজারে গরু আসতে শুরু করেছে। তবে প্রথম দিনের বাজারে গরুর কম উঠায় দাম খুব বেশি চাচ্ছেন বেপারিরা।
বাজার ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকাল থেকে আগামী বুধবার ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত একটানা এ হাটে কোরবানির পশু বিক্রি করা হবে। গতকাল শুক্রবার বাজার ঘুরে পাইকার, ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার দেশি গরুর বাজার খুবই চড়া। ইন্ডিয়ান গরু এখনও বাজারে আসেনি। বেশি দামের আশায় বুক বেঁধে আছেন গ্রামাঞ্চলের কৃষকরা। অথচ শ্রীমঙ্গলে এখনও কোরবানির পশুর হাটে বেচাকেনা জমে উঠেনি। তার বলছেন, ঈদের এখনও চার পাঁচদিন বাকি। বাজারে গরু বেশি থাকলেও ক্রেতারা ক্রয় না করে দাম দর করে চলে যাচ্ছেন। গরু বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে গরুর বাজার জমে উঠবে।
পশুর হাটে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার বিকাল থেকে শুরু হওয়া প্রথমদিনের বাজারে মাত্র ২-৩ শতাধিক গরু বাজারে এসেছে। বিক্রেতারা বাঁশের খুঁটিতে সারি সারি গরু সাজিয়ে রেখেছেন। বিক্রেতারা লাল কালো সাদাসহ বিভিন্ন বর্ণের ছোট বড় গরু হাটে তুলেছেন। রোববার থেকে পুরোদমে বাজার জমে উঠবে। তখন বাজারে প্রচুর কোরবানির পশুর আমদানি হবে। ফয়সল ও ওয়াকিল নামে দুই ক্রেতা জানান, ঈদের এখনও চার দিন বাকি। তাই এখন গরু দেখতে এসেছি। দামে দরে মিললে হয়তা কিনতেও পারি। তারা জানান, গতবারের চেয়ে এবারে গরুর দাম বেশি চাইছে পাইকার ও বাড়ির গরুর মালিকরা। রহমত আলী নামে এক গরু বিক্রেতা জানান, এখনও বাজারে গরু বেচা কেনা তেমন হচ্ছে না। ঈদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে গরু বেচাকেনা জমবে। এবারের ঈদে ভারতীয় গরু না আসলে দেশীয় গরুর খামারিরা লাভবান হবে বলে জানান তিনি। উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হুগলীয়া গ্রামের গরু পাইকারি আবুল কালাম আজাদ তিনি বাজারে দেড় মণ থেকে সাড়ে তিন মণ ওজনের গরু ৫টি নিয়ে হাটে এসেছেন। তিনি দেড় মণ ওজনের গরুর ৪৫ হাজার, সাড়ে তিন মণ ওজনের গরু ৭৫ হাজার বিক্রির জন্য দাম চান।
লালবাগের বাসিন্দা শামীম মিয়া ৪ মণ ওজনের ৫টি গরু বাজারে তুলেন। তিনি এসব গরুর দাম চাচ্ছেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার। জানালেন বিক্রি করবেন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পেলে।
বরুনা নয়নশ্রী গ্রামের ওমর মিয়া বাজারে নিয়ে এসেছেন দেশীয় ছোট ছোট সাতটি গরু যেগুলো দেড় থেকে দুইমণ,তিনমণ ওজনের। তিনি দেড়মণ ওজনের গরু ৩৪ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবেন। আর দুই ওজনের গরু দাম চান ৫০ হাজার। ৪৫ হাজার টাকা দাম পেলে বিক্রি করবেন। তিন মণ ওজনের গরুর দাম চান ৭০ হাজার। বিক্রি করবেন ৬৫ হাজার। এছাড়া গ্রামের কৃষকেরা ছোট বড় অনেক গরু নিয়ে বাজারে তুলেছেন। দেখতে এসব গরু খুবই সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান। এক মণ ওজনের গরুর দাম চান ৩০ হাজার টাকা। দুই মণ ওজনের গরুর দাম চাচ্ছেন ৪৫ হাজার। তিন মণ ওজনের গরুর দাম চান ৭৫ হাজার টাকা। বাজারে চাপাই মকরা এলাকার বেপারি হেলাল মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানালেন বেশি দাম পাওয়ার আশায় ছোট গরু দেড় মণ ওজনের থেকে উপরে ৯ মণ ওজনের গরু নিয়ে তিনি বাজারে এসেছেন। দেড় মণ ওজনের গরুর দাম চাইছেন ৩২ হাজার। তিন মণ ওজনের গুরুর দাম চাইছেন ৭২ হাজার। চার মণ ওজনের গরুর দাম চাইছেন ১ লাখ ১০ হাজার। ৯ মণ ওজনের গরুর দাম চাইছেন ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। তার মতে এবার ইন্ডিয়ান গরু না আসায় দেশি গরুর দাম বেশি। জামালপুরের বেপারি দেলোয়ার বেপারি জানালেন, ২৫ হাজার টাকা মণ দরে তিনি বড় বড় গরু কিনে নিয়ে এসেছেন বাজারে। তার একেকটি গরু লাল ও কালো বর্ণের চার মণ থেকে ৮ মণ ওজনের। চার মণ ওজনের গরুর দাম চাইছেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। সাড়ে ৬ মণ ওজনের গরুর দাম চাইছেন ২ লাখ ২০ হাজার। ৭ মণ ওজনের গরুর দাম চাইছেন ২ লাখ ৫০ হাজার। ৮ ওজনের গরুর দাম চাইছেন তিন লাখ টাকা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status