এক্সক্লুসিভ

দমন-পীড়ন বন্ধের আহ্বান অ্যামনেস্টির

মানবজমিন ডেস্ক

১৯ আগস্ট ২০১৮, রবিবার, ৮:৫৫ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে লন্ডন ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের সরকারকে অবশ্যই বিক্ষোভ দমন অভিযান বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে মানবাধিকার চর্চা করার দায়ে আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তি দিতে হবে। বাংলাদেশে ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার অভিযানের কারণে ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে বলেও মন্তব্য করে সংস্থাটি। শুক্রবার নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রায় ১০০ মানুষকে আটক করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা সেখানে গণগ্রেপ্তারের মূল লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে। অনলাইন জগতে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। এতে নাগরিক সমাজে ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সহকারী পরিচালক ওমর ওয়ারেছ বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এই অভিযান বন্ধ করতে হবে। শান্তিপূর্ণভাবে মানবাধিকারের চর্চা করার দায়ে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মুক্তি দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের সিংহভাগই ছিল শান্তিপূর্ণ। গুটিকয়েক মানুষ সেখানে সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত ছিল। নাগরিক সমাজের ওপর আক্রমণ চালানোর জন্য এসব গুটিকয়েক মানুষের কর্মকাণ্ড কোনো অজুহাত হতে পারে না। মানুষ আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছে যে, পরবর্তীকালে তারাও গ্রেপ্তার হতে পারেন।

অ্যামনেস্টি বলেছে, সড়ক নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও শাসক দলের সমর্থকদের সংঘর্ষের পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৭ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২৯শে জুলাই থেকে ১৫ই আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে অন্তত ৫১টি মামলা করা হয়েছে। এমন একটি আইনের অধীনে এসব মামলা করা হয়েছে যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মূলনীতি ও মানদণ্ডের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করলেও আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা চালানোর দায়ে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে সংস্থাটি। বলেছে, সহিংসতায় ছাত্রলীগের ভূমিকা ও পুলিশের অতিরিক্তি বল প্রয়োগের ঘটনা তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। এতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারছেন না। গ্রেপ্তার আতঙ্কে শারীরিক অসুস্থতার জন্যও কারো সহায়তা নিতে পারছেন না।  

৫৭ ধারায় আইসিটি আইনে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমদ ও ঢাকা ক্যাফের মালিক ফারিয়া মেহজাবিনকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে অ্যামনেস্টি। সংস্থাটি ওই আইনকে অস্পষ্ট, ব্যাপক বিস্তৃত ও কঠোর বলে অভিহিত করেছে। ওমর ওয়ারেছ বলেন, সরকার নিজেই মেনে নিয়েছে যে, ৫৭ ধারার আইসিটি আইন ত্রুটিপূর্ণ। এর পরেও তারা আইনটির প্রয়োগ করছে। শান্তিপূর্ণ মানবাধিকার চর্চার দায়ে শহিদুল আলম, কাজী নওশাবা ও ফারিয়া মেহজাবিনসহ যেসব শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদেরকে ভিন্নমত পোষণ করার দায়েই গ্রেপ্তার করা হয়েছে (প্রিজনার অব কনশেন্স)। তাদের অবশ্যই অবলিম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status