রকমারি
আশরাফুল কী তবে ‘আপন ঘরে ভাড়াটিয়া?’
আসিবউর রহমান
১৭ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার, ৯:০৮ পূর্বাহ্ন
মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার, সাবেক অধিনায়ক। তার নামটি শুনলেই স্মৃতিতে ভেসে আসে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে শতকের রেকর্ড সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো সেই কাব্যিক শতক। আশরাফুলের এভারেজ (টেস্ট: ২৪ ওডিআই: ২২.২৩, টি-২০: ১৯.৫৬) নেহায়েত তলানিতে। কিন্তু তারপরেও তিনি সুপারস্টার কারণ তার ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে থাকতো বাংলাদেশ। তার ব্যাট হাসলেই জয় পেতেন টাইগাররা।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই পোস্টারবয় গত ১৩ই আগস্ট শেষ হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। দ্বিতীয় বিপিএল আসরে স্পট ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে গুনতে হয়েছিল এই শাস্তি। আশরাফুলের বয়স এখন ৩৪। এই বয়সে দাঁড়িয়ে তিনি কী পারবেন জাতীয় দলের পোশাক শরীরে জড়াতে? এবার দেখা যাক অতীত কী বলছে। ভারতের অভিভাবক সংস্থা বিসিসিআই’র অননুমোদিত লীগ আইসিএল খেলতে ২০০৮ সালে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ১০ ক্রিকেটার। নিষিদ্ধও হয়েছিলেন তারা ১০ বছরের জন্য। নিষেধাজ্ঞার ২ বছর পেরুলে তাদের ক্ষমা করে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় দলে ফিরেছিলেন ৫ জন ক্রিকেটার। কিন্তু প্রত্যাবর্তন কারো সুখকর ছিল না। ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস খেলেছেন ১৫ ওয়ানডে ও ৯ টেস্ট। এক সময়ে জাতীয় দলে নিয়মিত টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান আফতাব আহমেদ খেলেন ৫ ওয়ানডে, ২ টেস্ট ও ২টি টি-২০ ম্যাচ। অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা ফিরে খেলেন ২টি ওয়ানডে ও ৫টি টি-২০ ম্যাচ। অলক কাপালী ৪ ওয়ানডে ও স্পিনার মোশারফ রুবেল খেলেছেন মাত্র ২টি ওয়ানডে ম্যাচ। তারা কেউ জাতীয় দলে থিতু হতে পারেননি।
পূর্বসূরিদের ইতিহাস সঙ্গে বয়সের কথাটাও ঘুরেফিরে আসে বারবার আশরাফুলের ক্ষেত্রে। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটের রান মেশিনখ্যাত (প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রান ১০৬১২) তুষার ইমরান, বয়স ৩৪। কিংবা সদ্য ৫০০ উইকেট নেয়া আবদুর রাজ্জাকের শরীরে ট্যাগ হয়ে রয়েছে ৩৬ বছর বয়স। তা না হলে সাকিব আল হাসানের ইনজুরিতে ৪ বছর পর ফিরে এক টেস্টে ৫ উইকেট পেয়েও কেন তিনি নেই পরের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে।
জাতীয় দলে ফিরতে মরিয়া আশরাফুল শরীরের ওজন কমিয়েছেন ১০ কেজি। যদিও নির্বাচক ও ফিজিও’র চোখে তিনি আনফিট। কিন্তু খোলোয়াড়টির নাম আশরাফুল। তিনি ইতিহাস গড়তে জানেন। সকল বাধা বিপত্তি ডিঙিয়ে তিনি আবারও জাতীয় দলে ফিরবেন, এই আশা সকল ভক্তের। না ফিরলে যে দর্শকরা তার খেলা দেখার জন্য ছুটে যেত মাঠে। যে ড্রেসিং রুম ছিল তার আপন ঘর, সেই আপন ঘরেই যে ভাড়াটিয়া হবে যাবেন।