এক্সক্লুসিভ
জীবনচক্র হারানো রাবার কাঠে বৈদেশিক মুদ্র্রার হাতছানি
এম ইদ্রিস আলী, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) থেকে
১৬ আগস্ট ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন
একসময় দেশে কাঠের আসবাব তৈরির জন্য যে রাবার কাঠ বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো, সেই রাবার কাঠ এখন বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ সৃষ্টি হয়েছে। শ্রীমঙ্গলে স্থাপিত রাবার ট্রিটমেন্ট প্লান্টই সেই স্বপ্ন দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, এত দিন শুধু রাবার গাছের মূল্যবান কষ আহরণ করা হতো। আর ৩০-৪০ বছরের জীবনচক্রে হারিয়ে যাওয়া রাবার গাছ কেবল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মাত্র ২৫-৩০ টাকা সিএফটি দরে বিক্রি করা হতো রাবার গাছ। ফলে জীবনচক্র হারানো এসব গাছ কাজে লাগিয়ে অধিকতর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নিয়ে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় গত বছরের ডিসেম্বরে শ্রীমঙ্গলের ইউছুবপুরে রাবার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হলেও এ বছর জুনে উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এখন এই ট্রিটমেন্ট প্লান্টে প্রসেসিং করে রাবার গাছ আসবাব তৈরির উপযোগী কাঠে রূপান্তর করা হচ্ছে। আর এটাই দেশের প্রথম রাবার কাঠ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বলে জানা যায়। আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে যাওয়া রাবার গাছ এই প্লান্টে এনে প্রসেসিং করে এক হাজার ৩০০ টাকা সিএফটি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বন শিল্প করপোরেশনের রাবার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আশির দশকে দেশে রাবার শিল্প গড়ে ওঠে। সরকারিভাবে মোট ১৮টি রাবার বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সিলেটে রয়েছে ৪টি। বেসরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন রাবার বাগান রয়েছে অসংখ্য। বর্তমানে সিলেটের ৪টি সরকারি রাবার বাগানের সাত লাখ গাছের জীবনচক্র হারিয়ে গেছে। এই সাত লাখ গাছে রয়েছে ৭০ লাখ সিএফটি কাঠ। যেগুলো জ্বালানি হিসেবে বিক্রি করলে পাওয়া যেত ১৯ কোটি টাকা। আর এখন এই প্লান্টের মাধ্যমে প্রসেসিং করে এই কাঠ বিক্রি করে পাওয়া যাবে ৩৮৪ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এতে শুধু সরকারের রাজস্বই বৃদ্ধি হবে না, দেশে কাঠ আমদানির পরিমাণ কমে আসবে। আর এক সময় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে- এই রাবার কাঠ। রাবার কাঠ ট্রিটম্যান্ট প্লান্টের প্রকল্প সূত্রে জানা যায় ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত প্লান্টে কাঠ প্রক্রিয়াজাত করতে সময় লাগে ১৫ দিন। এরপর কাঠ বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। সূত্র জানায়, প্রক্রিয়াজাত করায় এই কাঠ টেকসই হওয়ায় দেশীয় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া এই কাঠের সবচেয়ে বড় গুণ হলো ঘুণে ধরবে না। এগুলো সেগুন কাঠের কাছাকাছি। সব ধরনের আসবাব বানানো যায় এবং প্রক্রিয়াজাতকৃত এই কাঠ ৩০ থেকে ৩৫ বছর টেকসই হয়ে থাকে।
সদ্য অবসরে যাওয়া বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই রাবার গাছ প্রসেসিং করে আসবাবসহ সব ধরনের কাঠ শিল্পে ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়টি মাথায় নিয়েই রাবার কাঠকে মূল্যবান ফার্নিচার কাঠে পরিণত করার জন্য বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) ‘স্টাবলিশমেন্ট অব প্রেসার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট টু এসেস রাবার উড’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। শুরুতে এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই ছিল প্রতি মাসে ২০ হাজার সিএফটি ট্রিটমেন্ট কাঠ উৎপাদন করা। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) নিজস্ব অর্থায়নে এই প্লান্ট স্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) সিলেট জোনের জিএম শাকিল আহম্মেদ বলেন, বর্তমানে প্লান্টটি এক শিফটে চালানো হচ্ছে। প্রতি মাসে এই প্লান্ট থেকে সাড়ে তিন হাজার ঘনফুট কাঠ উৎপন্ন করা হচ্ছে। জানতে চাইলে রাবার কাঠ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জামিল আক্তার বকুল বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্লান্টটি স্থাপন করার পর চলতি বছরের জুন থেকে আমরা উৎপাদনে যাই। এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার সিএফটি প্রসেসিংকৃত উৎপাদিত কাঠ প্রায় আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, এবছর ‘স্টাবলিশমেন্ট অব প্রেসার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট টু এসেস রাবার উড’ নামে এ প্রকল্পটি সরকারি রাজস্ব খাতে নেয়া হলেও জনবলের অভাবে প্লান্টটিতে বর্তমানে এক শিফটে চালাতে হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, জনবল সংকট কেটে গেলে অপার সম্ভাবনাময় এ প্লান্ট থেকে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন কাঠ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
সদ্য অবসরে যাওয়া বাংলাদেশ বন শিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই রাবার গাছ প্রসেসিং করে আসবাবসহ সব ধরনের কাঠ শিল্পে ব্যবহার করা হয়। এ বিষয়টি মাথায় নিয়েই রাবার কাঠকে মূল্যবান ফার্নিচার কাঠে পরিণত করার জন্য বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) ‘স্টাবলিশমেন্ট অব প্রেসার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট টু এসেস রাবার উড’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। শুরুতে এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই ছিল প্রতি মাসে ২০ হাজার সিএফটি ট্রিটমেন্ট কাঠ উৎপাদন করা। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) নিজস্ব অর্থায়নে এই প্লান্ট স্থাপন করা হয়।
বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফআইডিসি) সিলেট জোনের জিএম শাকিল আহম্মেদ বলেন, বর্তমানে প্লান্টটি এক শিফটে চালানো হচ্ছে। প্রতি মাসে এই প্লান্ট থেকে সাড়ে তিন হাজার ঘনফুট কাঠ উৎপন্ন করা হচ্ছে। জানতে চাইলে রাবার কাঠ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জামিল আক্তার বকুল বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্লান্টটি স্থাপন করার পর চলতি বছরের জুন থেকে আমরা উৎপাদনে যাই। এ পর্যন্ত ৪৫ হাজার সিএফটি প্রসেসিংকৃত উৎপাদিত কাঠ প্রায় আড়াই কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, এবছর ‘স্টাবলিশমেন্ট অব প্রেসার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট টু এসেস রাবার উড’ নামে এ প্রকল্পটি সরকারি রাজস্ব খাতে নেয়া হলেও জনবলের অভাবে প্লান্টটিতে বর্তমানে এক শিফটে চালাতে হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, জনবল সংকট কেটে গেলে অপার সম্ভাবনাময় এ প্লান্ট থেকে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুন কাঠ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।