বন্দি খালেদা জিয়ার ভয়ে সরকার: নজরুল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়ার দিন সরকার যতটা ভয়ে ছিল, এখন তার চেয়েও বেশি ভয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিলে কী হয় সে ভয়ে জামিনযোগ্য মামলায়ও তাকে জামিন না দিয়ে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’-এর আয়োজনে খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের মধ্যে দুজন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য ব্যক্তি আছেন। একজন খালেদা জিয়া আরেকজন শেখ হাসিনা। এর মধ্যে একজন প্রধানমন্ত্রী থেকে নির্বাচন করবেন, আরেকজন জেলে থেকে নির্বাচন করবেন- এটাকে তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলা যায় না। একদলের লোকেরা এমপি থেকে নির্বাচন করবে আর আমরা এমপি না থেকে নির্বাচন করবো- সেটাও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নয়। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচনের নামে কোনো খেলায় অংশ নিতে চাই না। আমরা সরকারের পতন চাই এটা কোনো গোপন কথা নয়। এই সরকারকে সরিয়ে আমরা দেশ শাসন করতে চাই- এটাও গোপন কথা নয়। সুতরাং আমরা কোনো ষড়যন্ত্র করি না। ঐক্যবদ্ধ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে চাই। এই সরকারকে হঠাতে এর কোনো বিকল্প নেই। আগামী দিনে আমরা আন্দোলন করবো। সেই আন্দোলন সফল হবে এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনবে। তিনি আরো বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এত নোংরা অভিযোগ আছে যে, অন্য কোনো সরকার হলে এতদিন পদত্যাগ করতো। কিছুদিন আগে জার্মানির একটি সংস্থা বলেছে স্বৈরাচারী দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু সারা বিশ্বের সবাই বলে স্বৈরাচার। দেশে যদি সত্যিকারের নির্বাচিত সরকার থাকতো তাহলে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতো। জনগণের কাছে এই সরকারের দায়বদ্ধতা নেই। তাই যা ইচ্ছা তাই করছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার এমন একটি সংসদ গঠন করেছে যে সংসদের বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এবং সেই দলের তিনজন সরকারি দলের মন্ত্রী। এরা সংসদে গিয়ে সারাদিন বিরোধীদলীয় আসনে বসে অফিস করে। বিরোধী দলের আসনে বসে সরকারি বিল পাস করে। বাংলাদেশের মতো এমন হাস্যকর সংসদ পৃথিবীর কোথাও নেই। পৃথিবীর কোথাও সংসদে গণতন্ত্র নিয়ে ইয়ার্কি ফাজলামি চলে না কিন্তু বাংলাদেশে সেটা চলছে। বর্তমানে সংসদে যা চলছে আমরা এটাকে বলি এক ধরনের ইয়ার্কি ফাজলামি। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক নেতা সেলিম মিয়ার সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, ডিএল-এর সাধারণ সম্পাদক সাইফ উদ্দীন মনি, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, আব্দুল আউয়াল খান, জিনাফ-এর সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।