বাংলারজমিন

চট্টগ্রামে ১০ অবৈধ পশুরহাট

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

১৪ আগস্ট ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

চট্টগ্রাম মহানগরে স্থায়ী-অস্থায়ী ৮টি বৈধ পশুর হাটের পাশাপাশি আরো ১০টি অবৈধ পশুরহাটে কোরবানির পশু বেচাকেনার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। বৈধ হাটগুলো থেকে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব পেলেও অবৈধ হাট থেকে কানাকড়িও পাচ্ছে না।
তবে অবৈধ হাটগুলোর আয়ের টাকা যাচ্ছে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের পকেটে। বৈধ হাট থেকে পাওনা সরকারি রাজস্বের চেয়ে বহু গুণ বেশি টাকা এসব অবৈধ হাট থেকে তোলা হয়; যা নানা কূট-কৌশলে ইজারা না দিয়ে হাটগুলোর আয়ের টাকা পকেটে ভরছে সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইজারা না হলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় ইজারা দেয়া স্থায়ী-অস্থায়ী কোরবানির পশুরহাট-বাজারের মতো অবৈধ হাটগুলো থেকেও সরকারি নির্ধারিত মূল্যে হাসিল আদায় করা হয়। এসব কাজে প্রতিটি হাটে জড়িত সরকারদলীয় শ’ শ’ নেতাকর্মী।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন বৈধ পশুরহাটগুলোর শুধু দুটি হাটই স্থায়ী। সেগুলো হচ্ছে- নগরীর এ কে খান এলাকার সাগরিকা ও মুরাদপুর এলাকার বিবিরহাট। আর অস্থায়ী পশুরহাটগুলো হচ্ছে- নগরীর বাকলিয়া-চাক্তাই ঘিরে বসা কর্ণফুলী পশুরবাজার, পতেঙ্গা স্টিল মিল, পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও পোস্তারপাড় উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ পশুর বাজার।
এছাড়া নগরীর আরও ১০টি স্থানে পশুরহাট-বাজার বসে। সেগুলো হচ্ছে- নগরীর কমল মহাজনহাট ও সল্ট গোলা রেলক্রসিং পশুরহাট, বুুড়িশ্চর সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, রাহাত্তারপুল, ওয়ারলেস কলোনি, পাহাড়তলী কলেজ মাঠ, অক্সিজেন মোড়, আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠ, হালিশহর রাস্তার মাথা ও সদরঘাট পশুরহাট। যেগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ। সূত্র জানায়, স্থায়ী পশুরহাট সাগরিকা ও বিরিহাট ইজারা থেকে প্রতি বছর প্রায় ২০ কোটি টাকা মতো রাজস্ব পায় সরকার। অস্থায়ী ৬টি হাট থেকে পায় প্রায় ১৫ কোটি টাকার মতো। কিন্তু অবৈধ পশুরহাটগুলো থেকে কানাকড়ি রাজস্বও পায় না সরকার। কারণ হাটগুলোর কোনো ইজারাদার নেই। অথচ ইজারা দেয়া হাটগুলোর মতোই পশু বেচাকেনার ওপর হাসিল আদায় করা হয় এ হাটগুলোয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, অস্থায়ী হাটগুলোর মতো অবৈধ হাটগুলোতেও প্রতি বছর প্রচুর কোরবানির পশু বেচাকেনা হয়; যা তত্ত্বাবধান করেন নগরীর সরকারদলীয় শীর্ষ নেতারা। কয়েকজন নেতা বাজার কমিটি গঠন করে অবৈধ পশুরহাটগুলো পরিচালনা করেন। পশুর হাসিল আদায় যাচাই-বাছাইয়ে থাকেন নেতাদের অনুসারী ওয়ার্ড ও মহল্লা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বেচাকেনা শেষে পশুর হাসিলের কোটি কোটি টাকা ভাগবাটোয়ারা করেন নেতাকর্মীরা।
এ ব্যাপারে নগরীর রাহাত্তারপুল পশুরহাটে কর্মরত চাঁন্দগাঁও থানার একটি ওয়ার্ডের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পশুরহাটে কর্মরত নেতাকর্মীরা কাজ করে পারিশ্রমিক পায়। কিন্তু মোটা অঙ্কের আয়ের টাকা যায় শীর্ষ নেতাদের পকেটে। আর আয় ঠিক রাখার জন্য হাটগুলোর ইজারা হয় না।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এসব হাট ইজারা দেয়ার চেষ্টা করলেও সংঘবদ্ধ নেতাকর্মীরা ইজারা নেয়ার জন্য দরপত্রও দেয় না। ফলে এসব হাট ইজারা হয় না। কিন্তু হাট তো বসে। বরং ইজারা না হওয়ায় সরকারি রাজস্বের টাকাও নেতাকর্মীদের পকেটে ঢুকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চসিকের এস্টেট অফিসার এখলাস উদ্দিন আহমেদ বলেন, অস্থায়ী হাটগুলো ইজারা দেয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করেও ইজারাদার পাওয়া যায় না। আর কোথায় পশু বেচাকেনা হয় তার ইজারাদার কোথায় পাব?
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status